নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরব চায়ের সমাহার (৩) - কারকাদিয়া

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:৪০

একটা কাজে ইয়েমেন বর্ডারের কাছে গিয়েছিলাম, নজরান শহরে। সেখানে এক ভাইয়ের আতিথেয়তার কারণে ফিরতে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেলো। গাড়িতে আমরা ৬জন। সবাই ভালোই ড্রাইভিং পারি, তাই চিন্তা করলাম না।

আমি সবার থেকে বয়সে ছোট হওয়ায় এক্কেবারে পিছনের সীটে গিয়ে জায়গা হলো। আমাকে ঘুমাতে নির্দেশ দেওয়া হলো, যাতে মূল চালকের ক্লান্তি আসলে আমি কাভার করতে পারি।



ঘুমের ভিতরেই চাকার ঘরঘর শব্দ আর চাকার নিচে থেকে শক্ত মাটির দলা সরে যাওয়ার শব্দ, আর অফ রোডের ঝাকুনিতে ঘুম ভাঙ্গলো। তাকিয়ে দেখি একটা চায়ের দোকানের সামনে গাড়ি দাড় করানো।

এক ভাই জানালেন এখান থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার ভিতরে গেলেই আব্রাহার হস্তি বাহিনির যাওয়ার রাস্তা পাওয়া যায়। অন্য একদিন আমরা আসবো এমন প্লান করা হলো।

সবাই এক এক রকম চা অর্ডার করছিলেন। আমি দেখলাম কয়েকজন ইয়েমেনী গোলাপী কালারের একটা চা খাচ্ছেন। আগ্রহ জাগলো। বিক্রেতাকে ওদের চা দেখাতেই বিক্রেতা বললেন ওটা কারকাদিয়া চা।

ইন্টারনেট ঘেটে জেনেছি কারকাদিয়া হচ্ছে মূলত জবা ফুলের শুটকি! আবার এক ধরণের গোলাপের থেকেও আসে।

এই চা বাানো এক্কেবারে সহজ। প্রথমে জবা ফুলকে শুকানো হয়। এরপর বানানো হয় চা। তাতে বেশ ভালো পরিমানেই লেবুর রস দেওয়া হয়।

প্রথমবার চুমুক দিতেই আমার উপরের দাঁতগুলি টকে গেলো। টক মানে চরম টক। কিন্তু অদ্ভুত একটা স্বাদ। গাড়ির ভিতরে নিয়ে আসতেই গাড়িও সুন্দর একটা ঘ্রাণে ভরে গেলো, টক মিশ্রিত ঘ্রাণ।

সবার কাছ থেকে জানলাম আমি যেখানে থাকি, ঐ এলাকাতেই একটা দোকানে এই চা বিক্রি হয়, স্বাদ নাকি আরও মজার।

সৌদীর অন্য সব চা থেকে এটা একটু আলাদা একটা কারণে, মিষ্টি! সৌদীতে মূলত প্রায় সব ধরণের চায়ে প্রচুর মিষ্টি দেওয়া হয়। কিন্তু এই চায়ে মিষ্টির পরিমান তুলনামূলক কম, টকের পরিমান বেশী।

এই চায়ের উৎস ইজিপ্ট। ইজিপশিয়ানদের বাড়িতে এই চায়ের মজাই যেন অন্য রকম।

একবার ট্রাই করেছিলাম চিনি ছাড়া, মধু দিয়ে। আমার কাছে এক্কেবারে মধু দিয়ে খেতেই বেশী মজা লেগেছে। এর পর থেকে আমি চিনি ছাড়া মধু দিয়েই খাই।

এই চায়ের সম্পর্কে আরও আগ্রহ বাড়ে একবার কোলেষ্টোরেল বেশী ধরা পড়ার পর। জানতে পারি এটার বেশ কিছু গুন।

১. ব্লাড প্রেসার কমায় বেশ দ্রুত
২. ব্লাড সুগার কমায়
৩. LDL বা খারাপ কোলেষ্টোরেল কমায়
৪. HDL বা ভালো কোলেষ্টোরেল বাড়ায়
৫. ওজন কমাতে কার্যকরী
৬. শোনা যায় হার্টের জন্যও নাকি ভালো

তবে, আপনাকে চিনি ছাড়া খেতে হবে, কারণ চিনি হচ্ছে ডিরেক্ট বিষ!

