আপনার গাড়িতে বন্ধুকে লিফট দিচ্ছেন কুয়েতে? সামনে পুলিশ, আপনি কট, পুলিশ বলল “সাদিকি মমনু” (বন্ধু এলাউড নাই)! জরিমানা গুনলেন ২৫০ দিনার, বাংলাদেশী বাজারে ৭০ হাজার টাকা! গাড়ী নিয়ে গেল থানায়! ছুটাই আনতে হলে “ওয়াস্তা” (লোক) লাগবে, বাংলাদেশী দালাল লাগবে, মাল ছাড়তে হবে, তাইলে গাড়ী সুর সুর করে বেরিয়ে যাবে!

আমরা আরবরা ঘুষ খাইতে জানতাম না, এশিয়ার লোকেরা শিখাইছে কোন কোন কলে ঘুষ বের হয়!

আমরা আবার এতোটা অকৃতজ্ঞ না, এশিয়ার লোকেরা দাসী-বাদী/কাজের মেয়েদের সাথে সেক্স করতে জানতো না, কাটাছেঁড়া সংবিধানের নিয়ম কানুনকে ভয় পাইত, আমরা তাঁদের বলেছি হাতে কিছু নজরানা/মোহরানা ধরিয়ে দিয়ে দাসীদেরও বিছানায় নিতে পারো! সমস্যা কি তুমি মালিক হয়ে দাসীদের বিছানায় নীলে তো উঁচুনিচু মর্যাদা বাড়ে! কিন্তু আমার যে বউ আছে ঘরে? আরে দুর! বউ আছে তো কি হইছে? ওটা মেনেজ করার কায়দা আছে, কানে কানে শুন! ওহ...এত্ত সুবিধা আছে? আমিত জানতামেই না, থেঙ্কু!

যাক, ড্রাইভার কেঁদেকেটে বাবার (অফিসারের) পা ধরে ফেলল, দোহাই আপনার এত টাকা জরিমানা করবেন না, আমি আপনাদের দলের লোক, আপনারা যাকে মানেন উনি আমারও কাণ্ডারি, আমি আপনার ভাই, প্লিজ বাবা আমি খুব গরীব মানুষ এবারের মত ক্ষমা করে দেন! “হাজা গলদ আউয়াল মাররা (এটা আমার প্রথম বারের মত ভুল) বাবা! দুর বেডা গাধা! কিসের বাবা, কিসের ভাই? আমি কারো বাবা নই!

কে শুনে কার কথা! বাবার মুখে ঈদের খুশী! বাঙালী হেনস্থা করতে পারলে বাবা’রা আরও খুশী হয়! বাবায় কয় আমার কি দোষ? আমার উপরে হুকুম জারি আছে! তুই বেডা গরীব মানুষ আমার কি? তোর গাড়িতে লোক দেখলেই তোরে ২৫০ টাকা জরিমানা করে গাড়ী এরেস্ট করতে বলা আছে! আমি হুকুম তালিম করি, সরি বেটা! তোর দেশেও তো হুকুমের জোরে ডাইরেক্ট এনকাউনটার করে মানুষ মাইরা ফালায় বাছবিচার ছাড়াই, কথা বলতে অনুমতি নিতে হয়, সরকারের পাছার গন্ধ টোকাইলে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা, জনগণের কথা বিবেচনা না করে চালের দাম ৭০ টাকা মেনে নিয়েছে সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-রংপুরের হিন্দু বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছে তোগো ৭৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বের চেতনা, সাতক্ষীরায় শত শত মানব বসতী বুল ডোজার দিয়ে গুরিয়ে দিয়েছে তোগো মানবতাবাদী চেতনা! শিতালক্ষায় ৭ লাশের স্বঘোষিত খুনিরা শার্টপ্যান্ট ইন করে মাথায় জেল মাইরা কোর্টে হাজিরা দেয়! তোদের মহান নেতার স্বঘোষিত খুনিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের এম্বাসেডর হয়, স্বঘোষিত রাজাকার বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে তোদের মহান সংসদে ভাষণ দেয়!, তোদের মহান নেতার খুনিদের সাহায্যকারীরা এখনও মন্ত্রণালয় সামাল দিচ্ছে!, রাজাকার যদি আত্মীয় স্বজন হয়ে যায় বিচার হয় না!, গণতন্ত্রের জন্য শহীদ নূর হোসেনের খুনিরা ২০১৭ সালেও টপ লেবেলের আমলা!, তোগো দেশের হাজার হাজার মুসলিম জনগণ বিধর্মী, ইহুদী, নাচারাকে গালি দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে আবার তাঁদের দেশের ডিভি ভিসার গ্রিন কার্ডের জন্য লাইন ধরে,! তোগো এত চেতনা, এত আবেগ ক্যারে?

