'সুদ' নামক বস্তুটির ভয়াবহ তান্ডবলীলা-১ এর পরঃ
০৯. সুদের বহুমাত্রিক ক্ষতিঃ
সুদের ক্ষতি বহুমাত্রিক। এর আগে পবিত্র কোরআনের আয়াতে আল্লাহপাক সুদকে 'অত্যাচার' হিসেবে ঘোষনা করেছেন আবার পাশাপাশি বলেছেন যে সুদ ছাড়বেনা, সে যাতে আল্লাহর সাথে 'যুদ্ধ' করার জন্য প্রস্তুত থাকে। একটু ভাল ভাবে লক্ষ্য করুন। কার সাথে আপনাকে যুদ্ধ করার কথা বলা হচ্ছে? এই ভূমন্ডলের অধিপতি, সারা জাহানের পালনকর্তা, সর্ব জীবের আহারের জোগানদাতা আল্লাহর বিরুদ্ধে? এত কঠোর কেন আল্লাহ রব্বুল আ'লামীন এই একটি বস্তুর বিরুদ্ধে?
ভুলে ভরা এই পূজিঁবাদী অর্থব্যবস্থার পরতে পরতে মানুষের আহাজারির নোনা জল। এই অর্থব্যবস্থার পায়ে পায়ে মানুষের জমে যাওয়া রক্তের খয়েরি-কালো দাগ। বাতাসে ভেসে আসে শুধু ক্ষিধায় ছটফট করতে থাকা এই ধরাধামের ভাগ্যহীন মানুষের করুন মাতম। এটি এমন এক ঘৃণ্য অর্থব্যবস্থা যা মানুষকে শেখায় 'বাজারে দাম ধরে রাখার জন্য যদি তোমার কোটি কোটি মেট্রিকটন গম, যব, ভুট্টা সমুদ্রের পানিতে ফেলে দিতে হয়, তবে তুমি তা-ই করবে'। একটু ভাল করে যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন যে আজ পৃথিবীর মানুষ সবচেয়ে বেশী 'অসহায়' অবস্থায় নিপাতিত হয় কখন? কোন কোন ব্যাপারে আপনি সবচেয়ে বেশী 'অসহায়'? যখন আপনি 'রোগ' আক্রান্ত হন তখন। যখন 'দ্রব্যমূল্যের' ঊর্দ্ধগতি কারনে চোখে সর্ষেফুল দেখেন তখন। আরও অনেক আছে। কিন্তু আপাতত এই দুটির দিকেই মনোনিবেশ করুন! দেখবেন এই দু'টি বিষয় কি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অন্যান্য সকল বিষয়ের সাথ নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে রেখেছে!
লক্ষ্য করুন, উপরে যে দু'টি বিষয়ের কথা বলা হলঃ 'রোগ' এবং 'দ্রব্যমূল্য' তা কিন্তু আপনার দুটি মৌলিক চহিদার অতি মৌলিক বিষয়! অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা যদি প্রত্যেকটি মানুষের জন্মগত অধিকার হয়, তবে রোগাক্রান্ত হলে আপনি যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রাখেন, জীব হিসেবে জীবনটাকে বাঁচিয়ে রাখতে ন্যায্য দামে পণ্য কেনার অধিকার রাখেন। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন, এই পূঁজিবাদী ব্যবস্থায় মানুষের 'অসহায়ত্ব'কে নিয়েই সবচেয়ে বেশী বাণিজ্য হয়। মানুষ যে সব ক্ষেত্রে যত বেশী অসহায়, সেই সব ক্ষেত্রগুলোতে তত বেশী ব্যবসায়, তত বেশী জুয়াচুরি, তত বেশী ঠগবাজী, তত বেশী 'লাভ'। আপনার মা অসুস্থ? ডাক্তার দেখাবেন? কাকে দেখাবেন? ডাক্তার কি সত্যিই চিকিৎসক? নাকি সাক্ষাত যম? রির্পোট লাগবে? কোথায় যাবেন? খরচ কত জানা আছে? আমার পরিচিত এক ভদ্রলোক আছেন। উনি আমাকে বলেছেন, "ভাই বিশ্বাস কইরবেন না। ডায়াগোনস্টিকের ব্যবসায় লাভ আর লাভ। কোন রকমে যদি কষ্টমষ্ট করে একটা দিয়া দিতে পারেন, আর পেছনে ফিরন লাগবোনা। যিমন ধরেন খরচ অইবো ২০ ট্যাকা, বিল করতে ফারবেন ৫০০ ট্যাকা"। দেখেন! কোথায় যাবেন আপনি? আপনার অন্য যে সব মৌলিক চাহিদা রয়েছে (বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা) তার সব গুলোই কিন্তু প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে অর্থের সাথে সম্পর্কিত। যদিও এই প্রবন্ধে আলোচনার বিষয় নয়, তবুও বলি, আয়কর ও ভ্যাট ইসলামের দৃষ্টিতে অনৈতিক। আর তাই হারাম। কেন? অন্য কোন লেখায় তা জানাবো ইনশা-আল্লাহ।
১০.১ বহুমাত্রিক ক্ষতির প্রথম স্তরঃ
এখন প্রশ্ন করি, "বলেনতো, এই যে মানুষের ভেতরে আজ চরম স্বার্থপরতা যার জন্য সে অন্য মানুষের অসহায়ত্বকেও বিবেচনা করতে রাজি নয়। 'অন্য কেউ মরুক নয় বাঁচুক তা আমার দরকার কি?'। 'কার কি হল না হল তা জেনে আমার কি হবে?', ইত্যাদি ইত্যাদি স্বার্থপর চিন্তা ভাবনা, তার কারন কি??? চোখ ছানাবড়া করে লক্ষ্য করুন আমি বলছিঃ 'সুদ’ অবাক হচ্ছেন? সবকিছুই আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ। কিন্তু একটু ধৈর্য ধরে পড়তে হবে যে!