সর্তকতাঃ প্রতিটি ভালো জিনিষের যেমন একটা খারাপ দিক থাকে, তেমন এটারও আছে।
১. যদি আপনার সুগার লেভেল বা ব্লাড প্রেসার লেভেল কম হয়, তাহলে সাবধানে খাবেন। এটা হঠাৎ একটানে সুগার ও প্রেসার কমায় ফেলতে পারে। দেখা গেলো ধপাস করে মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন।
২. অতিরিক্ত এই চা খেলে কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। এই চা খাওয়ার পর একটু বেশী বেশী পানি খেতে বলে ডাক্তারেরা।
৩. গর্ভবতী মহিলাদের ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের ডাক্তাররা এটি খেতে মানা করেন।
৪. যাদের ম্যালেরিয়ার জন্য ঔষধ খাওয়া দরকার হচ্ছে, তাদের জন্য এটি একদম বড় রকমের "না"।

সৌদীতে প্রচুর পরিমানে ডাক্তার ইজিপশিয়ান। এদের কাছে যদি এই চা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়, এরা বেশ আগ্রহ সহকারই বলে।

এই চা ইচ্ছা করলে ঠান্ডাও খাওয়া যায়, যদিও আমি এখনও সেটা করিনি!



আরব চায়ের সমাহার (১) - হাবাক চা!
আরব চায়ের সমাহার (২) - সাই আদানি

ছবি ক্রেডিটঃ alphafoodie এবং medicalnewstoday

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আরব গেলে অবশ্যি স্বাদ নিবো এই চায়ের।

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৩১

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: দেশেইতো ট্রাই করতে পারেন। জবা গুড়া, hibiscus (হিবিস্কাস) লিখে সার্চ দিন। দারাজে পাওয়া যায় দেখলাম।

২| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:১৮

ইসিয়াক বলেছেন: নতুন কিছু জানলাম।
পোস্ট ভালো লাগলো।

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৩১

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:২৬

শাওন আহমাদ বলেছেন: কালার দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে।

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: অনলাইনে অর্ডার করে ফেলেন। ইন শা আল্লাহ ভালোই লাগবে!

৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: ফুল, ফলের ফ্লেভারে চা এখন সর্বত্র খুবই জনপ্রিয়।

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কথা সত্য, আমার কাছে প্রমাণ আছে!

৫| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৫

মোগল সম্রাট বলেছেন:


রুহ আফজার মতে দেখতে। আচ্ছা এধরনের চায়ে হেলথ বেনিফিট সত্যিই থাকে? সৌদিরা নাকি গাওয়া খায় বেশি? আমি একবার গাওয়া খেয়েছিলাম। এক আত্মীয় এনে দিয়েছিলো। মুখে দেয়ার পর মনে হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম অখাদ্য।

যাই হোক এরকম টকটকে লাল চা কোনদিন ট্রাই করিনি। সামনে পড়লে ট্রাই করে দেখবো।

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:২৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুম রুহ আফজার মত দেখতে, কিন্তু স্বাদে তেমন না।

জ্বী, হেলথ বেনিফিট থাকে, যদি সঠিক ভাবে খাওয়া হয়। অতিরিক্ত জ্বাল দেওয়া এবং চিনি মেশানোতে হেলথ বেনিফিট ফিকে হয়ে যায়।

