somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটবেলার সময়কাল ......

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"লজ্জ্বা শরম নেই তোর ?"
- কি করলাম ?
একফালি হাসি দিয়ে পাশের বাড়ির মেঝকাকী ঠিকই চলে যায়। তখন ক্লাস ৫ এ পড়ি। স্নান কততাম সব কিছু খুলে। মা গায়ে পানি দিয়ে দিত। গায়ে সাবান দিয়ে দিত। আর এক ছিল জাল। মাছ মারতে যে জাল বানান হয় , তার নতুন একটা কেটে বানাত মা।

"ইস গায়ে কি লাগছে এসব , শুনি ? সারাদিন খেলা ! "
"আস্তে ঘষা দাও! লাগে তো ! "
"না লাগলে ময়লা যাবে ??"
গায়ের ময়লার তত্ত্ব এই যে ভারসিটি পেরিয়ে গেলাম এখনো খুব একটা ভাল জানিনা। পরিষ্কার করা দরকার তাই করি।

বাবার অত্যন্ত মাছ মারার শখ , কিন্তু মা রাত্রে বেলা এভাবে বেরাতে দেয় না। কারণ একটাই নদীতে কত কিছুই থাকে। বাড়ি যদিও আমাদের নদীর পাশে , তবে নদীতে কোন কারণ ছাড়া কখনো নামতে দিত না। এতটাই কেয়ার।

প্রাইভেট কি জিনিস ৮ এ উঠার আগে বুঝি নি। বুঝবই বা কেমনে ? দাদুর হাতের কড়া মার আর বকুনি খেয়ে খেয়ে পার করলাম ক্লাস ৭। দাদু মারা গেলে হয়ত ১০ম শ্রেনী অব্দি প্রাইভেট শব্দটা মুখে নেয়া হতনা।

একদমই ভাল ছাত্র ছিলাম না বলে নিজের আক্ষেপ তা আজো যায়নি। ভাল ছাত্র হব কিভাবে ? ছাত্র ভাল হতে গেলে তো ব্রেইণ(!) লাগবে। সাথে লাগবে চেষ্টা। আমার চেষ্টা ছিল কিভাবে ভাল ভিডিও আর ফটো তোলা যায়। একটা স্টুডিও আছে মানে ছিল আমাদের , সেখানেই সারা দিন পরে থাকা। এক বাবাকে খুব ভয় করতাম বলে উনি অফিস থেকে বাড়ি আসার আগে দোকান থেকে বাড়ি আসতাম। তবে যাই হোক , এই যে এত বড় বিবাহ অনুপযোগ্য অথচ বেশী বয়সী হয়ে গেছি , এ পরযন্ত সব মিলে বাবা গায়ে তুলেছে মাত্র ৩ বার।
১) একবার লাঠি দিয়ে মার খেয়েছি, কারন_ টাকা দিয়ে ক্রিকেট।
২) ঝাড়ু দিয়ে মার খেয়েছি - কারণ_টাকা দিয়ে ক্রিকেট খেলা !
৩) পাটকাঠির কয়েকটা টুকড়া দিয়ে ভীষণ মার খেয়েছিলাম , সাথে হাসপাতালেও নেয়া লেগেছিল , কারণ ছিল ভয়াবহ! এক সম্মানীয় লোককে (!) রাজাকার বলে গালি দিয়েছিলাম। কারন সে লোক মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা বলে পরিচয় দেয়।
এই আরকি।

