নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

তবুও ভালোবাসি তাকে ( শেষ পর্ব )

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৫৫

তবুও ভালোবাসি তাকে ( পর্ব ০২)





তারপর ইরার সাথে আমার আর দেখা হয় নি । কয়দিন পরেই ওরা আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে যায় । আর S.S.C পরীক্ষার পর আমিও চলে আসি ঢাকায় । তারপর আর যাওয়া হয়নি খুব বেশি ।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কালকের কথা গুলো মনে পড়ল । আজ ইরার সাথে আবার দেখা হবে এটা ভাবতেই মনের ভিতর কেমন একটা আনন্দের অনুভূতি বয়ে গেল । আমি ভেবে অবাক হই এতো দিন ইরার উপর কেবল মিথ্যা রাগ করেছি অথবা বলা যায় মিথ্যা রাগের অভিনয় করেছি । কালকে ওর সাথে দেখা হবার পর আমার সব রাগ কোথায় উড়ে চলে গেল । সত্যি তাই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ থাকে যাদের উপর রাগ করে থাকা যায় না কিছুতেই ।

সকাল এগারটার দিকে রবীন্দ্রস্বরবরে দেখা করার কথা ছিল । গিয়ে দেখি ও আগেই এসে হাজির । আজ ও হালকা নীল রংয়ের একটা চুড়িদার পরেছে । আমি এমনই আশা করেছিলাম । এটাও আমার পছন্দের রং । সত্যি বলতে কি ওকে নীল চড়িদারে নীল পরীর মত সুন্দর লাগছে । সকাল বেলা লোক সমাগম কম । আমরা নিড়িবিলি একটা জায়গা দেখে বসলাম ।

আমি কিছু বলার আগেই ও বলল “সারা রাত খুব ভয়ে ছিলাম” ।

“ কেন ? ভয়ে ছিলে কেন” ? আমি অবাক হলাম ।

“না মানে যদি তুমি না আসো” । তারপর আমার হাতটা ধরে বলল “তুমি আমার উপর অনেক রেগে আছো না” ?

“ইরা আজ এতো দিন পর এসব কথা তুলে কি লাভ বল ? তোমার উপর রাগ ...!” বলতে গিয়ে থেমে যাই । আমি খানিকটা হাসি ।

“রাগ থাকলে কি এখানে আসতাম ? রাগ হয়তো নেই কিন্তু সেদিনকার সেই আচরনে আমি খুব বেশি অবাক হয়েছিলাম আর খুব বেশি কষ্ট পেয়েছি যার ক্ষত এখনও সুকায় নি” ।

ইরা খানিকক্ষন চুপ করে থাকল । কি বলবে তাই হয়তো গুছিয়ে নিচ্ছে ।

“আচ্ছা তোমার কি মনে এই কথাটা একবারও হয়নি আমি এমন একটা কাজ কেন করলাম” ?

“আমি জানি না । কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল যে ঐ ভাবনাটা মাথায় আসতে দেইনি । সত্যি কেন করেছিলে এমনটা” ? “আব্বুর জন্য । তুমি জানো আমি আব্বুকে অনেক ভয় পেতাম । সেদিন যখন আব্বু তোমাকে ধরল আমি ভয়ে আধমরা হয়ে গিয়েছিলাম । আমার মাথায় ভয় ছাড়া আর কিছুই কাজ করছিল না । আব্বু কিছু আচ করতে পেরেছিল । রাতে বাসায় এসে আমাকে জিঞ্জেস করে তোমার কথা । বলে যে তোমার সাথে আমার কোন যোগাযোগ আছে কিনা । আমি কেমল একটু মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলেছি আব্বু এমন জোড়ে একটা চড় মারল । আমি তাল সামলাতে না পেরে দুতিন হাত দুরে গিয়ে পড়লাম । তারপর কি পরিমান ....”

কথাটা বলতে বলতে ইরা কেঁদে ফেলল । কাঁদতে কাঁদতে বলল “আমি আর সহ্য করতে পারি নি । ঐ টুকু বয়সে আমার আর সাহসে কুলাই নি আব্বুর বিরুদ্ধে যাবার । সেই শক্তি আমার ছিল না । তাই আব্বু যা যা বলতে বলেছিল আমি তাই বলেছিলাম” ।

আমি হাত দিয়ে ওর চোখের জল মুছিয়ে দিলাম ।

“থাক কেঁদো না আর । এখন আর কাঁন্নাকাটি করে কি লাভ” !

“ বিশ্বাস করো সেদিধ যখন তোমার বাবা তোমাকে মারছিল প্রতিটা আঘাত যেন আমার গায়ে লাগছিল । কি যে একটা অপরাধ বোধ আমি বয়ে বেড়াচ্ছিলাম এই ছয় বছর ! একটা রাত যদি আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারি ! এমন কোন দিন নেই যে আমি তোমার কথা ভাবি নি” !

