somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজ্ঞানীরা নাকি কৃত্রিমভাবে প্রাণ সৃষ্টি করেছেন!! আসলেই কি তাই??

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
"বিজ্ঞানীরা নাকি কৃত্রিমভাবে প্রাণ সৃষ্টি করেছেন!"- আসলেই কি তাই???

'ড. ক্রেইগ ভেনটার ', (the biologist, J. Craig Venter Institute in Rockville, Maryland and California) জীববিজ্ঞানের গবেষনার জগতে বহুল আলোচিত একটি নাম। যিনি সিন্থেটিক জেনোম উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে বিরাট সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে এই অসামান্য অবদানের জন্য তাকে ও তার দলকে সাধুবাদ জানাই। তার এই সাফল্য মানবজাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক- এই কামনা সবারই।

ভেন্টারের গবেষণার এই বিপ্লবাত্বক সাফল্যকে পুঁজি করে ইতিমধ্যে অনেকে তাদের স্বার্থ হাসিলের পায়তারা শুরু করেছে। অনেকে বলে বেড়াচ্ছেন- বিজ্ঞানীরা নাকি কৃত্রিমভাবে প্রাণ সৃষ্টি করে ফেলেছেন! এই ধরনের অপপ্রচারের ফলে অনেকে হয়ত ভাবতে পারেন যে, কয়েক দশক পর কেউ অক্কা পেলে কোন সমস্যা নেই- বিজ্ঞানীরা আবার সেই মৃতের মধ্যে প্রাণসঞ্চার করে দিতে পারবেন। তখন সেই প্রাণ কেনার মত সামর্থ যাদের থাকবে তারা কেউ মরবে না। কিন্তু আসলেই কি তাই? মানুষ কল্পনা করতেই পারে- এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তারও তো একটা মাত্রা থাকা উচিত।

তাদের ধরনা ভুল। কৃত্রিম প্রাণ আবিষ্কৃত হয় নাই বা নুতন প্রাণ সৃষ্টিও করা হয় নাই। অলীক কল্পণায় গা ভাসিয়ে নিজেরা যেমন বিভ্রান্তিতে আছে, তেমনি অপরকেও বিভ্রান্ত করে চলেছে। বিভ্রান্তকারীরা জ্ঞানী সেজে মিষ্টি কথার ছলে ধোঁকায ফেলে তাদের দল ভারি করার অপচেষ্টা করছে মাত্র। তাদের এই ছলাকলা বুদ্ধিমানেরা ঠিকই বুঝে নেবে।

Click This Link
Daniel Gibson and his colleagues at the J. Craig Venter Institute in Rockville, Maryland, synthesized the genome of the bacterium Mycoplasma mycoides, consisting of about 1.1 million base pairs. Having assembled the genome inside a yeast cell, they transplanted it into a cell from a closely related species, Mycoplasma capricolum. After the newly made cell had divided, the cells of the bacterial colony that it formed contained only proteins characteristic of M. mycoides.

উপরের লিংক থেকে কিছু অংশ আপনাদের সমীপে পেশ করলাম। যারা বুদ্ধিমান তারা আসল তথ্যটি ঠিকই বুঝে নেবে।

সংক্ষেপে ও সহজ কথায় বিষয়টি হলো - প্রথমে আল্লাহর সৃষ্ট জীবন্ত এককোষী bacterium Mycoplasma mycoides এর "ডিএনএ" ব্লুপ্রিন্ট নকল কোরে বেশ কয়েকটি ধাপে সেই অনুযায়ী synthetic genome গঠন করা হয়।

এক্ষেত্রে গবেষক দলটি জীবন্ত ব্যাকটেরিয়ার জেনোমের কপি তৈরি করেন। তারা জেনেটিক কোডের অনুক্রম গঠন করেন এবং "সিন্থেসিস মেশিনস" ব্যবহার কোরে সেই অনুসারে রাসায়নিকভাবে তার কপি তৈরি করেন।

এরপর সেটা স্রষ্টারই সৃষ্ট আরেকটি নিকটতম প্রজাতির bacterium, Mycoplasma capricolum এর জীবন্ত কোষের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এর ফলে bacterium, Mycoplasma capricolum এর জীবন্ত কোষের মধ্যে bacterium Mycoplasma mycoides এর synthetic genome (ডিএনএ ব্লুপ্রিন্ট) এর নির্দেশ মত প্রোটিন তৈরি হতে থাকে। কোষটি যেহেতু জীবন্ত ও সিনথেটিক ক্রোমসোম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল, তাই সেটা অসংখ্যবার বিভাজিত হওয়ার সময় গঠিত নুতন কোষগুলোও সিনথেটিক ক্রোমসোম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কোষের অনুরূপ ছিল। ক্রোমসোম অসংখ্য জীন বহন করে। বিভিন্ন জীন বিভিন্ন কাজ করে। বেশ কিছু জীনের কাজ সম্পর্কে জানতে পারলেও কোন জীন বা জীনগুলো প্রাণসঞ্চারে মূখ্য ভূমিকা পালন করে তা কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনো জানতে পারেন নাই।

Click This Link
Dr Venter, who has been working on synthetic life for a decade, told The Times: “It is our final triumph. This is the first synthetic cell. It’s the first time we have started with information in a computer, used four bottles of chemicals to write up a million letters of DNA software, and actually got it to boot up in a living organism.

