স্কুলের বাঁধরামী নিয়ে অনেক গুলো পোষ্ট করে ব্লগার ভাইদের জিন্দেগী মনে হয় তামা করে ফেলছি।তামা যখন করেই ফেলছি, তাই জাতির বাবার দোয়া

নিয়ে আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে বাঁধরামী কথন কে ক্ষেন্ত দিয়ে আপনাদের তামা থেকে আরো একধাপ উন্নতি কল্পে তামা থেকে শিশা বানিয়ে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
যারা এই সিরিজের আগের পোষ্ট গুলো না দেখে নিজেকে ধন্য করেন নাই

, আরেকজন দেখে ধন্য হওয়ার আগে আপনি তারাতারি গিয়ে দেখে ধন্য হয়ে আসুন

।
প্রাইমারী স্কুলের স্মৃতি কথন-১ স্কুলের বাদঁরামী কথন-২ ঘটনা প্রবাহ-৫নিচের শ্রেনী গুলোতে অনেক ইতিহাস রচনা করিয়া শেষ র্পযন্ত ৩য় কি ৪র্থ শ্রেনীতে উঠিয়াছি। সাথে সাথে অনেক গুলো বালিকা ও আমাদিগের মায়া ত্যাগ করিতে না পারিয়া একি শ্রেনীতে উঠিয়া আসিলো

। বালিকাদের কচি কোকিলা কন্ঠের ডাক শুনিয়া কখনো কখনো আমাদিগের বালক মনের ভিতর লুলীয় ভাবের উদ্র্রেগ হইতো

। রোজী নামক একটি বালিকার বধন খানি দেখিয়া অনেকেই আংশিক বিমোহিত থাকিতো। একদা গুরুজী(স্যার) আসিয়া আমাদিগকে পাঠ্যদানে মনোনিবেশ করিলেন। কিন্তু ক্রিয়ক্ষন পরে সবাই আবিষ্কার করিলো শ্রেণীকক্ষের অভ্যন্তরে টয়লেট নামক দামী পারপিউমটির মৌ মৌ গন্ধ বাতাসে দৌঁড়িয়ে বেড়াইতেছে

। কে এহেন কর্ম সাধন করিয়াছে তাহার উৎস সাধনে বালকদিগের চক্ষুদ্বয় যখন শ্রেণীময় ঘুরাঘুরি করিতেছে

, তখন গুরুজী ব্যাপারটা বুঝিতে পারিয়া সবাইকে তাহার বেঞ্চ ছাড়িয়া উঠে দাঁড়ানোর হুলিয়া জারি করিলেন। গুরুজীর উঠে দাঁড়ানোর নির্দেশ পাইয়া সবাই তাহার বেঞ্চ ছাড়িয়া উঠিয়া দাঁড়াইলো

। কিন্তু কি এক অজানা রহস্য রচনা করিয়া রোজী নামক সুন্দর বধনের বালিকাটি না দাঁড়িয়ে তাহার বেঞ্চএর সাথে গভীর বন্ধুত্ব স্থাপন করিয়া সে বসিয়া রহিলো

। আর কাহারো বুঝতে বাকি রহিলো না টয়লেট নামক দামী পারপিউমটি কাহার নিকট হইতে আসিতেছিলো

। এবং কেন সে তাহার বেঞ্চ এর সাথে গভীর বন্ধুত্ব স্থাপন করিয়া বসিয়াছিলো

। গুরুজী রনে হুঙ্কার ছাড়িয়া বালিকাটিকে শ্রেণী কক্ষ হইতে বের করিয়া তাহাকে তাহার বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। আর আমাদের বালকদিগের প্রতি অগ্নি মূর্তি ধারন করিয়া

বলিয়া উঠিলেন "ওহে ছোড়া ছোকড়ার দল তারা তারি টেবিলটা বাহির করিয়া মাঠের র্পাশ্বে ড়োবাটার নিকট নিয়া যা"। আমরা গুরুজীর অগ্নিমূর্তি দেখিয়া

কালবিলম্ব না করিয়া নিজের নাকমুখ চাপিয়া ধরিয়া জো হুকুম জাঁহাপনা বলিয়া টেবিলটা ধরিয়া ড়োবার নিকট দৌড় দিলাম

