শীত নেই গ্রীষ্ম নেই আপাদমস্তক ঢাকা উদ্ভট একটা রঙ চটা নীল রঙের আলখাল্লা পরে, ঈশ্বর মাঝেমাঝে আমাদের সঙ্গে হাডুডু খেলতে আসেন! আমরা প্রতিপক্ষ দুটি দল তখন এক দল হয়ে যাই। সাত সাত চোদ্দ জন খেলোয়াড়ের দল নিয়েও একা ঈশ্বরকে আমরা কখনও হারাতে পারি না, বারবার শুধু হেরে যাই! উদ্ভট সেই বিকট নীল আলখাল্লায় ঈশ্বরের আপাদমস্তক ঢাকা থাকে। অপলক চোখ দুটোই শুধু দেখা যায় বাইরে থেকে। ঈশ্বরের কখনও চোখের পলক পরে না, সবসময় খোলাই থাকে! বড্ড নির্লিপ্ত অনুভূতি শূন্য এক জোড়া চোখ। আমাদের আর দশজন সাধারণ মানুষের মতোই স্বাভাবিক কালো চোখ ঈশ্বরেরও। কিন্তু আমরা কেউ কখনও তাকে পলক ফেলতে দেখিনি। আমি একা নই সতীর্থরাও তাই বলে, ঈশ্বরের কখনও চোখের পলক পরে না। একা ঈশ্বরও আমাদের যৌথ দলের চোদ্দজন খেলোয়াড়কে বারবার হারিয়ে দিয়ে যান হেসেখেলে। বেশ ক’বার জয়ের কাছাকাছি গিয়েও শেষপর্যন্ত আমরা আর পারিনি, যথারীতি হেরেই গিয়েছিলাম, যেভাবে আমরা হেরে আসছি বারবার! তারপর ঈশ্বর বিজয়ী বেশে দম্ভভরে ফিরে গেলে, আমরা দু’পক্ষ চুলচেরা বিশ্লেষণ করি পরাজয়ের। বিভিন্নজন বিভিন্ন মত ব্যক্ত করি। কেউ বলি, ঈশ্বর কালো যাদু জানে, নানান গোপন তন্ত্র মন্ত্র ক’রে খেলতে আসে আমাদের সঙ্গে, তাই সে বারবার জয়ী হয়। কারও মতে, ঈশ্বরের ওই অস্বাভাবিক বিরাট নীল আলখাল্লাটার রং বড্ড উৎকট, চোখে ভীষণ জ্বালা ধরায়, এতে আমাদের খেলায় মনোঃসংযোগের ব্যাঘাত ঘটে, আর এভাবেই আমরা হেরে আসছি বারবার। আবার কেউ বলি, ঈশ্বর আসলে মাদকসেবী, নিষিদ্ধ মাদক সেবন ক’রে খেলতে আসে আমাদের সঙ্গে, সে জন্যই আমরা কিছুতেই পেরে উঠি না। এরকম আরও নানান ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয় পরাজয়ের, কিন্তু কোনওবারই আমরা এসবের কোনওটিতে ঐকমত্য হতে পারি না। সবাই যে যার মতো শুধু বলে যাই।
তারপর ঈশ্বর চলে গেলে আবার আমরা দু’দলে বিভক্ত হয়ে যাই, আবার আগের মতো পক্ষে বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হাডুডু খেলতে থাকি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:৪৯