এই সুদ ভিত্তিক পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার পুরোটাই ‘স্বার্থপরতার’ উলঙ্গ চাদরে মোড়া। এ চাদর দিয়ে কিছুই ঢাকা যায় না। বুঝে কিংবা না বুঝে যে চাদরটা গায়ে জড়িয়ে থাকে, তার কাছে মনে হয় তার গায়ে কিছু একটা আছে। আসলে তার সব কিছুই দেখা যায়। কিছুই সে লুকাতে পারে না। পূঁজিবাদী এই ব্যবস্থা যতই চেষ্টা করুক তার ভুলগুলো শোধরাতে, কোন লাভ হবে না। কারণ, শুরুতেই তার মস্ত বড় গলদ রয়ে গেছে যে! এই ‘স্বার্থপরতার’ জন্ম তার অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মৌলিক অনুসিধান্তেইঃ ‘মানুষের অভাব অসীম কিন্তু সম্পদ সীমিত”। আর এই সীমিত সম্পদ দিয়ে মানুষের অসীম অভাব মোচনের কর্মকান্ডের নাম-ই অর্থনীতি। আবারও এক-ই কথা বলতে হয়। আপাতদৃষ্টিতে এই অনুমান সঠিক বলে মনে হলেও তার প্রায়োগিক ভুল অনেক বড় এবং যথাযথ নয়। একটা উদাহরন দিয়ে বুঝা যাক!
ধরুন আপনাকে আমি ৫০০ টাকা (‘সীমিত সম্পদ’) দিয়ে বল্লাম যে এই টাকা দিয়ে আপনাকে খাওয়া দাওয়া হতে শুরু করে যাবতীয় খরচাদির ব্যবস্থা করতে হবে। ধরেই নেয়া হয়েছে যে আপনার ‘অভাব অসীম’। লক্ষ্য করুন, আপনাকে কি কোন সময় বেধে হয়েছে? কত দিন সময় পর্যন্ত আপনাকে এই সীমিত ৫০০ টাকা দিয়ে চলতে হবে? যদি সময়টাও অন্তত জানা থাকত তবে নিজের পরিকল্পনা মাফিক আপনি হয়তো বাজেট করে নিতে পারতেন। তো এখন আপনি কি করবেন? কোন কাজটা করলে আপনি যে সীমিত সম্পদ আছে, তার যথাযথ ব্যবহার করতে পারবেন বলে আপনি মনে করেন? একজন যৌক্তিক-মন সম্পন্ন মানুষ যা করবেন, আপনিও তা-ই করবেনঃ আপনি যথাসম্ভব কম কম খরচ করতে চেষ্টা করবেন যাতে ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে না হয়। তাই না? এখন দেখুন, পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা যে ‘সীমিত সম্পদের’ কথা বলা হয় তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করার মত না!? এখন বলেনতো দেখি, এই যে বলে সম্পদ সীমিত কিন্তু কখনো কি এই সব মাথা মোটা অর্থনীতিবিদরা সম্পদের মোট পরিমান বলতে পারবে? এটাতো সম্ভব না! আমি-তো যা-ও ৫০০ টাকা বলতে পারলাম! তাঁরা সম্পদ সীমিত বলে কিন্তু পরিমান-তো কখনো বলতে পারেনা। তার চেয়েও বড় কথা হল আমরা কতদিন পর্যন্ত এই সীমিত সম্পদের মালিক থাকবো তার নিদৃষ্ট কোন বাধাধরা সময় জানা নেই। যদি জানা থাকত, তাহলে হয়তো তামাম পৃথিবীর মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য একটা ‘গ্লোবাল বাজেট’ থাকত! কিন্তু তার কোন অবকাশ নেই এই অর্থব্যবস্থায়। এই অবস্থায় যৌক্তিক মানুষ হিসেবে আমরা কি করতে পারি? আমরা পারি এমন একটা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যাতে আমাদের সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু এই ভ্রান্ত অর্থব্যবস্থা তো তা করেই না বরং মানুষের মনে এই ধারণা পোক্ত করে দিচ্ছে যে তার ‘অভাব অসীম’!
