আপনি কি স্বাধীন দেশে পরাধীন নাগরিক হয়ে বসবাস করতে করতে ত্যাক্ত বিরক্ত? আপনি কি অকাজ, কুকাজ কিংবা গুকাজের স্বীকৃতি চান? তাহলে আর দেরি না করে একটা কালো বা লাল বাদে অন্য যেকোনো কাপড়ের মাঝে “খালেদা জিয়া ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই” এই ধরনের লেখা লিখে কিছু ছবি তুলে সযত্নে রেখে দিন।এটা রাজপথে করতে হবে এমন কোন কথা নাই কারন রাজপথে করতে গেলে উনার ভয় না থাকলেও আপনার নিজের ভয় থাকতেই পারে। নিজে বাঁচলে কার নাম তা কি বলা লাগবে?
প্রশ্ন করতে পারেন এই ছবি দিয়ে কি হবে?
ছাত্র অবস্থাতে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে পাতি এবং কো-পাতি নেতাদের দেখতাম সামনের সারিতে দাড়িয়ে ছবি তোলা নিয়ে টেংরি ভাঙ্গা ভাঙ্গি চলত! তখন এর মজেজা বুঝবার পারি নি। একবার বাংলাদেশের কোন এক দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সাথে স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে গেলাম। আমাদের কয়েকজনকে দায়িত্ব দেয়া হল ফুল দেয়ার মুহূর্তে ক্যামেরা ক্লিক করার সময় নেতার মুখের সামনে যেন কেউ না এসে পরে এবং ফুলের তোড়ার বারটা বাজিয়ে নিজের চাঁদবদন দেখানো লোকজনের করাল গ্রাস থেকে এই বর্ষীয়ান নেতাকে বাঁচানো। কারন সামনের সারির লোভে পরে কেউ হয়ত নেতাকেও মাটিতে ফেলে দিতে পারে, আর ঐ ভিরে একবার মাটিতে শুয়ে পরলে ঐ বয়সের ব্যক্তির কবরে শোয়া ছাড়া গতি নাই!
ওইদিন তওবা করছিলাম রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না! কারন নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে ওখানে অনেক সিনিয়র মানুষরে অকথ্য ভাসা ব্যাবহার করে প্রথম সারিতে আসা হতে বিরত থাকতে হয়েছিল।
সে যাই হোক কৌতূহল বশত এমন এক পরিশ্রমী নেতাকে জিজ্ঞেস করলাম ফুল দিতে এসে এভাবে সামনের সারিতে যাওয়ার জন্য এত ফালাফালি কেন? উত্তরে উনি বলেছিলেন “দল ক্ষমতাতে গেলে এই ছবির মোজেজা জানতে পারলে আপনিও আমার ঘাড়ে উঠে হলেও সামনের সারিতে দাড়াতে যেতেন। আরে মিয়া দলের এই দুর্দিনে আমি সামনে ছিলাম সুতরাং দলের সুদিনে দলও আমাকে ঠেলে শীর্ষ ধনী বা সম্মানী না করলে দল করে কি লাভ?” মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানির রাজনৈতিক আদর্শে উজ্জীবিত এক পরিবারের সন্তান হিসেবে রাজনিতিকে টাটা গুড বাই বলতে এই মন্তবের চেয়ে ভালো ঔষধ আর কি হতে পারে?
এখন প্রশ্ন করতে পারেন এই ঘটনার সাথে প্রারম্ভিক আলোচনার যোগসূত্র কোথায়?
কোথায় আবার, এই যে ছবি তুলে রাখলেন এরপরে বি এন পি ক্ষমতাতে এলেই ধরা কে সরা জ্ঞান করে চলবেন, টেণ্ডারবাজি করতে কেউ বাধা দিলেই তাকে ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করে দিবেন, যে কারো নাকে মুখে ঘুষি বসিয়ে দিবেন হোক সেটা শিক্ষক সমতির মিটিং কিংবা সদরঘাটের কুলিদের শৃঙ্খলা আনয়নের মিটিং। এমন যা খুশী তা করতে কি আপনার মন চায় না? যদি চায় তাহলে আর দেরি না করে এখনি ব্যানার এর অর্ডার দেন।
ও ভুলেই গিয়েছিলাম ছবি কিন্তু এখন ভুলেও ফেসবুকে আপলোড দিবেন না কারন তাইলে .........
ছবি সযত্নে রেখে দিয়ে উপরে উল্লেখিত অকাজ, কুকাজ, গুকাজ করার পরে ফেসবুকে আপলোড দিয়ে বলবেন দলের দুর্দিনে আমি ছিলার আর আজ আমার এই সামান্য গুকাজের জন্য আমাকে এভাবে হেনেস্তা করা হচ্ছে। আর যান কোথায় দেখবেন অনলাইনে আপনার হাজার হাজার অনুসারিরা সেই ছবির মাধ্যমে আপনার অদূরদর্শী কুকাজকে নো-বেল কমিটির নিকট পর্যন্ত নেয়ার ব্যবস্থা করে দিবে আর আপনি সেই রিপোর্ট নিয়ে দলের হাইকমান্ডের নিকট থেকে গুকাজ কে সুকাজ এর স্বীকৃতি সম্বলিত আপনার নিজের বা অন্য কারো সনদ ফেসবুকে আপলোড দিয়ে বলবেন “মানির মাণ আল্লাহ্ রাখে”। ও আরেকটা পরামর্শ হজ্জের মৌসুম হলে হজ্বটা সেরে আসতে পারেন কারন এতে আলহাজ্ব এর সাথে সাথে নমিনেশন পাওয়াটাও সুদৃঢ় হবে কারন অলরেডি গুকাজে পারদর্শিতার জন্য আপনি সকলের চেয়ে একধাপ আগিয়ে।
বিদ্রঃ আপনি আওয়ামীলীগের পক্ষের হলে আপনার জন্য এক বালতি সমবেদনা। কারন দল ক্ষমতা থেকে নামা না পর্যন্ত এই সুবর্ণ সুযোগ আপনার হাত ছাড়াই রয়ে যাবে। ☹