সবুজের সমারোহে বন, মেঠো পথ এঁকেবেঁকে গড়িয়ে গড়িয়ে কিছুদূর এগিয়ে শেষ; তারপর তোমরা।
সেইখানে..
যেখানে একরাশ কৌতূহল নিয়ে, ভালোবাসা নিয়ে , আশীর্বাদ নিয়ে, অপেক্ষায় প্রার্থনায়, মমতায়, ভালোবাসায়, আমার প্রিয়জনেরা।
দেয়ালটা জুরে শ্যাওলা পড়েছে। কে যে বলেছিল নীল রঙ করতে! দেয়ালের রং, মাটির রং, মিলেমিশে অদ্ভুত। দেয়াল_মাটি, মাটি_দেয়াল।
তোমার উপস্থিতির অনুভুতি পেয়ে বসলো আমায়। অনুভব করছিলাম; আমার মাথায় ভাঙা আকাশ।
দাদু ভাই, দাদী, সবথেকে ছোট চাচা, যে বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিলো ডায়রির পাতায় মৃত্যু তারিখ লিখে, শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে যে মানতেই চাইলো না মরে যাচ্ছে। পুরোটাই গল্পে শোনা।
দাদুভাই, তোমাকে একবার মাত্র দেখেছিলাম কিংবা কোন স্মৃতি মনে নেই ঐ একটি স্মৃতি ছাড়া,বড় আপু শুনলেই বলে, আরে যাহ!! এত ছোটকালের কথা কি মনে থাকে নাকি?? বানিয়ে বানিয়ে বলিস!!
আপুর কথা অবিশ্বাস করে, মনে করতে পারি দুপুর কিংবা বিকেলের আলোটা এরকমই পরিস্কার সবুজ আর সতেজ ছিল, ছিল একটা ইজি চেয়ার।
তোমার কাঁপা কাঁপা হাত, পাশেই দাঁড়িয়ে আমি, চাকার মতো এটা কেমন চেয়ার দাদুভাই?
টানাটানি করতে করতে, একচুল নড়াতে পারিনি। দাদুর রুগ্ন হাতটা ইজি চেয়ার যেনো, নড়াতে অক্ষম।
সেদিন তুমুল ভালোবাসায়, রক্তের টানে, বংশের টানে, তার হাত শিশুটির মাথায় রাখার ব্যর্থ চেষ্টা। ১টি মোটে শব্দ বললে, স..স..সামুহ। ওটাই ছিল আমাদের শেষ সাক্ষাৎ।
আশির্বাদ দিতে ব্যর্থ হলে তুমি। তারপর থেকেই আমার মাথার উপর নেমে এলো রাজ্যের মমতাহীন বাঁচার অভিশাপ। বংশগত সূত্রে যোদ্ধা আমি।
আমার অবসাদ সুযোগহীন,পৃথিবীর জঞ্জালের মতন, জঞ্জাল ঝেড়ে ফেলে উড়তে চায়।আমার দুটি ডানা চাই এই শেষ প্রার্থনা।
তুমুল রক্তের টানের কাছে হার মেনেছে ক্ষুধার্ত রাক্ষুসে বাস্তব।
পেয়েছো কি টের! আজ আমি এখানে, আত্মার টানে। আমায় দেখতে পাচ্ছ কি? অসুখ টের পাচ্ছো? কষ্টগুলো টের পাচ্ছো? অবুঝ সাহস?
তোমার দুর্বল হাতটি চোখে ভাসে, কাঁপা হাত, সরু আঙ্গুল, উঁচু কপাল,পাতলা ঠোঁট, নাক,চোখ, আর রক্তের টান।
যেনো সাদা কালো ছবি।
আমি মগ্ন হই, হাঁটি, কথা বলি, ছবি তুলি ,সবাইকে দেখি।
তোমাদের দেখিনা। হে প্রিয় হারিয়ে যাওয়া স্বজন,
আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেবে? বহুদিন হয়ে গেলো আমি এপাড়ে দাঁড়িয়ে একা। মাথার ভেতর ঘূর্ণিঝড় নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:২২