অর্থাৎ, সমস্যা সে তৈরী করছে দুই আঙ্গিকেঃ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের ধারনা তার নেই পাশাপাশি মানুষকে মানসিক দিক থেকে অক্ষম করে দিচ্ছে এই বলে যে তার ‘অভাব অসীম’, তাই তাকে অসীম অভাব পূরণের নিমিত্তে যা করার দরকার তা-ই করতে হবে। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যায় অন্যায়ের বাছ-বিচার তার কাছ মোটেও প্রধান্য পায় না। আর তাই মদ, জুয়া, পতিতাবৃত্তি সরকারি ভাবে বৈধতা পেয়ে যায় অনায়াসে। এভাবেই সমাজে ‘Individualism Concept’ এর গোড়াপত্তন আর ধীরে ধীরে তার ডালপালা গজিয়ে নিরন্তর বেড়ে উঠা। ফল? ফল আর কিছুই না সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধের বিনাশ, অসম প্রতিযোগীতা, জীবন ধারনের জন্য যেটুকু হলেই চলে তার চেয়ে বেশী পাওয়ার প্রবণতা আর তা না পেলে হতাশায় কাতর হয়ে আত্মঘাতি সিধান্তের দিকে ঝুকে যাওয়া। মোদ্দাকথা, সমাজে ‘বিশাল’ আর ‘অসীম চাহিদার’ বিপরীতে ‘না-পাওয়া’ আর্তনাদের জন্ম পাশাপাশি ‘শান্তির’ চির নিদ্রার পথে যাত্রা। এটা কি কোরআনে আল্লাহ কর্তৃক ঘোষিত ‘অত্যাচার’ নয়? আরও ‘অত্যাচারের’ কথা আপনার জানার বাকি আছে!
নিজের ‘অভাব’ মোচন, নিজের ‘চাহিদার’ যোগান দিতে দিতে সার্বক্ষনিক ভাবে নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে, নিজের বাইরে অন্য কাউকে অগ্রাধিকার দেবার ধারনার মৃত্যু হয় ক্রমাগত। এই ধরনের ঘটনাগুলি আমি যে ভাবে সোজা বাংলায় বলে যাচ্ছি আর আপনি তা পড়ে যাচ্ছেন, ঠিক সেভাবে মানুষের জীবনে ঘটে না। উপরে যে সব উদাহরনগুলো দিলাম কিংবা যে সব কারনগুলো বলা হল তা কিন্তু মানুষ ‘ইচ্ছে করে’ কিংবা এভাবে বলা যায় নিজের ‘বু্দ্ধি খাটিয়ে’ করছে না। বরং এই পূঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার প্রভাবে তা প্রাত্যহিক জীবনে নিজের মনের অজান্তেই এই সব ধ্যান ধারনার জন্ম হচ্ছে আর তার ভেতরে ভাইরাসের মত ক্রমাগত বংশ বিস্তার করে যাচ্ছে। আমার দৃষ্টিতে বর্তমান অর্থনীতির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল এই জায়গাটাতে যে এই অর্থনীতি মানুষের Psychology বিবেচনায় নিতে পারে না। আর কখনো কখনো যদিও তা করার চেষ্টা করে, তা উদ্দেশ্য অর্জনের পথে বিশাল প্রতিবন্ধকতার কারন হয়ে দাঁড়ায় নিতান্তই অসম চিন্তা আর ধ্যান ধারনার কারনে। যে অর্থনীতিবিদ নতুন নতুন ‘Assumptions’ এর জন্ম দেন, তিনি নিজেও এই সীমারেখা থেকে বাহিরে নন। তাঁর নিজের ভেতরেও ‘সীমিত সম্পদ’ আর ‘অসীম অভাব’ এর প্রভাব বিদ্যমান (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা জনাব আকবর আলী খান সাহেবের সুপাঠ্য ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ বইটি পড়লে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন। উনি সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষকের একটি গবেষনার কথা উল্লেখ করেছেন। ওই গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের উপরই; এটা বের করার জন্য যে অর্থনীতি যারা পড়ে তারা কতটুকু স্বার্থপর? গবেষণার ফলাফল আপনাদের জানা উচিত বলে মনে করি। তাই বলছি। ফলাফলে দেখা গেল যে যারা অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করে তারা অন্য সব বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের তুলনায় অধিক মাত্রায় স্বার্থপর)। আর তাই এই সব অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে অন্য কোন বিকল্প তো আসবে না! অরুপ রতন চৌধুরি যখন বলেন যে, “ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর” তখন এটা ভাবাটা খুবই যুক্তিযুক্ত যে এর পরে উনি যে সব কথা বলবেন তার একটিও ‘ধূমপান ক্ষতিকর নয়’ এর অনুকূলে যাবে না। তাই এই সব অর্থনীতিবিদদের আশা বাদ দিতে হবে।
