somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাহেলা হত্যা মামলার নিখোঁজ আলামত ও অন্যান্য দলিল

২০ শে মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে আদালত পাড়ার তুমুল পেজগীমারা সব আদম শন্তানদের ততোধিক পেজগীমেরে চাঞ্চল্যকর রাহেলা হত্যামামলার নথি-পত্রের কপি হাতে আনতে পারলাম। পরম আগ্রহে গত কয়েক দিন দফায় দফায় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কাগজগুলো পড়ে দেখেছি। অনেকে আগ্রহী হবেন এই ভেবে মামলার কপি,চার্জশিট,জব্দ তালিকাসহ কিছু ডকুমেন্ট স্ক্যান করে দিলাম। অবশ্য, যদি পুলিশের হাতের লেখা পড়তে পারেন। ওদের হাতের লেখা দেখছি আমার চেয়েও খারাপ!
কাগজ-পত্র দেখলে নিশ্চিতই আপনি এই দেখে আশ্চর্য হবেন যে, মামলাটিতে পুলিশ কতো দায়সারাভাবে কাজ করেছে! যেমন ধরুন,পুলিশ বাদী এই মামলায় ঘটনার তারিখটিই ভুল উল্লেখ করা হয়েছে। সাভার থানায় ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর এস আই মদন মোহন বণিক বাদী হয়ে দায়ের করা মামলা ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর।এই তারিখে তিনি বেতার মারফত সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এম এইচ হলের পূর্বপার্শ্বের কাঁঠাল গাছের নিচে জঙ্গলের ভিতর গলাকাটা মুমূর্ষু অবস্থায় ২২ বছরের একজন যুবতী পরে আছে দেখে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন বলে এজাহারে জানান।কিন্তু সবাই জানেন,একজন মালী রাহেলার আর্তচিৎকার শুনে রাহেলাকে উদ্ধারের জন্য লোকজন ও পুলিশকে ডাকে। এবং ১৯ আগস্ট রাহেলাকে ধর্ষণ শেষে গলা কেটে ফেলে যায়।তাকে উদ্ধার করা হয় ২২ আগস্ট। পত্র-পত্রিকার রেফারেন্স তাই বলছে। মনে আছে সবার আগে এই রিপোর্টটি ২৩ আগস্ট প্রথম আলোয় ছাপা হয়েছিল। পত্রিকাটির জাবি সংবাদ দাতার পাঠানো খুবই মর্মস্পর্শী এই রিপোর্টটি প্রথম পাতায় সিঙ্গেল কলাম ছাপা হয়েছিল।শিরোনাম ছিল ,আমি মরি নাই-আমাকে বাঁচান!
যাই হোক ,একটা বিষয় আছে ভরসার। তা হলো,পুলিশ একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে রাহেলার মৃত্যুকালিন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে রেখেছে।
এবার যে আলামতগুলো হারিয়ে গেছে বলে মামলার ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়েছে সেগুলোর তালিকা দিয়ে লেখাটি শেষ করতে চাই।

২০০৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা হয়ঃ
ক.১টি পুরাতন রক্তমাখা পাতলা টাইপের আকাশি রঙের ওড়না
খ.১টি পুরাতন রক্ত মাখা পাতলা টাইপের আকাশি রঙের ছেঁড়া কামিজ
গ.১টি পুরাতন সাদা রঙের রক্ত মাখা সুতি টেপ,যাহা কামিজের নিচে পরে।
ঘ.১টি পুরাতন রক্ত মাখা ব্রেসিয়ার
ঙ.১টি ব্লু রঙের জিন্স কাপুড়ের ইলাস্টিক যুক্ত পায়জামা ধরনের মেয়েদের প্যান্ট।

২০০৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মীর মোশাররফ হলের দক্ষিণ -পুর্ব কোনা থেকে সংগ্রহ করা হয়ঃ
ক.১টি পুরাতন ব্যবহৃত টিয়া রঙের কামিজ
খ.১টি টিয়া রঙের ছাপানো ওড়না
গ.১টি টিয়া রঙের টেপ
ঘ.১টি সাদা পুরাতন ব্রেসিয়ার
ঙ.১টি কমলা রঙের শ্যালোয়ার
চ.১টি কালো রঙের মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগ

২০০৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আলামত হিসেবে ধানমন্ডির অনন্যা ভিডিওর দোকান থেকে জব্দ করা হয়ঃ
১টি ভিডিও ক্যাসেট।যাতে আসামী আকাশের বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে লিটন,দেলোয়ার,কবিরের যোগদেয়ার ছবি ছিল।

আলামত হারিয়ে যাওয়া বা কোথায় ওগুলো রাখা হয়েছে এনিয়ে বিভ্রান্তির কারণ মনে হয় কয়েক দফা মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল হওয়া।

এর আগে জানা গিয়েছিল ,তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটির স্বাভাবিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছেন না।

পুলিশ চার্জশিটেই উল্লেখ করেছিল মামলাটি চাঞ্চল্যকর,এটি নিয়ে পত্র-পত্রিকায় ব্যপক লেখালেখি হয়েছে। যদিও মামলাটি নিয়ে এক পর্যায়ে দায়িত্বহীন আচড়ন করে পুলিশ।রাহেলা হত্যামামলার স্থবির অবস্থায় যারা মনঃকষ্টে ভুগছেন,তাদের জন্য একটা সংবাদ ভালো লাগার আছে। তা হলো,হঠাৎ করেই সাভার থানা পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।মনে হয় লিটনকে এরেস্ট করার উদ্যোগ নেবে তারা। এতোদিন কোন খোঁজখবর না নিলেও আদালত থেকে মামলার কাগজ পত্র নিয়েছে আজ।
ধারণা করছি,জাফর স্যারের লেখাটি প্রকাশের পর পুলিশের কানে পানি গেছে।
এই লেখার তথ্য-উপাত্ত,মামলার নথি-পত্র যে কেউ ইচ্ছে করলেই ব্যবহার করতে পারেন। আমাকে জিজ্ঞাসা করার দরকার নেই
রাহেলাকে নিয়ে মানবীর প্রথম লেখাটির লিংক দিলাম Click This Link
রাহেলা হত্যা নিয়ে ওর স্বামী চান মিয়ার পরিবার ও প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন নিয়ে আগে প্রকাশিত একটি লিংক
Click This Link
কেউ ইচ্ছে করলে দেখবেন ।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১২:৫৪
২৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×