সত্যি বলছি , আমার বাবা মায়ের লাভ ম্যারেজ ।বন্ধুমহল বলত আমি নাকি ভাল প্রেমের চিঠি লিখতাম । সাধারণ কবিতা লেখা শুরু আমার প্রথম প্রেমে পড়া ক্লাস ৮ থেকে। এক নিতান্ত সুন্দরী মেয়ের প্রেমে (!) পড়েছিলাম। আমার বন্ধুরা ক্লাস ৫ থেকে মেয়ের পিছনে ঘুরে। অথচ মেয়েদের সাথে এত মেলামেশা করি ! কারন আমার সেই ছোট্ট বেলার কানামাছি , পান্তাভাত , গোল্লাছুট এসব খেলার সাথীরা কিছু কয়েক সমবয়সী বন্ধু আর বেশীরভাগই বান্ধবী গোষ্ঠী। তবে এত মিশা সত্ত্বেও আমার সাথেই পরা মেয়ে রুপা যখন প্রেম করে, আমি তখনও সত্যি সত্যি কমপ্লাইন খেতাম।
অষ্টম শ্রেনীতে যখন স্টুডিওর একমাত্র ভিডিও এডিটর আমি ছিলাম , তখন বিয়ে ,বিয়ের পর কি হয় , ছেলে মেয়ের ভালবাসা এসব নিয়ে জ্ঞান পাই। না এসব জানতে আগে হলে , পরিবেশ অমন চাই। আমার চারিদিকের পরিবেশ আমার বুঝার পর থেকে ৫-৬ বছর অমন ছিল না। এই যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি , কে জানি কার মেয়েকে নিয়ে পালাল , কে অকাজে গিয়ে ধরা পড়ল, বিয় হল , এসব নিয়ে কৌতুহল যেমন বাড়ে তেমন বুঝতেও পারি। ক্লাস ৮ এ সরকারী স্কুলে ভর্তি হই গ্রাম ছেড়ে।
গ্রাম আর শহরের দুরত্ব মাত্র কয়েক কিমিঃ মাত্র। শহরের স্কুল। ভাল ভিডিও গেমস খেলতাম। ১টাকা প্রতি কয়েন। দিন কদিন যেতে না যেতে এক প্রাইভেটে , ম্যাডামের মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম। বন্ধুদের সামনে প্রপোজ ও করেছিলাম। ম্যাডাম জেনে বাবাকে বলল। এরপর আমার গোটা ক্লাস এইট জুড়ে স্কুলে যেতে হয়নি। শুধু প্রাইভেট আর এক্সাম। বাবার ট্রান্সফার হলে নাইনে আমাকে আবার গ্রামে যেতে হয়। সেই যে স্কুল ছেড়েছি আর কোনদিন স্কুলে যেতে হয়নি কেবল পরীক্ষা ছাড়া। গ্রামের স্কুল তার উপর। স্কুল না চিনলেও পাশের খেলার মাঠ ঠিকই চিনত। মার গুলো খেয়েছি না এখানে এসেই। আমার বাবা পাষাণের মত মারতে পারে , আবার ভাত খেয়ে দুদিন পাষাণের মত কাটিয়েও দেয়।
অনেক বছর বাদে শুনলাম ম্যাডামের সেই মেয়ে মেডিকেল পাশ করে বের বাইরে চলে গেছে। বাকীটা থাক ইতিহাস।

জীবনের একটা বড় অভিজ্ঞতা হল- কার্জন হল। এ যেন ইতিহাস রচয়িতা ।
শুধু এতটুকু বলব, কার্জনে আর রেজিষ্ট্রার ভবনে আর যেতে হবে না এটা আমার সুভাগ্যই বটে। উপরওয়ালার কাছে এর জন্য অনেক অনেক কৃতজ্ঞ। আমাকে ঐ পরীক্ষার দিনদুলি পার করিয়ে দেয়ার জন্য। বাকীসব দিনের জন্য ধন্যবাদ।

চাকুরী আমি করব না আগে থেকেই জানি। সে এনার্জি আর পাওয়ার মত ব্রেইন কোন দিনও ছিল না। সিধকাটি আমার ঐ স্টুডিওতেই। এখন দোকানটা বেশ বড়। আগে , মফস্বলে ছিল। এখন শহরে। যায় দিন ভাল , আসে দিন রঙিন। এই হোক জীবন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×