শিশু বয়সে কে কি রকম ছিলাম সেটা বলতে বললে, আমি নিশ্চিত অনেকে অনেক ধ্যান মগ্ন হলেও সঠিক উত্তর টি আসতে অনেক কষ্ট হবে। আর যখন অনেক গুলো উষ্ঠা খেয়ে শিশুবেলা পার হয়ে আরেকটু বড় হয়ে প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি হই, তখন ওই প্রাইমারী বেলার অনেক স্মৃতি হয়তো আমাদের এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়

। সেই রকম কিছু খন্ড খন্ড ঘটনা (সত্য ঘটনা) নিয়ে আমার পোষ্ট টি সাজানোর চেষ্টা করেছি।
ঘটনা প্রবাহ ১:
গ্রামের সরকারী প্রাইমারী স্কুলের ক্লাশ টু কি থ্রিতে পড়ি। আমার সাথে আমার ছেলে কাজিন ও পড়তো একি ক্লাসে। আমি খুব ভালো ছাত্র না হলেও প্রত্যেক বার ই পরীক্ষা দেয়ার সময় সে আমার পাশে বসে

। ছোটবেলায় কি এক কারনে হয়তো আমাকে চকলেট দেয়নি বলে

একবার একটা পরীক্ষায় তাকে আমার পাশে না বসিয়ে আমি অন্য জায়গায় বসলাম

। স্যার যখন ক্লাসে এসে লিখার জন্য খাতা দেয়া শুরু করলো আমার ওই কাজিন টা শুরু করে দিল ব্যা ব্যা কান্না

স্যার জিজ্ঞাসা করলো কি হইছে...?? পরে আরেকজন উত্তর দিল আমি নাকি তাকে দেখাবো না বলে, সে কান্নাকাটি করতেছে

।
আমার ওই কাজিন এখন সৌদি আরবে আছে, শুনলাম নিজের দোকান আছে এবং সে নাকি কম্পু মিস্ত্রি ওইখানে।
ঘটনা প্রবাহ ২:
আমাদের সব গুলো ক্লাসের ফাষ্ট বয় তার ঢাক নাম ছিল
অপু। সে আমার সেই ল্যাংটা বেলার সময় থেকে
জানে জিগার দোস্ত

। আমার এই জানে জিগার দোস্ত পরীক্ষার দিন থেকে আমার সাথে এবং আরো কয়েক জনের সাথে যত দিন পরীক্ষা চলতো ততদিন আড়ি দিত, মানে কথা বলতো না

। আর এর পিছনে অজুহাত ছিলো তার সাথে তখন কথা বললে আমাদের কে নাকি পরীক্ষার সময় দেখানো লাগবে, আর দেখাবে না বলেই পরীক্ষার দিন গুলোতে সে কথা বলবে না

। একবার পরীক্ষা চলার সময় স্যার আমাকে সিট চেন্জ করে জানে জিগার দোস্ত এর হলে নিয়ে গেল। আর তখনই আমার দোস্ত বলে উঠলো আজকে আমরা কথা বলবো কারন দুইজন দেখাদেখি করে লিখলে নাকি আরো ভালো লিখতে পারবো । দেখেন ছোট বেলায় স্বার্থপর কাকে বলে

।
এখন আমার এই দোস্ত সিলেট মেড়িকেল কলেজ থেকে
এমবিবিএস পাশ করে ডাক্তার হয়ে গেছে

।
ঘটনা প্রবাহ ৩:
এটা মনে হয় সবচেয়ে মজার ঘটনা গুলোর মধ্যে অন্যতম। আপনারা যারা গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে পড়াশুনা করেছেন তারা ভালো করেই জানেন কিছু স্টুডেন্ট প্রায় সময়ই স্কুল ফাঁকি দিত, স্যারের র্নিদেশে আমরা কয়েকজন মিলে স্কুলের টিফিন পিরিয়ড়ে যারা যারা স্কুল ফাঁকি দিত তাদের ধরে নিয়ে আসতে তাদের বাড়ি বাড়ি যেতাম। যদি কোন দিন ওরা আমাদের তাদের বাড়ির সামনে দেখতো তাহলেই বুঝে ফেলতো আমরা কেন আসতেছি, আর আমাদের দেখা মাত্রই উসাইন বোল্টের মতো ১০০ মাইল বেগে দৌড়াইতো

। আর আমরাও ওর পিছনে পিছনে ৯৯ মাইল বেগে দৌড়াইতাম

। মাঝে মাঝে ধরে স্কুলে নিয়ে আসতাম আবার মাঝে মাঝে ওদের দৌড়ের গতির কাছে হার মেনে ওয়াক আউট করতাম :> :> । এই রকম একদিন
সোহাগ নামের একটা ছেলে কে ধরতে স্ব দল বলে তাদের বাড়ীর উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। দূর থেকে ও আমাদের দেখা মাত্রই সেই বোল্টের মতো দৌড়ানি শুরু করলো, আমরা ও পিছু পিছু ধাওয়া করতে লাগলাম

। অনেক ক্ষন দৌড়ানোর পর সামনে একটা রাস্তার বাঁক ছিলো, সে রাস্তার বাঁক টি আগে পার হয়ে গেল আমরা একটু পরে পার হলাম, পার হয়ে দেখি সে পুরো গায়েব হয়ে গেছে

, আমরা অনেক খোঁজা খুঁজি করেও তাকে আর পেলাম না। পরে রনে ক্ষান্ত দিয়ে আমরা আবার স্কুলে চলে গেলাম

। পরের দিন তার সাথে দেখা হওয়া মাত্রই জিজ্ঞাসা করলাম, কালকে তোকে এতো খোঁজার পরেও পেলাম না কেন ?? সে বললো ওখানে রাস্তার র্পাশ্বে একটা পাটি পাতা বাগান ছিলো আর ওই বাগানের মধ্যে কিছু সুপারি গাছ আছে, আমি ওই বাগানের মধ্যে ঢুকে একটা সুপারি গাছের আগায় উঠে বসে ছিলাম। আর ওখানে বসে তোদের দেখতেছিলাম তোরা কি করিস

। দেখেন ভাই পাজি কাকে বলে ।
বড় হওয়ার পরও আমার এই বন্ধুর সাথে দেখা হলে এই ঘটনার কথা মনে করে অনেক হাসাহাসি করতাম।
আমার এই বন্ধুটি বেশী দূর পড়াশুনা করতে পারেনি, এখন শুনেছি বিদেশে আছে।
প্রথম পাঠ টি এখানে ইস্তফা দিলাম, পরের পোষ্টে আরো কিছু ছোট বেলার লুলীয়


ও বাধঁরামীর


ঘটনা বর্ননা করবো।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:৩৩