কিছুক্ষন ইরা নিরবে কাঁদল । আমি ওকে কাঁদার সময় দিলাম । এতোক্ষন ও আমার হাত জড়িয়ে ছিল এখন আমি ওর হাত দুটো নিজের হাতের মধ্যে নিলাম ।

বললাম “দেখো যা হয়ে গেছে সে তো আর ফেরানো যাবে না । ঐ কথা ভেবে আর লাভ নাই” ।

কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললাম “এখনও কি তোমার আব্বুকে ভয় পাও” ?

ইরা মাথা নাড়াল । বলল “ঐ দিনের পর আমি আব্বুর সাথে কথা বলি না” ।

“সত্যি” ? আমি খানিকটা অবাক হলাম । “একই বাসায় থাকো অথচ কথা বল না ? জানো ঐ দিনের পর আমার বাবা আর আমার মুখ পর্যন্ত দেখে নি । কথা বলা তো দুরে থাকুক” ।

দেখলাম ইরার মুখটা আবার মলিন হয়ে গেল । বল্ল “আমার জন্য তোমার আজ এই অবস্থা । আমি কিভাবে নিজেকে ক্ষমা করবো” ?

“বলেছি না যা হবার হয়ে গেছে । ঐ কথা চিন্তা করে কি লাভ” !

ইরা আমার কথা শুনে খানিকটা প্রশন্ন হল । বললাম “জানো তোমার সাথে দেখা হবার আগ পর্যন্ত আমি ভাবতাম যে তোমার উপর আমার অনেক রাগ । কিন্তু তোমার সাথে দেখা হবার পর বুঝতে পারলাম আসলে তুমি যাই কর না কেন তোমার উপর রাগ করার ক্ষমতা আমার নাই ই । আমি হাজার চেষ্টা করেও তোমার উপর রাগ করে থাকতে পারি নি” ।

ইরা এক মনে আমার কথা গুলো শুনছিল । কথা শেষ হলে বলল “এখন আমার কি করতে ইচ্ছা হচ্ছে জানো” ?

“কি” ?

“তোমাকে জড়িয়ে চুম খেতে । খাবো” ?

“আরে মাথা খারাপ নাকি’ ? আমি আতকে উঠলাম । “পাগল হয়েছ ? চারিপাশে লোকজন দেখছো না” ?

ও অদ্ভুদ চোখে তাকাল আর কেবল হাসল । বুঝলাম সুযোগ পেলে ও কাজটা ঠিকই করবে ।

আমি আর কিছু ভাবি না । এক দিকে ইরার প্রতি ভালবাসা আর এক দিকে বাবা । ইরার উপর তো রাগ করা ঠিক হবে না । ও তো এমনটা ইচ্ছা করে নি । আমি পারবো ও না রাগ করে থাকতে । আর বাবা আমার কোন কথা না শুনেই সে আমাকে ত্যাজ্জ করে দিয়েছে । কি করবো আমি জানি না । জীবন যেমন চলছিল চলুক । মাঝ খান দিয়ে যদি ইরার ভালবাসা আসে ক্ষতি কি?

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:১১

অদ্ভূত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ বলেছেন: জয় হোক ভালোবাসার , নিপাত যাক অচল সামাজিক "সম্মান" ।

২৭ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৪৪

অপু তানভীর বলেছেন: ঠিক !!!

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৪৯

নিষ্‌কর্মা বলেছেন:

প্রেম ও ভালোবাসার জন্য ছোট হতে হলেও ক্ষতি নেই।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৫৩

অপু তানভীর বলেছেন: ঠিক বলেছেন । আমি আপনার সাথে এক মত ।

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৬

ঈষাম বলেছেন: হুম !:)

২৭ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৪৩

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :) :)

৪| ২৭ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২০

রাশান শাহরিয়ান নিপুন বলেছেন: প্রেম ও ভালোবাসার জন্য ছোট হতে হলেও ক্ষতি নেই।

২৭ শে মে, ২০১২ রাত ১০:২৮

অপু তানভীর বলেছেন: /:) /:) /:)

৫| ২৭ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৩৯

নাজনীন১ বলেছেন: আমি হাজার চেষ্টা করেও তোমার উপর রাগ করে থাকতে পারি নি” ।

-- কত্ত ভালোবাসা! :)

২৭ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৪৩

অপু তানভীর বলেছেন: :) :) :)

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১৫

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: ওয়াও!এই সুইট গল্পটা আগে পড়া হয়নি!!
অনেক অনেক ভাললাগা......।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: :):):)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.