somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরবের বেদুঈন, সুক তালাতা এবং হেরিটেজ মিউজিয়াম-৩ (আরব ডায়েরি-৮৮)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১ম পর্ব
২য় পর্ব

বাসায় এসেই ইন্টারনেটে সার্চ দিলাম। ২ টাকার নোটটি কোন একটি প্রতিযোগিতায় সুন্দর নোট হিসাবে প্রথম হয়েছিল। হামুদকে বাংলাদেশের একটি নোটের অর্জনের কথাটিও জানাতে চাচ্ছিলাম। হতে পারে ব্যাপারটি হাস্যকর- আরবের একটি অজপাড়াগাঁয়ের কোন এক প্রাইভেট মিউজিয়ামে বাংলাদেশের একটি নোট থাকলে কিবা আসে যায় ! কিন্তু আমার ভেতরের অনুরণন আমি থামাতে পারিনি।



একটু কষ্ট করতেই নিউজটি পেয়ে যাই। রাশা’র একটি অনলাইন পোর্টালের ভোটাভুটিতে ২ টাকার নোটটি সবচেয়ে সুন্দর নোট হিসাবে বিবেচিত হয়। নিউজটিতো পেলাম, কিন্তু টাকাটি পাব কোথায়? আমার কাছে এখানে কয়েটি নতুন নোট ছিল, কিন্তু কোনভাবেই তা আর খুঁজে পেলাম না। এর আগের শাকিলা’র ক্যাম্পাসের এক ফিলিপেনো নার্সকে ১টি চকচকে নোট দিয়েছিলাম। সে বিভিন্ন দেশের নোট সংগ্রহ করত। শাকিলা তাকে বারেবারে বলে দিয়েছিল- তোমাকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর নোটটি দিচ্ছি।

বাংলাদেশে খোঁজ লাগালাম। শাবিপ্রবি’র এক ছোট ভাই ১ প্যাকেট নোট পাবার কথা জানাল। কিন্তু সে কোনভাবেই নোটগুলো কুরিয়ারে করে ঢাকা পাঠাতে পারল না। আমার শ্যালিকাও বিভিন্নজনের কাছে খোঁজ নিতে থাকল। পুরনো নোট পাওয়া গেলেও, চকচকে নতুন নোট পাওয়া গেলনা।

কিন্তু এখন কি করা যায়? মোশতাক ভাইকে ফোন দিলাম। জানালেন- ওনার কাছে থাকতে পারে। গিয়ে দেখি নোটের বিবর্ণ অবস্থা। স্বত্বত্যাগ করার শর্তে ১ টি নোট নিয়ে আসলাম। পথে মাহমুদ ভাইয়ের সাথে দেখা। তিনি জানালেন ওনার কাছেও থাকতে পারে। মাহমুদ ভাইয়ের কাছে ২ টি নোট পাওয়া গেল-মোশতাক ভাইয়ের নোটের চেয়ে ভালো অবস্থা। যাক কাজ চালানো যাবে।

পরেরদিন হামুদকে ফোন দিলাম-“আজ বিকালে কয়েকজনকে নিয়ে তোমার মিউজিয়ামে আসছি”। হামুদ স্বানন্দে জানাল সে বিকালে অপেক্ষা করবে। বিকালে আমি, মিলন, মোশতাক ভাই ও আলীম ভাই আপন আপন বেটার হাফদেরকে নিয়ে মিউজিয়ামে হাজির হই। প্রথমেই হামুদকে ২ টাকার ২ টি নোট দিয়ে এর বিশেষত্য জানাই। হামুদ তা সাদরে গ্রহন করে।


হামুদকে দেয়া নোট দুটি এবং বর্ণনা

সেদিন ঠিকমতো দেখতে পারিনি, আজ দেখলাম মিউজিয়ামটি ছোট হলেও বিভিন্ন কালেকশনে তা সমৃদ্ধ। বিভিন্ন প্রাচীন আরবী বই, পারসিয়ান জিনিপত্র, মোঘলদের তরবারি/ ছুরি, নেপোলিয়ানের ব্যবহৃত চায়ের সেট, হিটলারের নাজি বাহিনীর মেডেল সহ আরো অনেক কিছুই সাজানো আছে। হামুদ আমাদেরকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখায়। তার কাছে প্রাচীন কয়েকটি গ্রামোফোনও ছিল। ভেবেছিলাম হয়তো নষ্ট, কিন্তু হামুদ সেগুলোতে রেকর্ড বাজিয়ে শোনাল। সুরের ঝংকারে কয়েকশত বছর পেছনে চলে গেলাম।








মোঘল তরবারী








নাজি মেডেল


নেপোলিয়ানের ব্যবহৃত চায়ের সেটের একাংশ

হামুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পাশের বিল্ডিং এ গেলাম। চমৎকার সাজানো গোছানো। সেখানে এন্টিক জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। মোশতাকভাই একটি পাথর বসানো লকেট কিনলেন। একটি রুমে দেখলাম বিভিন্ন পেইন্টিং প্রদর্শিত হচ্ছে। আরবের মেয়েদের আঁকার হাত দারূণ। মুগ্ধ হতেই হবে, কিন্তু তাদের তেমন প্রচারণা নেই। তারা এগুলো নিজেদের আনন্দের জন্য করে। শাকিলা একদিন বলেছিল, তার কয়েকজন স্টুডেন্ট নাকি এমন কিছু ছবি ক্যাম্পাসে প্রদর্শন করেছিল যা দেখে সে থ হয়ে গিয়েছিল।







সেখান থেকে আমরা সবাই চলে যাই আবহা’র কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। অনেক ফ্যামিলি সেখানে ছিল। বাচ্চারা খেলছিল, কেউবা বারবিকিউ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। শাকিলার তৈরি চটপটি খেয়ে, অলস আড্ডা দিয়ে আমরা বাসার পথ ধরি।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩২
১৫টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×