গাহওয়া খাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রায় সবারই কম বেশী এমন। প্রথমবার আমার এমন হয়েছিলো। এরপর থেকে পালিয়ে বেড়াতাম যেন কেউ গাহওয়া না খাইয়ে দেয়। আর এখন খুঁজে ফিরি কোথায় ভালো গাহওয়া পাওয়া যায়। আমার বাসার কাছে একটা মসজিদে সোম ও বৃহস্পতিবার ইফতার দেয়, সাথে থাকে গাহওয়া। যেখানে যেভাবে থাকি না কেন, সোম আর বৃহস্পতি মাগরীবে আমার বাসার কাছের মসজিদেই সালাত আদায়ের চেষ্টা করি। গাহওয়ার এমনই গুন ;)

এই পোষ্ট লেখার পর দেখলাম দেশেও পাওয়া যায়, প্রথম মন্তব্যের উত্তর দেখেন।

৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

মিরোরডডল বলেছেন:




গোলাপি কোথায়!!! এতো রেড ওয়াইনের মতো দেখতে।

এই চা খাওয়া যাবেনা, মনে হবে রক্ত পান করছি।

যতই জবা বা গোলাপের সুঘ্রান হোক, এই টক চা ট্রাই করতে চাই না।

টক আমার খুবই অপছন্দ।

চায়ের সেরা চা হচ্ছে আমাদের টিপিক্যাল বাংলাদেশী স্টাইলে চা পাতা চুলায় জ্বাল করা দুধ চিনি দিয়ে চা।
সারাদিনে এক কাপ চা খেলেও সেটাই খেতে চাই।

অমৃত ম্যান!! অমৃত সুধা।

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:২৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ছবির কারণে এমন লাল লাগতে পারে, তাছাড়া আপনার ল্যাপটপ-পিসি-মোবাইলের কালারের জন্যও লাগতে পারে। তবে সামনে দেখলে গোলাপীই মনে হবে।

সৌদী থেকে যদি কেউ যায়, খুবস চা নিয়ে যেতে বলবেন। ঐ চা দিয়ে একবার লাল চা বানিয়ে খেলে আশাকরি দেশের চা গুলির সমস্যা ধরতে পারবেন। খুবস চায়ে এত সুন্দর ঘ্রাণ বের হয়, একবার ঘ্রাণ নিলে মনে হয় এতদিন যেন গরম পানিই খেয়েছি!

দুধ চা আমারও ভালো লাগতো, তবে হেলথ সাপোর্ট করে না দেখে আর খাই না!

৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:৩২

শায়মা বলেছেন: হায় হায় ভাইয়া!!!

এত্ত সুন্দর চা!!!

কোথায় পাবো বাংলাদেশে!!!

আমার লাগবেই..........

আমি এই চা চাই ....

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৫৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের উত্তরে দেখুন। দারাজে দেখলাম বিক্রি হচ্ছে।

৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:০৬

অভি যাত্রী বলেছেন: গাওয়া কখনো খেয়েছেন

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৫৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: প্রায় প্রতিদিন খাওয়া হয়!

৯| ২০ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ২:৪৯

সোহানী বলেছেন: আজই সার্চ দা খোঁজ লাগাবো .......... ;)

২০ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:২৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ওকে। জানাবেন কেমন লাগলো।

১০| ২০ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: দেশেইতো ট্রাই করতে পারেন। জবা গুড়া, hibiscus (হিবিস্কাস) লিখে সার্চ দিন। দারাজে পাওয়া যায় দেখলাম।

আমি অনলাইন থেকে কেনাকাটা একেবারে পছন্দ করি না। আমার বউ অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে ওস্তাদ। প্রতিদিন কিছু না কিছু কিনছে। আর আমার ভাই আজকাল তার সংসারের সব কিছু অনলাইন থেকেই কিনছে। সামান্য নাপা ওষুধও অনলাইন থেকে কিনছে।

২০ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৫:০৭

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: জ্বী, দারাজে পাওয়া যায় দেখলাম, ১নং মন্তব্যের উত্তরে সেটা বলেছি।

অনলাইনে কেনাকাটা একটা নেশার মত।

আচ্ছা, দেশে এখন ডেলিভারীর পর রিটার্নের ক্ষেত্রে কেমন কি পলিসি, জানা আছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.