somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাহেলা হত্যা মামলার রায় হলো আজ; ধন্যবাদ সামহোয়ার ইন,ধন্যবাদ মানবী

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সাভারের গার্মেন্টস কর্মী রাহেলা আকতার লিমা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হলো আজ। এতে,রাহেলা হত্যা মামলার মূল আসামী লিটনের মৃত্যুদন্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে ৩ আসামীকে। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোস্তফা দেওয়ান এ রায় দেন।
পেছনের ঘটনা: ২০০৪ সালের ২৯ শে আগস্ট রাহেলাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গলে ধর্ষণের পর জবাই করে ফেলে রাখা হয়। ৩৩ দিনের মাথায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় রাহেলা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া মৃত্যুকালিন জবান বন্দিতে রাহেলা তার ধর্ষকদের নাম প্রকাশ করে বিচার দাবী করেছিল। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৪ আসামীকে অভিযুক্ত করে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চার্জগঠন করা হয় ২০০৫ সালের ২৪শে অক্টোবর। রাহেলার স্বামী ও মা এবং জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট, ফরেনসিক পরীক্ষার ডাক্তারসহ আদালতে সাক্ষ্য দেন ২২ জন।
যারা খালাস পেলো অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন আসামী দেলোয়ার, কবির ও ফজলু। উল্লেখ্য,ঘটনার পর থেকেই লিটন পলাতক। দীর্ঘ ৫ বছরেও লিটনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
তার মানে দাড়ালো এই যে,প্রমাণের অভাবে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় থাকা আসামীরা বেকসুর খালাস পেলো আর পলাতক আসামী লিটনের মৃত্যুদন্ড হলো। মনে হয় লিটন না পালালে সেও প্রমান করতে পারতো সেও বেকসুর খালাস পাওয়া উচিত। রাহেলা ধর্ষিত হয়নি, এমন করুণ কোন ঘটনা ঘটেনি এবং রাহেলা মারাও যায়নি! এখন যে দন্ড দেয়া হলো তা কার্যকর হবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। প্রথমত সে পলাতক। ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যাকে গত ৫ বছরে ধরতে পারেনি পুলিশ তাকে আগামী ৫০ বছরেও ধরতে পারবে এমন ভরসা কোথায়? তাছাড়া, উচ্চ আদালতে আপীল কি করবে না লিটনের পরিবার! সব নিশ্চয়ই ঝুলে থাকবে ? আর সরকার বাদী এই মামলায় অন্য আসামীদের বেকসুর খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে এমন আশা না করাই ভালো। পিপি আজ বলেছেন,তারা পর্যালোচনা করে দেখবেন আপীল করা যায় কিনা।
আজ বেকসুর খালাস পেয়ে ৩ আসামী খুশিতে আত্মহারা হয়ে দৌঁড়ে এজলাসের বাইরে চলে আসে ও একে অপরকে জড়িয়ে ধরে!!!

সব মিলিয়ে ভাবটা এমন দায়সারা ফুটলো যে, গরীবের মাইয়া ধর্ষণ কইরা মাইরা ফালাইছে, এমন কি আর ঘটনা!

ধন্যবাদ সামহোয়ার ইন, ধন্যবাদ মানবী
তবু আমি সামহোয়ার ইন ও মানবীকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আসলে শুধু তাদের ধন্যবাদ দিতেই এই লেখাটা । এই রায়ের পর কিছু লেখার ইচ্ছে হচ্ছিল না।
যাই হোক,ধন্যবাদের কারণ, মানবী প্রায় বিস্মৃত এই করুণ ঘটনা বছর দুয়েক আগে এই ব্লগে তুলে ধরেন। ব্লগটির বহু সংখ্যক পাঠক লেখক নৃশংস এই ঘটনা জেনে শিহরিত হন।রাহেলার ঘটনা জানিয়ে মানবীর লেখাটি এর পর অসংখ্য ব্লগার তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে , লেখা লেখি করে, মানব বন্ধন করে ঘটনাটি প্রশাসনের চোখে তুলতে সক্ষম হন। এই হত্যাকান্ড নিয়ে মানবীর অনুরোধে বিখ্যাত লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালও প্রথম আলোতে কলাম লিখেছেন। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম যাই হোক কিছু সংবাদ প্রকাশ করেছে।বিচার চেয়ে সিগনেচার ক্যাম্পেইন হয়েছে । এত স্বাক্ষর করেছেন দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত ১ হাজার ৬৫ জন সচেতন বাংলাদেশী। যে পিটিশনটি পরে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদের বরাবরে জমা দেয়া হয়।

মানবীর লেখাটা প্রকাশের পর ও বিভিন্ন স্তরে অনেকের ভুমিকার পর যখন মামলাটা আবার গতি পায় গত বছরের গোড়ার দিকে। তখন দেখা যায় মামলার নথি পত্র, এমন কি আলামতও গায়েব করে দেয়া হয়েছে। ব্লগারদের অনেকের সক্রিয় ভুমিকায় সেসব প্রয়োজনীয় দলিল ইত্যাদি পুনঃপয়দা করতে বাধ্য হয় পুলিশ।রাহেলাকে নিয়ে ব্লগার কৌশিকের অনুবাদে এই লেখায় সব বিষয় চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে মামলাটির এই অবস্থা যখন ছিল, তখন স্পষ্টতঃই বুঝা যায় এমনি এমনি আরো অনেক নারী নির্যাতন মামলার মতো বিচার তালিকার বাইরেই থাকতো এই মামলাটি। লিটন এখন অন্তত পলাতক আছে,এভাবে সামহোয়ার ইনে না উঠলে সে হয়তো এতো দিনে প্রকাশ্যেই ঘুরতো!

উল্লেখ্য আজ রায় ঘোষনার দিন, রাহেলার মা বা স্বামী কেউ উপস্থিত ছিল না আদালতে। তার মা জানতেনই না আজ রায় হবে। আর রাহেলার মৃত্যুর ৬ মাসের মধ্যেই বিয়ে করে সংসারী তার স্বামী চান মিয়া।

রেফারেন্স: রাহেলা আকতার লিমা হত্যা মামলা এগিয়ে নিতে একজন অসম্ভব পরিশ্রমী ও ভালো মানুষ লাল দরজা র নীরব কাজে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন আগ্রহী যে কেউ।


সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১০ রাত ৩:১৬
৩৫টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×