জীবন যাপনে নাস্তিক হিসেবে চিহ্নিত বা অভিযুক্ত শফিক রেহমানের হাত ধরে এদেশে ভ্যালেন্টাইন’স ডের প্রচলন।
১৪ ফেব্রুয়ারি এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। তাজা প্রাণ হত্যা করায় দিনটি আমাদের কাছে শোক, লড়াই ও প্রতিবাদের৷ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লড়াই সংগ্রামের বিশেষ এই দিনটির তাৎপর্য লঘু করার উদ্দেশ্যেই শফিক রেহমান এই দিনে ভ্যালেন্টাইন’স ডে আমদানির কুট বুদ্ধিটা করেছেন ; নাকি শফিক রেহমান তার স্বভাবজাত কথিত আধুনিকতার চর্চার জায়গা থেকে দিবসটিকে এ দেশে আমদানির ব্যবস্থা করেছেন সেটা হয়ত বিস্তর আলোচনার সুযোগ রাখে।
কিন্তু কারন যেটাই হোক। এ দেশের উঠতি তারুণ্য দেশীয় পহেলা ফাগুনকে ভালবাসা প্রকাশে দেশীয় ঢংগে উদযাপনের দিবস না বানিয়ে আমদানি করা দিনটাকেই ভালবাসার কথিত প্রকাশের দিবস বানালো কেন? সচেতন তারুণ্য তো উপেক্ষা ও বাতিলও করতে পারতো আমদানি করা দিনটিকে। আরো সাদরে গ্রহণ করতে পারতো তার নিজের পহেলা ফাগুনকে। যে তরুণ কথায় কথায় ধর্ম রক্ষার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয় সেই তরুণকেও দেখবেন তার ধর্মে অননুমোদিত ভ্যালেনটাইন’স ডের মত অপ্রয়োজনীয় দিনটিকে ঘটা করে উদযাপন করতে। শফিক রেহমানদের খেয়ালে বা বেখেয়ালে করা অপকর্মের প্রভাব এমনই তীব্র। নিজের অগ্রজের আত্মত্যাগ ভাবানো তো দূরের কথা সেই ত্যাগের কথা জেনে নেবার প্রয়োজনটুকুও মনে করে কি না সন্দেহ আছে।
ভ্যালেন্টাইন’স ডের চাইতে মৌসুমের সবচে সেরা ঋতুর প্রথম দিনটিকেই ভালবাসা প্রকাশের দিবস বানালে বেশি উপযুক্ত হত না? যদি এমন একটা দিবস রাখতেই বা উদযাপন করতেই হয়, সেক্ষেত্রে। এ অঞ্চলের মানুষের পড়তে পড়তে ভালবাসা, রন্ধ্রে রন্ধ্রে রসের মেলা। আমাদের লোকজ অনেক কিছুতেই নর নারীর অকৃত্রিম ভালবাসার নিদর্শন পাই আমরা। পানিতে ও রসে টইটুম্বুর এ অঞ্চলের মানুষের জন্য বোধকরি পহেলা ফাগুনই বেশি উপযুক্ত ছিলো ভালবাসার বহিঃপ্রকাশের দিন হবার।
১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভালবাসাবাসির দিবস হিসেবে উদযাপন করতে বাধে । কোথাও না কোথাও খচ খচ করে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আত্মত্যাগকরা অগ্রজদের অসম্মান করে ফেলছি, এই অনুভূতি হয়। গ্লানি বোধ হয়। সে জায়গায়, পহেলা ফাগুন কে আপন ও একান্ত নিজের মনে হয়। পহেলা ফাগুন সুখ দেয়। স্বস্তি দেয়। গ্লানি থেকে দূরে রাখে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:১৭