। টেবিলটা রাখিয়া একটু ভালা বায়ুর ঘ্রান নেয়ার জন্য

যখনই অন্য দিকে প্রস্থান করিবার মনস্থির করিতেছি, তখনই গুরুজী আসিয়া আবার হুঙ্কার ছাড়িলেন

"কই যাস হাঁদারামের দল

তারাতারি টেবিলটা পরিষ্কার করিয়া নে"। গুরুজীর শক্ত হাতের বেতের বাড়ির কথা মনের ভিতর উদ্রেগ হওয়া মাত্রই


আবার নাক মুখ চাপিয়া ধরিয়া আমরা বালক গুলির কোমল হাতের পরম মমতায় টেবিল টি সর্ম্পূন রুপে ধৌঁত করিলাম। আর সবাই মিলে রোজী নামক মেয়েটির চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করিয়া ছাড়িলাম


।
এই রকম ক্রিয়া সম্পাদনের কাজ আমাদের ওই স্কুলে আরো একাদিক বার কৃতিত্বের সহিত সম্পাদন হয়েছিলো

। অবশ্য আমাদের সুন্দর বধনের রোজী ওই একবারই ছিলো, ২য় বার কার্য সম্পাদনের সাহস সে যোগাড় করিতে পারে নাই

।
ঘটনা প্রবাহ-৬আগেই উল্লেখ করেছি আমাদের স্কুলের মাঠের পার্শ্বে একটা ড়োবা ছিলো আর ওই ড়োবার পার্শ্বে ছিলো একটা তালগাছ। মাঝে মাঝে স্কুল শিক্ষকরা "ওই দেখা যায় তালগাছ" কবিতাটি পড়ানোর সময় বেচারা এই তালগাছটিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাতো। অবশ্য স্যারের বুড়ো আঙ্গুল দেখানোতে তালগাছটি খুশি হতো কিনা জানি না, তবে আমরা অনেক বেশী খুশি হতাম

। হুম. আপনারা যারা ভাবতেছেন আমরা বাচ্চরা তালগাছটি দেখে খুশি হতাম তারা একটা ভুল করে ফেলছেন

। আসলে আমরা ওই তালগাছ দেখে খুশি হতাম না, খুশি হতাম তালগাছের উপরের দিকে তাকিয়ে। যখন দেখতাম অনেক গুলো তাল স্যারের বুড়ো আঙ্গুলের জবাবে আমাদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আবেদন মাখা নয়নে

গাছের সাথে ঝুলে আছে। সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবে চলছিলো কিন্তু বিপত্তি বাধলো যখন তালগুলো পেকে গাছ থেকে ঝরা শুরু করলো। তখন আমাদের বাংলা ছবি "মন বসে না পড়ার টেবিলে"

নায়ক নায়িকাদের মতো অবস্থা। শয়নে স্বপনে আর জাগরনে শুধু তালগাছ থেকে তাল পড়ার স্বপ্ন। হয়তো স্যার ক্লাসের নির্দিষ্ট টাইমের মাঝ বরাবর আছেন, আর তখনই যদি বেরসিক তাল গাছ থেকে ঝরে পড়তো, তাহলে যে ছাত্র গুলো ক্লাসের দরজার পাশে বসতো ওরা স্যার কে ক্লাসে রেখেই দিক বেদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে এক দৌড়ে নিজেকে ড়োবার ভিতরে আবিষ্কার করতো। আর যে তালটি ধরতে পারতো সেই হতো ওই দিনের যুদ্ধ জয়ী

। তখন তার সে কি আনন্দ


। আর যুদ্ধে পরাজিতদের অবস্থা ২ দিকেই খারাপ হতো, এক স্যারের বেতের বাডি

, আবার তাল টা ও পাইলো না


।
আমার প্রাইমারি স্কুলের এই স্মৃতি গুলো আমাকে মাঝে মাঝে হাসায়

আবার মাঝে মাঝে মন খারাপ করায়

। ওই স্কুলের কিছু বন্ধু এখন ভালো পজিশনে আছে, কিছু জীবনের সাথে সংগ্রাম করতেছে নিয়মিত ভাবে

।
আর মেয়ে গুলো সবাই রান্না ঘরের চুলা আর হাড়ি-পাতিল

, ছেলে সন্তান নিয়ে ব্যাস্ত।
আমার আগের ২ টা পোষ্টের লিংক:
প্রাইমারী স্কুলের স্মৃতি কথন-১ স্কুলের বাদঁরামী কথন-২