লিভ ইউর লাইফ উইদাউট এক্সপেকটেশন বিকজ ইটস বেটার টু বি সারপ্রাইজড দেন ইট ইজ টু বি ডিসাপয়েন্টটেড। এমনি বহু রকম বিদেশি দেশি কোটেশন নেট এ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এবং আমি নিজেও এই কথাগুলি মনেপ্রানে বিশ্বাস করি। সারাদিন বাইরে থেকে নানা কাজকর্ম ধুলাবালি থেকে রেহাই পেতে বাসায় ফিরে প্রথমেই যেমন ভালো করে ডেটল অথবা লাল রঙের সাবান(লাইফ বয়) দিয়া গোসল দিয়া নিজেকে জিবানু মুক্ত করতে হয়,
ঠিক তেমনি সারাদিনের আপনার চারপাশের মানুষ এবং তাদের আচার আচারন এবং তাদের নিজের সম্পর্কে ব্লাইন্ড ধারণা এবং আপনাকে ছোট করা খারাপ ব্যাবহার করেও তাদের এই রিলাইজ না করা যে, তারা অন্যায় ব্যাবহার করতেছে। নিজেকে হাতি ঘোড়া ভেবে আপনারে পিপীলিকা চোখে আঙুল দিয়া দেখাইয়াও ঠিক স্বস্তি পাইতেছে না, এই থেকে বাঁচতে আপন পর, কাছের, দুরের, ফেইসবুকের, ব্লগের, সদ্য প্রেমিক বনে যাওয়া পুরুষের কাছ থেকে বিন্দু মাত্র এক্সপেকটেশন যদি মনের কোনায় থেকে থাকে, তার দায় আপনার, এবং সেই দায় থেকে বাঁচার একটাই রাস্তা, তাড়াতাড়ি ড্রেন অথবা ময়লা ফেলার স্থানে এক্সপেকটেশন নামক অভিমানকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া।
আমি একদিন আমার মাকে জীবনে প্রথম অথবা শেষবারের মতন বলেছিলাম, আমার নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছে, মানুষ মাঝে মাঝে এমন ব্যাবহার করে যে, মনেহয় আমি গ্রাম থেকে আসা অশিক্ষিত গার্মেন্টস এর মেয়েদের থেকেও অজ্ঞ অশিক্ষিত মান সন্মান হীন তুচ্ছ।
আমার চেহারায় কোন বিষাক্ত বেদনা হয়তো আমার আম্মু দেখতে পেয়েছিল সেদিন, সে ঝরঝর করে কেঁদে দিলেন, এবং অত্যন্ত ছেলেমানুষির মতন বললেন চাকরী বাকরি লেখাপড়া লেখালিখি কিচ্ছু করার দরকার নেই ঘরে বসে থাকো। এরপর তার কান্না আর থামেই না, সেই মুহূর্তে আমি প্রতিজ্ঞা করলাম কোন কষ্টের কথা মা কে শেয়ার করা যাবেনা। সে অবশ্য খুব মজার একটি প্রবাদ আমায় শুনিয়েছিলেন তা হল পান ওয়ালা বেঁচে পান, ধান ওয়ালা বেঁচে ধান, বান্দি চাকর কয় কথা না দিবি কান।।
ওয়েল,
কিন্তু আমি তো মানুষ তার উপর এই সমাজের মেয়ে মানুষ। আমাকে প্রচণ্ড পছন্দ করে এরকম একজন অতিরিক্ত বিত্তবান এবং প্রবীণ মহিলা যে কোনভাবেই আমার সিচুয়েশন বুঝবেনা তার পিড়াপীড়িতে আমার আরেক খানে সদ্য বারি খাওয়ার আংশিক ঘটনা বলতে বাধ্য হলাম।
তিনি আমায় তখন বললেন অত্তাধিক ইন্সপায়ারিং কথা যা আমার আম্মুর বলা প্রবাদকে ও হার মানায়। তিনি বললেন তুমি এতটুকুতে এত আপসেট হচ্ছ!! ইতি আমি তো তোমাকে অনেক সাহসী শক্ত মেয়ে হিসেবে জানতাম, এই কথা বলে খানিকটা হতাশ দৃষ্টি দিয়ে বললেন, আমাদের ইউসুফ নবী মিশরের রানী বিবি জুলেখার অবৈধ আবদারে সারা না দেয়ায় তাকে মিথ্যা চক্রান্ত করে সাত বছর জেল খাটিয়েছেন। তারপর কি হল? সেই সাধারণ ছেলেই কিন্তু মিশরের অধিপতি হল। এত সব কিছু কেন হল বলতে পারো? কারন যদি জুলেখার চক্রান্তে না পড়তো তাহলে সে রাজার নজরে আসতো না, জেল না খাটলে সে কতটা বিশ্বাসী কিংবা ভালো তা রাজা জানতে পারতো না, কাজেই এত সব কিছু আল্লাহ্ করলেন তাকে মিশরের অধিপতি বানানোর জন্য।যারা তোমার পেছনে চক্রান্ত করে ওসব আল্লাহ্ করাচ্ছে হতে পারে এর ভেতরই তোমার মঙ্গল, এতে তোমার মন আরও শক্ত হবে, ধৈর্য বাড়বে।
যাই হোক আমি যা বুঝি তা হল যে যাকে অপছন্দ করে সে যদি ফেরেস্তার মতন নিষ্পাপ ও হয় তবু সে তার চোখে বাজে তুচ্ছ খারাপ থাকবেই, কিন্তু তার পছন্দের মানুষটি যদি খুনিও হয় সেই হবে তার চোখে ফেরেশতা।
আমি একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা( নারী) সাথে কাজ করতাম তখন তার ক্ষমতার কারনে হোক কিংবা আমাকে পছন্দ করতে পারেন না সেই কারনে হোক, সে কোন কিছু ভুল করতেন ভুল বলতেন সেই জন্য আপনার ভুল ইতি বলে চিৎকার করে সারা ফ্লোরের মানুষকে শুনাইতেন, ডানে গেলে ডানে গেছেন কেন বামে যান, বামে গেলে বামে গেছেন কেন যত্তসব, এত টাকা লিখেন, না এত টাকা লিখছেন কেন! এই ধরনের নানান ভুল, কিন্তু তার ডিপার্টমেন্টের যে কেউ ভুল করলে তা লুকিয়ে ঠিক করে ফেলতেন।
মানুষ হয়ে জন্মেছি আমি সঠিক বলে কিছু আছে কি আমার।কিংবা মেয়ে মানুষ হয়ে জন্মেছি আমি সঠিক বলে কিছু আছে কি আমার। বাস্তবতা হল এসব হল মানুষের বাহ্যিক আচরণ কিংবা চক্র এর ভেতর দিয়েই কেউ কেউ কিছু করে কেউ কেউ মরে যায়, ভালো কিছু হয় বলে আমার বিশ্বাস হয়না, আঘাতটা তো থেকে যায় মৃত্যু অবধি।
ছবিটি স্কারি পিকচার কালেকশন থেকে সংগ্রহীত।
২৩ বছর বয়সী এভলিন ম্যাকহেলের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। এই ছবি কে বলা হয় "বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর আত্মহত্যা।" হায় এভলিন যদি তা জানতো। যদি কেউ তাকে এতোটা আঘাত না করতো যে তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হতে হল।
মানুষ মানুষকে পণ্য করে
মানুষ মানুষকে জীবিকা করে
পুরনো ইতিহাস ফিরে এলে লজ্জা কি তুমি পাবে না?
ও বন্ধু………..
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৪২