ঃ জি বাবা, ইন্তে কাল্লাম মিয়া মিয়া (আপনি সঠিক বলেছেন), আমরা নতুন গ্রহের অন্ধকার এলাকার মানুষ বাবা! এবারকার মত আমার ২৫০ দিনার জরিমানা মাফ করেন বাবা!

ঃ দুর বেটা! তুই নাছোড় বান্দা! আচ্ছা মাফ করতে পারি, আমারে একটা গল্প শুনাতে হবে! পারবি?

ঃ জি পারুম বাবা, পারুম!

ঃ তাইলে শুরু কর!

আমার আব্বায় একটা গল্প শুনাইছে এমন, এক দেশের নাম ছিল “কেপলার টুটু বি”! ঐ দেশ পৃথিবীর অন্য সভ্য দেশ থেকে ৬০০ আলোক বর্ষ দূরে ছিল! সভ্যতার আলো এখনো নাকি পৌঁছায়নি সেখানে! ঐ দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়া সেখানকার জীন ভুতও নাকি মারামারি করে,! আচ্ছা যাই হোক, তো সে দেশের অ্যস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে একদিন এক ভুত মারার গল্প শুনলাম, ঠিক এই রকম...... প্রিয় দেশবাসী যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বৈ মিথ্যা বলিব না!

‘গত রাতে আমরা একটা শয়তান ধরে ফেলি, দিনের আলোয় কেউ শয়তানকে দেখে ফেলবে বিধায় রাতের আঁধারেই শয়তানের হাত-পা, চোখ, পিঠমোড়া বাইন্ধা মন্ত্র উদ্ধারে বের হই, কিন্তু শয়তানের বন্ধুরা আগে থেকেই রাস্তায় আব্রাহামট্যাংক–মেশিনগান-মর্টার, এফ সিক্সটিন জঙ্গিবিমান লইয়া ওৎপেতে ছিল! তাঁরা আমাগো দেইখাই আমাদের দুর্ধর্ষ প্রশিক্ষিত প্রহরীদের উপর অতর্কিত হামলা করলে আমরাও আঁশপাশ থেকে কুড়িয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করি! এক পর্যায়ে আমাগো জেট বিমানের বোনাট ভেদ করে আমাদের আট-দশজন দুর্ধর্ষ পাইলটের শরীর অতিক্রম করিয়া ‘শয়তান আসামীর’ বুকের ডান পাশে নিখুঁতভাবে ট্যাঙ্কের গোলা লাগে! একপর্যায়ে সব কিছু শান্ত হয়ে গেলে আমরা হারিকেন দিয়ে খুঁজে শয়তান আসামীকে আধামৃত অবস্থায় পাই, পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার পুরাই মৃত ঘোষণা করে!

ঃ হা হা হা... হি হি হি, এআল্লাহ্‌ হাজ্জি, সাক্কার, সাক্কার! ইন্তে নফসো মিস্টার বিন! হাজা বিলাত মাল ইন্তে? আকিদ?

ঃ এ বাবা!

ঃ মালিশ হাজ্জি, খোদ সাইয়ারা, খোদ ফুলুস...... রো বাবা, রো! এটাই আমার জীবনের শুনা সেরা গল্প, তোকে মাফ করে দিলাম।