somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এশিয়া মহাদেশের বিরল প্রজাতির সেই কোরোফর্ম বৃক্ষ শুধু স্মৃতি

০৭ ই জুলাই, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ৭ জুলাই চলে যাচ্ছে। বৃক্ষ প্রেমিক ও দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্য শোকগাথা আজকের দিন। হারিয়ে যাওয়া এশিয়া মহাদেশের আলোচিত বিরল প্রজাতির কোরোফর্ম এক্সেলা বৃক্ষটি নিয়ে এখন আর নানা কথা আর কৌতুহল প্রকাশ করছে না। পেরিয়ে গেল হিসাবের খাতা থেকে ৪টি বছর। এখনও সেই কোরোফর্ম এক্সেলা বৃক্ষটি বৃক্ষ প্রেমিক ও দেশী বিদেশী পর্যটকদের হৃদয়ে স্থান দখল করে আছে। কবি সাহিত্যিক ও অসংখ্য দর্শকদের আকর্ষনের বিরল প্রজাতির সেই কোরোফর্ম বৃক্ষটি এখন শুধু স্মৃতি। গত ২০০৬ সালের ৭ জুলাই ভোরে ভয়ংকর ঝড়ে কেড়ে নেয় তাকে। বৃক্ষপ্রেমিদের শোক পালনে স্মৃতি মন্থন ছাড়া আর কিছুই করার নেই।
প্রায় দেড়শো বছরের কোরোফর্ম বৃক্ষটিকে নিয়ে জনমনে ছিল নানা কৌতুহল। শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলে দেশী বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষন করতো কিংবদন্তী ও কালজয়ী বৃক্ষটি। বনবিভাগ এটিকে রেখেছিল অতি সর্তক প্রহরায়। কোরোফর্মের পাতা শুঁকলে মানুষ সংজ্ঞা হারানোর গল্প এখনও মানুষের মুখে মুখে। শতবর্ষীয়ান এবৃক্ষটি কিভাবে কখন লাউয়াছড়া বনে রোপন করা হয়েছিল, তার সঠিক তথ্য আজও রয়েছে অজানা। পর্যটকরা অপলক নেত্রে তাকিয়ে সেই কোরোফর্ম বৃক্ষশুন্য স্থানকে নিয়ে মনের আয়নায় এখনও স্মৃতি মন্থন করেন। সেই বিরল প্রজাতির প্রাচীন কোরোফর্ম বৃক্ষের ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী আজ পালিত হচ্ছে। লাউয়াছড়া বনে দেশী বিদেশী অসংখ্য পর্যটকরা সেই স্মৃতিময় গাছের মোথার কাছে শোক পালন করে। আলোচিত হয় সেই কোরোফর্ম স্মৃতি কথা নিয়ে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়ানের বৃক্ষ বিশেষজ্ঞদের অনুসন্ধানী দল এ গাছের বৈশিষ্ট থেকে ধারনা করেছিল এটির আদিবাস আমেরিকা ও আফ্রিকার উষ্ণমন্ডল। বিরল প্রজাতির বৃক্ষ সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনগবেষনা কেন্দ্রের প্রবেশ দ্বারের কাছাকাছি জায়গায় মাথা উচুঁ করে বেঁচে ছিল। আকষ্মিক ঝড়ে সমাপ্তি ঘটে সেই কিংবন্তী বৃক্ষের জীবন। বিশালকার হলেও এটির কোন ছিল না প্রজনন মতা। তাই বংশ বিস্তার হয়নি। তবে পর্যটকদের আশার আলো হিসাবে আরও একটি বৃক্ষের সন্ধান পেয়েছে বনবিভাগ। ধারনা করা হচ্ছে নতুন আবি®িকৃত বৃক্ষটি বিরল প্রজাতি গোত্রের। এখনও এটি রয়েছে অনেক ছোট। নতুন ভাবে পাওয়া বৃক্ষের বয়স কম হলেও এটির জন্ম বৃত্তান্ত জানে না বন বিভাগ।
একটি সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে পশ্চিম জার্মানীর এক গবেষক তার একটি বইতে কোরোফর্মের অর্থনৈতিক মুল্য সম্পর্কে উল্লেখ করেছিলেন। তার তথ্য মতে এটির বাকল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের চুলকানী বা চর্মরোগের ওষুধ তৈরী করা হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিরল প্রজাতির প্রজনন বৃদ্ধির চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। বর্ষায় ভরা মৌসুমে বৃষ্টির পরশে ফুলে ফুলে উচ্ছল যখন অরন্যানী ঠিক সেই মুহুর্তে বৃটি বাংলাদেশের মাটি থেকে চির বিদায় নেয়। পঞ্জিকার পাতায় পেরিয়ে গেল ৪টি বছর। বৃক্ষ প্রেমিক ও পর্যটকদের কাছে আজ শোক গাথা স্মৃতি, যা লিখে বুঝানো অসম্ভব। এশিয়ার দুর্লভ প্রজাতির কোরোফর্ম এক্সেলা বৃক্ষটি ছিল ৯ ফুট বেষ্টনী ও ৮০ ফুট লম্বা। ৭০এর দশক থেকে এটিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশী কৌতুহলী হয়ে উঠেন বৃক্ষ বিশেষজ্ঞ ও পর্যটকরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লাউয়াছড়া শিক্ষা সফরে আসলেই কিংবদন্তী বৃক্ষটি নিয়ে হতো আলোচনা ও জল্পনা-কল্পনা। ২০০৬ সালে বৃক্ষটির জীবনাবসানের পর এটিকে সংরক্ষনের চেষ্টা চালায় বন বিভাগ। এটির বৈশিষ্ট ও কার্যকারিতা ও মৃত্যুর কারন সম্পর্কে জানার জন্য খন্ডিত কয়েকটি অংশ পাঠানো হয় বনগবেষনা কেন্দ্র ঢাকা ও চট্টগ্রামে। দীর্ঘ ৪ বছরেও জানা যায়নি বৃক্ষটির মৃত্যুর কারন। তবে প্রাথমিক ধারনায় মনে করা হচ্ছে মাটির গভীরে এটির শিকড় বেশীদুর যেতে না পারা ও গুড়াতে পর্যাপ্ত মাটি না থাকায় ঝড়ের কাছে হেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বিরল প্রজাতির বৃক্ষটি পর্যটকদের শুধু স্মৃতি হয়েই বেঁেচ থাকবে যুগ থেকে যুগান্তর। লাউয়াছড়ায় পর্যটকদের আগমন ঘটবে দেখবে, না সেই বৃক্ষটিকে। নীরবে হয়তো অনেকেই ছলছল চোখে দেখবে স্মৃতিঝরা সেই স্থানকে। যেখানে হাজার হাজার মানুষ কৌতুহলী হয়ে বিভিন্ন পোজ নিয়ে ছবি উঠাতো সেই স্থানটি এখন ফাঁকা। বনবিভাগের নতুন আবি®িকৃত বৃক্ষটি পর্যটকদের সেই অভাব মেটাতে পারবে কিনা তা এখন সময়ের ব্যাপার।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৮:১৭
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×