somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উড়ে যাক দূরে যাক বেদনা শত

২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলির ‘আত্মহত্যার’ করেছিলেন এক বছর আগে, শুরুর দিকে কেউ বুঝতেই পারেনি উনি আত্মহত্যা করেছেন, মশারির ভিতরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন, পরবর্তীতে দেখা যায় উনি সুইসাইড-নোট লিখে মারা গিয়েছেন। সেখানে লেখা ছিল পারিপার্শ্বিক চাপে আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হলাম, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। ছবিতে দেখেছিলাম এক অসম্ভব রূপবতী এবং জ্ঞানী মানুষ, সে কিভাবে আত্মহত্যা করে কিছুতেই মাথায় এলো না!!
তার ফেসবুক প্রোফাইলে গেলাম ছেলের সাথে একটা ছবি প্রোফাইলে দেয়া এরপর profile ঘাঁটতে ঘাঁটতে এক আশ্চর্য তথ্য পেলাম, দেখলাম তার হাজবেন্ড তাকে ছেড়ে গিয়েছে, বিয়ে করেছে অন্য এক নারীকে, সেই প্রোফাইলে আনন্দ উৎসবের বিভিন্ন দিবসের ছবি, ছেলে আলাদা থাকে।
বোঝাই যাচ্ছে তার হাজবেন্ড এর স্বর্গীয় জীবন, আনন্দ অনুভূতি বোধ, দিনে দিনে একসময় সে সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।

এটাকে বলা যেতে পারে হত্যা, আমাদের সামাজিক জীবনে অবশ্যই এজন্য পুরুষ দায়ী, তারা বিয়ের পর স্ত্রীর সাথে এতই দুর্ব্যবহার করেন এবং যেন একান্ত তার কেনা গোলাম বা নাচের কাঠপুতুল।
সেই ধ্যান-ধারনা থেকেই মেয়েদের ট্রিট করেন কাজের বুয়া হিসেবে, তাতে সে যতই শিক্ষিত হোক, যতই প্রতিভাবান হোক।

কয়েকদিন আগে অভিনেত্রী তাজিন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন লেখালেখি পড়ে তার জীবন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হলাম, তার কাছের মানুষজন এমন situation করেছিল যে মরে যেতে বাধ্য হয়েছেন বা তাকে বাধ্য করেছেন।

তাজিন আহমেদ অবশ্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন তার প্রিয় স্বামীর মন পাবার,

যখন সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন তখন পর্যন্ত তিনি তার পরিচিত ছোটভাইকে বলছিলেন তোর দুলাভাইকে ফোন কর, যদিও তার হাজবেন্ড তার জন্য তার মোবাইল থেকে তাজিন আহমেদ এর নাম্বার ব্লক করে রেখেছেন, তবু চেষ্টা করেছেন, তবু সে বাঁচতে চেয়েছেন।

আসলে বাচতে চাইলেও কাছের প্রিয় মানুষগুলোই বাঁচতে দেয় না, একটু ভালোবেসে কথা বললে, একটু সাহায্য করলে কি হয়? একটা মানুষ একটা মানুষের পাশে দাঁড়ালে কি এমন ক্ষতি!!

যাকে ভালোবেসে বিয়ে করে সংসার সাজাবে বলে প্রতিজ্ঞা করে! সময়ের সাথে সাথে সেই ওয়াদা ভুলে যাওয়া সেই মানুষটির প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়! ?


মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, কাছের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা,বাবা মার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা, পরিবার-পরিজনের প্রতি ভালোবাসা, যেন একদম শূন্য হয়ে যাচ্ছে, সবাই শুধু আমি আমি আমি আমি!! শান্তি সুখের চাহিদার শেষ নেই অথচ কিশে যে সুখ তাও জানা নেই।
আজকাল কাউকে বলতে শুনা যায় না যে সে সুখী। নিজের সুখের জন্য ক্রমাগত অপরকে কষ্ট দিয়েই চলছে কিন্তু এটা বোঝেনা স্বার্থপরতার ভিতরে কোন সুখ নেই,

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মানবজমিন বইটিতে একটি অংশে তিনি লিখেছেন "একদিন স্বর্গ সমান উঁচু মহান এক পাহাড়ে উঠবো, উঠবো কিন্তু চূড়ায় পৌঁছাব না কোনোদিন।পাহাড়ের উপর উঠলে তাকে ছোট করে দেওয়া হয়, আমি পাহাড়ের চেয়ে উঁচু নই, আমি চাই পাহাড়ে উঠতে উঠতে একদিনে পাহাড়ের কোলে ঢলে পড়বো,

দুঃখ দৈনদশা থেকে বাঁচার জন্য ঠিক এমন করে কি ভাবা যায় না! জীবন মানে কি অনন্ত পথ চলা নয় জীবন মানেই কি শুধুই নিজের সুখ প্রিয়জনদের সুখই সুখ নয়?

এখন কেউ কারো দুঃখ ভাগ করে নেয় না, কেউ কাউকে সান্তনা দেয় না, একাকীত্ব এক একটি দুঃখী মানুষকে হতাশাগ্রস্থ মানুষকে গ্রাস করে ফেলে,

বোঝা উচিৎ বেঁচে থাকা মানেই সুখে থাকা নয়, বেঁচে থাকা মানে তো এটাও হতে পারে, অপরের জন্য বাঁচা, ক্ষয় হয়ে যাওয়া, আপনজনদের জন্য চেষ্টা করে যাওয়া, সবার জন্য সঠিক পথ খুঁজে বের করা। কাউকে তো এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে, সবশেষে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলোতে রবীন্দ্রনাথের ছোট বৌঠান কাদম্বরীর আত্মহত্যার সময়ের ভাবনাগুলো, "সত্যি হেথা হতে যাও পুরাতন, হেথায় নতুন খেলা আরম্ভ হয়েছে, নতুন খেলা শুরু হলে পুরাতনের স্থান কোথায়? তাকে সরে যেতেই হয়, কিন্তু নতুন-পুরাতন হয়।
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাওয়া এবং যুদ্ধ করতে করতে হেরে যাওয়া সকলের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা।



সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১০
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×