আমাকে রওনক কিছু স্বরচিত লেখা দিয়েছিল। যতদূর মনে আছে সেটা তার শেষ লেখা না। আমি খুঁজে পাচ্ছি না একটাও। আগেও দিয়েছিল এবং তারও আগে পরে লেখা কিছু পদ্য গদ্য ।পাঠক হিসেবে আমি ভাল। দেরাজের ভেতর শীর্ষেন্দু, টেবিলে বিনয়, অপলার পাহাড়ি কথন, কৃষণের রোটি কাপড়া.. তারপরও হাতে লেখা কাগজে যা দিয়েছিল আমি পড়েছিলাম। রওনক আমার বন্ধু। বন্ধু বলেই আমাকে গিলতে হতো। উলুখাগড়ার বনের মত তার ছন্নছাড়া লেখা। অবশ্য এটুকু বুঝেছি এটা কোন রমণীকে নিয়ে লেখা। ভালবাসি ভালবাসি দশ লক্ষবার লিখলে কবিতা আর থাকে না।
বাকি যা কিছু বাজে শব্দের সমারোহ। ঢেঁড়স বরবটি সেদ্ধ করে কাগজে লেপে দিলেও তার দিকে তাকাতে ইচ্ছে হয় - কিন্তু রওনক! না, কি বলবো। ভাল না লাগলেও আমাদের বলতে হয় ভাল। অনেকটা আত্মীয় স্বজনের কন্যাদের চেহারা কদাকার বেঢপ হলেও তাদের মুখের উপর অসুন্দরী বলা যায় না।
রওনক মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পুতুলের সহসা মৃত্যুর পর ডাক্তার বলেছিল সে অত্যাধিক ভালবাসতো তার বউকে। আর খুব ভালভাবে ফিরবে না। জগতের রহস্য এমন কেন? আজ কেন যেন রওনকের কবিতা পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে। সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে রওনকের লেখা একটা কবিতা পেলাম না। এরকম তো কতই হয় মানুষ পড়তে দেয়। আমি হু হা করে ফেলে রাখি। রওনক ভাল নেই। আমিও কবিতাকে না পেয়ে ভাল থাকছি না
-
ড্রাফট ১.০
মানুষের মন তারে সব দিয়ে চাও
নগন্য সে ভাবিবে সোনা রূপা টাও
সেধে দিলে ভালবাসা অবজ্ঞাটা পাও
হীরা মোতি মণি মালা নিমেষে উধাও
মানুষেরে কষ্ট দিয়ে ঠেলে দিলে দূরে
পাখি হয়ে লক্ষ মাইলে আসিবে সে উড়ে
সেধে দেয়া সুখে তার তুচ্ছ লেগে যায়
হারানোর পরে সে বক্ষ চাপড়ায়