ঢাকায় হতে যাচ্ছে 'হে ফেস্টিভাল'। ঢাকার কিছু লেখক ও দুটি গণমাধ্যম কদিন 'হে' 'হে' করছে। জাতীয় জাদুঘরের এক চাকরিজীবী ও মৃদু সাহিত্যকর্মী আমাকে দুবার ফোন দিয়েছেন। আমি তাকে বললাম, 'ব্যাপারডার আয়োজক কারা?
তিনি বললেন, 'বাংলা একাডেমী'।
বললাম, 'তাহলে আপনি আমাকে ফোন দিচ্ছেন কেন? আপনি তো জাদুঘরে চাকরি করেন।'
এবার তিনি বললেন, 'ওরা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে'
'ওরা কারা?'
'ব্রিটিশ কাউন্সিল'
বললাম, 'তাহলে হে'-র আয়োজক ব্রিটিশ কাউন্সিল?'
আমার ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ঘনিষ্ট জাদুঘর-স্টাফ এবার বললেন, 'না, আয়োজক যাত্রিক'
বললাম, 'যাত্রিক আবার কারা? নাম শুনিনি তো'
তিনি এবার বললেন, 'না মানে সাপোর্ট দিচ্ছে...' বললেন একটি প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক ও ইংরেজি দৈনিকের নাম।
বললাম, 'আপনি ওদের হয়ে বলছেন কেন?'
তিনি বললেন, 'ওরা আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর কাজটি দিয়েছে'
আমি বলেছি, 'তাহলে ওদের লেটার ইস্যু করেত বলেন, আপনার কথায় তো আমি ওখানে যেতে পারি না। তাছাড়া ব্যাপারটা তো আগে বুঝতে হবে, কারা হে, কারা গে...কারা ফে...তাদের উদ্দেশ্যডা কি...?'
হে ফেস্টিভালে ঢাকায় আসছেন লেখক বিক্রম শেঠ, অভিনেত্রী নন্দিতা দাশসহ উপমহাদেশের কজন বিখ্যাত মানুষ, গতকাল জানালেন কেউ কেউ। একি কোনো সাহিত্যের আয়োজন, নাকি দুজন নবীন লেখককে বিরাট লেখক হিসেবে ভূষিত করা? তারা আবার কারা? এক, কাজীপুত্র, দুই, আনামকন্যা। ফলে 'হে'র আয়োজক পুত্র-কন্যার বাবারা ও বাবাদের টাকারা। এখন এই দুজন নবীন লেখককে যখন একটা গ্রান্ডভূষণে চিহ্নিত করা হবে, তখন হাততালি দিতে লোক লাগবে না? কারা থাকলে, কাদের হাততালি পড়লে নবীন দুজনের প্রতিষ্ঠায় সুবিধে হয়? এককথায়, ঢাকার লেখকরাই থাকলেই ভালো হয়। তাহলে ডাকো ঢাকার লেখকদের। উপস্থিতিকে মূল্যবান করা দরকার।
ওহ, এই জন্যেই হে হে হে...?
যাদের লেখাই পড়িনি, তাদের জন্য হাততালি দিতে হবে? এরইমধ্যে শুনছি সিনিয়র একদল হাত পাকিয়ে বসে আছেন। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রধান প্রধান লেখকরা হাততালি দিলে টাকাও দেয়া হবে, সে কথাও বলেছে তারা। বাংলাদেশের দুজন ইংরেজিভাষার লেখকভূষণের এই প্রয়াসে আমার হাসি পাচ্ছে। টাকায় কী না হয়! ...হে হে হে
(অভিজ্ঞতা খেকে জানি, প্রয়াত আহমদ ছফা ও খুন হয়ে যাওয়া হুমায়ূন আজাদ বেঁচে থাকলে এই প্রয়াস নিয়ে খুব প্রয়োজনীয় কটাক্ষ করতেন, আর কেউ তো নেই...)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১১