ছবি: ০১ একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি।
আমি কোনো ব্লগার নই। আমি লেখক সাংবাদিক গবেষক দার্শনিকও নই। আমি ব্যবসা বুঝি। আমার ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক জ্ঞানে আমি ধারণা করতে পারি “শিক্ষা বঞ্চিত এই অবহেলিত শিশুগুলোকে যদি বাংলাদেশ শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে পারতো তাহলে এরা বাংলাদেশের আদর্শ সন্তান হতে পারতো। সাধারণ শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষাতে এরা হতে পারতো বাংলাদেশের সত্যিকার গর্বিত নাগরিক। এই অবহেলিত শিশুগুলো হতে পারতো দেশের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রী। এই লাঞ্ছিত শিশুগুলো হতে পারতো দেশের প্রথম শ্রেণীর ব্যবসায়ি - যারা হয়তো দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে পারতো।
সুষ্ঠু শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় হয়তোবা অনেক কিছুই হতে পারতো। এই জনম দুঃখী শিশুগুলো হয়তো হতে পারতো বাংলাদেশের আদর্শ শিক্ষক - যারা হয়তো শিক্ষার নামে কখনো কোনো কলঙ্কিত ব্যবসা চালু করতো না। এই নিগৃহিত শিশুগুলো হয়তো হতে পারতো বাংলাদেশের অন্যতম চিকিৎসক - যারা চিকিৎসার নামে কখনো ক্লিনিক ব্যবসা ও ঔষধ বিক্রির নামে রোগীদের হাতে বড় বড় প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেওয়ার কাজ করতো না। হয়তো হতে পারতো অনেক কিছুই, অসম্ভব তো কিছু না। মানব সন্তানই জজ ব্যারিস্টার হয়, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয় - তারা নিশ্চয় অতিমানব বা জ্বীন পরী নন!
এই লেখাটি যারা পড়ছেন তাদের প্রতি অনুরোধ, এই লাঞ্ছিত নিগৃহিত অবহেলিত শিশুগুলোর সাথে কখনো সুযোগ হলে কথা বলে দেখতে পারেন। তাদের আইকিউ কোন লেভেলের কিছুটা হলেও হয়তো ধারণা করতে পারবেন। ইদানিং আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশ সাইক্লিস্ট গ্রুপ, বাংলাদেশ বাইকার গ্রুপ, বাংলাদেশ ইবনে বতুতা গ্রুপ বিপুল অর্থ খরচ করে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ভ্রমণ করছেন। হোটেল রিসোর্টে থাকছেন - মজাদার মুখরোচক খাবার খাচ্ছেন ফুড রিভিউ নামে রেস্টুরেন্ট মার্কেটিং করছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। আশ্চর্য বিষয় ও মজার ব্যাপার হচ্ছে বাংলাদেশের এই অবহেলিত নিগৃহিত ও লাঞ্ছিত শিশুগুলো গত ৫০ (পঞ্চাশ) বছর ধরে সহায় সম্বলহীন ভাবে কপর্দকশূন্য হাতে দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে ফিরছে। দেশের ৬৪টি জেলা এদের পরিচিত। যে কোনো প্রান্তে এদের ছেড়ে দিলে এরা ফিরে আসতে পারে পুরোনো কর্মস্থলে। ঠিক তেমনই দেশের যে কোনো প্রান্তে এদের যেতে বললে এরা যেকোনো প্রান্তে নিশ্চিন্তে গিয়ে দেখাতে পারে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাবার দক্ষতা এবং তাদের পরিচিতি। এরা হয়তো হতে পারতো বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ নাগরিক।
একটি বিশেষ অনুরোধ: দেশের সাধারণ মানুষ, অতি সাধারণ মানুষ সহ অসাধারণ মানুষ ও সরকার আইন প্রশাসন কি এই অবহেলিত লাঞ্ছিত নিগৃহিত শিশুদের নিয়ে কাজ করবেন? চাইলেই তাদের জীবন পাল্টে দেওয়া সম্ভব। শুধু চাইতে হয়। চেয়ে দেখতে হয়। চাওয়ার মতো চাইতে হয়। এখনও সময় আছে এই লাঞ্ছিত অবহেলিত শিশুগুলোকে কারিগরি শিক্ষার আওতায় এনে এদের জীবন পুনর্বাসন করা সম্ভব। এই জনম দুঃখী শিশুগুলোরও অধিকার আছে এবং যোগ্যতা আছে একটি সুন্দর জীবনের।
ছবি: ০২ ভৌতিক বলে মনে হলেও এরা মানব সন্তান। দেশের সন্তান। তাদের মেধা জ্ঞান আমাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
ছবি: ০৩ বই পুস্তকে পড়েছিলাম মানুষের মৌলিক চাহিদা নাকি অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা ও চিকিৎসা!
