somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোথায় আছেন হারিছ চৌধুরী !

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ছিলেন তিনি। সরকারের প্রশাসনে তার খবরদারিতে রীতিমতো অতিষ্ঠ ছিলেন কর্মকর্তারা। নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিতে তার কথাই ছিল যেন শেষ কথা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডেও ছিল তার অযাচিত হস্তক্ষেপ। এতকিছুর পরও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হওয়ায় সরকার ও দলের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিরাও তাকে ‘ম্যানেজ’ করে চলতেন। আলোচিত-সমালোচিত সেই তিনি হচ্ছেন হারিছ চৌধুরী। যাকে রাজনৈতিক সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া মস্তবড় ভুল ছিল বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে বিভিন্ন সময় এ কথা বলেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির দুরাবস্থার পেছনে হারিছ চৌধুরীও দায়ী বলে মনে করেন খালেদা জিয়া। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি সরকার ও দলে নিজেকে যেভাবে পরাক্রমশালী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন তা পরবর্তীতে বিএনপির জন্য কাল হয়েছিল বলে মনে করেন তিনি। খালেদা জিয়া তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে বিভিন্ন সময় বলেছেন, হারিছ চৌধুরীকে রাজনৈতিক সচিব করার সিদ্ধান্ত ছিল বড় ধরনের ভুল। তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য এক-এগারোর সময় বিএনপিকে চরম বেকায়দায় পড়তে হয়েছিল বলেও মনে করেন তিনি।
এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর বিএনপির রাজনীতি থেকে অনেকটা হারিয়ে যান হারিছ চৌধুরী। এক সময় হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় দেশ থেকে পালিয়ে যান তিনি। প্রথমে সিলেট সংলগ্ন ভারতের করিমগঞ্জ জেলায় অবস্থান করেন। দেশে ফেরার সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন ২০০১ সালের পর বিএনপি রাজনীতিতে রাতারাতি প্রভাবশালী হয়ে ওঠা ওই নেতা। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসলে তার পক্ষে আর দেশে ফেরার সম্ভব হয়নি। ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন পলাতক সন্ত্রাসী আটকের পর্ব সেখানে আর নিজেকে নিরাপদ মনে করেননি হারিছ চৌধুরী। তাই অনেকটা নিরুপায় হয়েই হতাশ হারিছ চৌধুরী মালয়েশিয়ায় চলে যান। সেখানে আগে থেকে পলাতক সাবেক বিতর্কিত কূটনীতিক খায়রুজ্জামান নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
মাঠের রাজনীতি ও নেতাকর্মীদের অনেকটা অপরিচিত হারিছ চৌধুরী ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব-১ হিসাবে নিয়োগ পেয়ে চমক দেখান। একটি বিশেষ ভবনের কর্তাদের আশীর্বাদে সে সময় দল ও সরকারের গুরম্নত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পান তিনি। জোট সরকারের পাঁচ বছরের শাসনামলে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি হারিছ চৌধুরীকে। খালেদা জিয়া ও হাওয়া ভবনের অতিশয় আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে বিপুল ক্ষমতা করায়ত্ত করেছিলেন তিনি। ক্ষমতার নির্বিচার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে তিনি শত শত কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাড়িতে পুষতেন বন থেকে আনা হরিণ। আর ক্ষমতার সোনার হরিণ হাতের মুঠোয় নিয়ে দেশ-বিদেশে নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন হারিছ চৌধুরী।
সূত্র জানায়, শুধু অনিয়ম, দুর্নীতি আর ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহারেও ক্ষান্ত ছিলেন না তিনি। পর্দার আড়ালে থেকে অনেক অঘটনের সঙ্গেই সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন হারিছ চৌধুরী। আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডে সুষ্ঠু বিচারের পথে বাধা সৃষ্টি করতে তিনি তৎপর ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। জোট সরকারের পাঁচ বছরে অর্থের বিনিময়ে চাকরি, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন হারিছ চৌধুরী। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে গুলশানে নামে-বেনামে একাধিক বাড়ি, কমপক্ষে পাঁচটি অভিজাত ফ্ল্যাট, লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়ায় একাধিক বাড়ি এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক হয়েছেন। শুধু নিজেই নয়, একাধিক আত্মীয়স্বজনকেও কোটিপতি বানিয়ে দিয়েছিলেন হারিছ চৌধুরী। ক্ষমতার সীমাহীন চর্চার কারণে বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। দুদকের দায়ের করা মামলায় তৎকালীন বিশেষ জজ আদালতের প্রথম রায়ে ২০০৭ সালের ২১ মে হারিছ চৌধুরীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু আরও তার সন্ধান বের করতে পারেনি কেউই।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×