খেয়ালে রাখবেন, পূঁজিবাদী অর্থব্যাবস্থার জন্ম হয় ইতিহাসের ঘটনা প্রবাহ ও তার কার্যকারণের প্রাসঙ্গিক ফলাফল রুপে। আর তাই এই ব্যবস্থায় সুগভীর চিন্তা চেতনার বড়ই অভাব। অনেক মোটা মোটা বই আছে, অনেক জ্ঞানীগুনি(!) মানুষ আছেন, অনেক দামি দামি ডিগ্রী আছে; শুধু নাই নৈতিকতা, আদর্শিক অবস্থান, যথাযথ বন্টন ব্যবস্থা, শান্তির অমিয় ধারা! এই অর্থব্যবস্থা নিজেই সমস্যা তৈরী করে আবার নিজেই সমাধানের পথ খোঁজ করে। তার পূর্বের কাজের কারনে যে সমস্যার যে জন্ম নিবে তা সে নিজেও বুঝতে পারে না। আবারো বলতে হয়ে, মানুষের জ্ঞান সীমিত। তুলনামূলকভাবে, সমাজতন্ত্র এর থেকে কিছুটা উন্নত হলেও মানুষের মৌলিক অনেক বিষয় সমাজতন্ত্র অগ্রাহ্য করে বিধায় এ ব্যবস্থাও টিকে থাকেনা। ইতিহাস বারে বারে এর সাক্ষ্য দিয়ে আসছে।
এখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন চলে আসে যে ‘সুদের’ সাথে তাহলে ‘স্বার্থপরতার’ সম্পর্ক কোথায়? আমি আগেই বলেছি মানুষের জীবনের অনুষঙ্গগুলো এবং এর সাথে সম্পর্কিত চলকগুলো (যে গুলো আবার সরাসরি অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত না কিন্তু পারস্পরিক সামাঞ্জস্যের প্রয়োগের অভাবে অর্থনীতি ও সামগ্রিক ভাবে জীবনকে অসহনীয় করে তোলে) অর্থনীতির গদবাধা সমীকরণে ফেলা যাবে না। এটা সম্ভব নয়। পৃথিবীতে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যে সব চলকগুলো (Variables) কাজ করে সেগুলোকে প্রধানত দু’ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ ১. Quantitative (পরিমানবাচক) ২. Qualitative (গুনবাচক)। যে সব বিষয়াদি পরিমাপ করা যায়, ‘অংকে’ প্রকাশ করা যায়, সেগুলোই পরিমানবাচক চলক। যেমন, মানুষের আয়, ব্যয়, মোট সম্পত্তির পরিমান ইত্যাদি। যেগুলোর অস্তিত্ব আছে কিন্তু সেগুলো অংকে প্রকাশ করা যায় না; ইংরেজিতে বলে Abstract, সেগুলোই গুনবাচক। যেমন, মানুষের শান্তি, বিশ্বাস, আস্থা, পরার্থপরতা ইত্যাদি। অর্থনীতি কখন-ই এই গুনবাচক চলকগুলোকে আয়ত্ত্বে আনতে পারে না। কিন্তু এইগুলো ছাড়া আবার পরিমানবাচক চলকগুলো ঠিক মত কাজ করে না। আর তাই আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, এত সমস্যার কারনেই GDP: Gross Domestic Product (মোট দেশজ উৎপাদন) বিরুদ্ধে শুরু থেকেই অনেক সমালোচনা বিদ্যমান। পশ্চিমা স্বল্প বুদ্ধির লোক দেখানো জ্ঞানীরা আজকাল তাই নতুন সূচকের প্রবর্তন করেছেঃ Happiness Index (সূখ-সূচক)। তারা দেখতে চাচ্ছে বিশ্বের কোন অঞ্চলের মানুষজনেরা বেশী সুখী। এই সব ইংরেজী বলা আহাম্মকরা কবে যে বুঝবে সুখ শান্তির আত্মার বিষয়। বেশী খেতে পারলে, বেশী পরতে পারলে, জীবনযাত্রার মান উন্নত হলেই সুখী হওয়া যায় না। তা না হলে সারা পৃথিবীর মধ্যে জাপানে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশী হবে কেন?
বাকি অংশঃ 'সুদ' নামক বস্তুটির ভয়াবহ তান্ডবলীলা-৩ এ দেখুন
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১১ রাত ৯:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