ছবি: ০৪ পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও - সত্যিই কি তাই?
ছবি: ০৫ জীবন মানে যন্ত্রনা।
ছবি: ০৬ শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড! - ওরা কারা? আমাদের জাতির কেউ নাকি ভিনগ্রহের এলিয়েন?
ছবি: ০৭ অবহেলা লাঞ্চনা - আসমুদ্রহিমাচল!
আত্মকথা: প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণের একটি কবিতা দিয়ে আত্মকথা শেষ করছি “আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষগুলো অন্যরকম, হাঁটতে পারে, বসতে পারে, এ-ঘর থেকে ও-ঘরে যায়, মানুষগুলো অন্যরকম, সাপে কাটলে দৌড়ে পালায়। আমি হয়তো মানুষ নই, সারাটা দিন দাঁড়িয়ে থাকি, গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকি। সাপে কাটলে টের পাই না, সিনেমা দেখে গান গাই না, অনেকদিন বরফমাখা জল খাই না। কী করে তাও বেঁচে থাকছি, ছবি আঁকছি, সকালবেলা, দুপুরবেলা অবাক করে সারাটা দিন বেঁচেই আছি আমার মতে। অবাক লাগে।
উপসংহার: আমার প্রতিটি লেখার শেষে আমার নিজের অভিমত হিসেবে আত্মকথা অথবা উপসংহার দেওয়ার চেষ্টা করি। যদিও পুরো পোস্ট আামার লেখা। উক্ত লেখার সম্পূর্ণ দায়ভার একান্ত আমার নিজের। আলাদাভাবে আত্মকথা বা উপসংহার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা হবার কথা না। তারপরও প্রতিটি লেখায় একটি উপসংহার আমার কাছে খুব জরুরী হয়ে পরে। আজকের উপসংহারে বলতে চাই, আজকের লেখার সত্যি সত্যি কোনো নাম দিতে পারিনি তাই আজকের পোস্ট - “শিরোনামহীন।
পোস্টের নামকরণ: ডঃ এম এ আলী ভাই সাহেব দেশের অবহেলিত পথ শিশুদের নিয়ে লেখাটি পড়ে মন্তব্যে জানিয়েছেন লেখাটির নাম হতে পারে “শ্রমই যাদের স্বপ্ন” তিনি যথার্থ বলেছেন তাই পোস্টের নাম করণ করা হয়েছে - “শ্রমই যাদের স্বপ্ন” অথবা - শিরোনামহীন।
প্রতিটি ছবির সূত্র ও যথাযথ ওয়েব লিংক ছবির ক্রমিক নাম্বারে সংযোজন করা আছে।
ছবি: ০১ Bangladesh prepares for graduation
ছবি: ০২ Govt to eradicate child labour by 2025
ছবি: ০৩ Garment brands contribute to low wages & child labour in Bangladesh
ছবি: ০৪ 8 Facts about Child Labor in Bangladesh
ছবি: ০৫ Govt announces six sectors free from child labour
ছবি: ০৬ what is child labor definition?
ছবি: ০৭ Bangladesh can lead the call to end child labour in South Asia
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৩২