The man-made genome was then transplanted into a related bacterium, Mycoplasma capricolum. This “rebooted” the cell so that it was controlled by the synthetic genome, transforming it into another species. The cell has since divided more than a billion times.

Ben Davis, who works on synthetic biology at the University of Oxford, said: “I still think we are quite a long way away from artificial life. “You could take this synthetic genome and write in new genes with known functions, but that is not so different from molecular biology at the moment.”

কাজটা বেশ কঠিন এবং প্রশংসার যোগ্য। বিজ্ঞানীরা কিন্তু বলছেন-"লাইফটা আর্টিফিশিয়াল"। জীবন্ত কোষের প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়াকে synthetic genome দ্বারা পরিচালিত করার কারণে এটাকে "আর্টিফিশিয়াল লাইফ" বলা হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে লাইফটা কিন্তু আর্টিফিশিয়াল নয়। বরং খুব জোর প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়াটাকে আর্টিফিশিয়াল বলা যেতে পারে। আল্লাহর সৃষ্ট ব্যাকটেরিওফাজ নামক এক ধরনের ভাইরাস যে প্রক্রিয়ায় জনন কার্য সম্পন্ন করে ও বংশ বিস্তার করে, এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা অনেকটা সেই পদ্ধতিকেই অনুসরন করেছেন।
ব্যাকটেরিওফাজ সম্পর্কে জানতে হলে এই লিংকটি দেখুন-

এই আর্টিফিশিয়াল লাইফ বানানোর প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানীরা আংশিকভাবে সফল হলেও পূর্ণাঙ্গ সফলতা অর্জনের পথটা যে এখনও অনেক দূর বাকী- তা কিন্তু তারা ঠিকই স্বীকার করছেন। সুতরাং রিয়াল লাইফ অর্থাৎ "প্রকৃত জীবন" ব্নানোর ধারে কাছেও যে বিজ্ঞানীরা যেতে পারেনি তা ঘোরে না থাকলে বুদ্ধিমান মাত্রই বুঝতে পারার কথা। কিন্তু কতিপয় অপপ্রচারকারী বিষয়টাকে ঘোলা কোরে সেই ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকারের ব্যার্থ চেষ্টা করছে। আর তাদের এই মিথ্যে জালে নেহায়েত দু-চার বা দশটা পুঁটি মাছ যদি ধরা পরেও যায়- তো যাকনা।

এভাবে কিছুদিন চলুক। ওরা জীবন হাতের মুঠায় ভরার স্বপন দেখুক। আবার ধোকা খেলে ঠিকই বোকা হবে। আপনারা কিন্তু ভাই সাবধান। আশাকরি নিজেরা বিষয়টি আরও ভাল করে জানার চেষ্টা করবেন।

পদ্ধতিগত এই সাফল্য অর্জন ও তার সুষ্ঠ প্রয়োগের মাধ্যমে যে মানবসমাজের বেশ উপকার হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বিজ্ঞানীদের মতে-
*তারা এমন জীবাণূ উৎপাদনের কথা ভাবছেন যেগুলো বাতাসের কার্বনডাই-অক্সাইড শোষণ কোরে তা থেকে হাইড্রোকার্বন তৈরি করবে এবং তা রিফাইনারিতে কাজে লাগান যাবে।
*প্রাণঘাতী রোগের ভ্যাকসিন উৎপাদনকে তরান্বিত করা সম্ভব হবে।
*নুতন ধরনের রাসায়নিক ও খাদ্য উপাদান তৈরিতেও খাজে লাগানো যাবে।
*ওষুধ উৎপাদনে, গ্রিনহাউস গ্যাস বিশোষণে ও জ্বালানি সংকট নিরসনে এ পদ্ধতিকে কাজে লাগানো সম্ভব হতে পারে।

তবে অনেকে একে bioterror or “bioerror” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং এর অপপ্রয়োগের ফলে যে প্রাণীজগত ও জলবায়ুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।

কয়েক বছর আগে এই অপপ্রচারকারীদের সাগরেদারা ক্লোনিং নিয়ে অনেক লাফালাফি করল। ক্লোনিং সম্পর্কে জানতে হলে এই লিংকটি দেখুন- তখন বলে বেড়াল- বিজ্ঞানীরা নাকি একটা আস্ত ভেড়ী সৃষ্টি করে ফেলেছে! মানুষকে কিছুদিন ঘোরের মধ্যে রাখা ছাড়া বা দু-চারজনকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। এখন সেই গান শেষ। এইবার কৃত্রিম প্রাণের গান ধরেছে। হাতড়াতে হাতড়াতে একদিন দেখবে সবই যে একই গান- 'ওয়াক্কা ওয়াক্কা' আর 'ফক্কা ফক্কা'- (Empty ; void) - তখন ঠিকই টের পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫৪
৬০টি মন্তব্য ৬৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×