somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই নিয়ে আত্মকথনঃ সাতকাহন(সমরেশ মজুমদার)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আচ্ছা! মনোযোগ দিয়ে বই পড়ার সময় একটি নির্দিষ্ট চরিত্রের সাথে কি আপনি নিজেকে বিলীন করে ফেলেন? মোটেই বাড়িয়ে বলছি না- একটি চরিত্র সে নারী হোক/পুরুষ হোক আমি নিজেকে একেবারেই ঐ চরিত্রে এমনভাবে বুঁদ হয়ে যাই যে, পড়ার সময় এবং পরবর্তী দুই-একদিন নিজেকে আর খুঁজেই পাই না। মনে হয় ঐ চরিত্রের লোকটি আমি নিজেই!
আশ্চর্যজনক হলেও এটাই সত্যি! ঐ বইয়ের লেখকের শক্তির ওপর নির্ভর করে সেই বুঁদ হয়ে থাকার সময়সীমা!! এমনকি বাস্তবিক কার্যকলাপে ঐ চরিত্র যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, একই পটভূমিতে আমারও সেই ব্যাপারটি ঘটে থাকে। প্রগতিবাদি চরিত্র হলে ঐ চরিত্রের ন্যায় আমি দু-এক কথা প্রগতির বাণী ছুঁড়ে দেই, আর্গুমেন্ট দেই অপর বক্তার বিবেকের শাণ পরখ করার চেষ্টা করি। উদ্দেশ্য বেশিরভাগ সময়ই অন্ধত্ব থেকে মুক্তির জন্য প্রচেষ্টা থাকলেও অনেক সময়, নিজেকে যে জাহির করার একটা অপচেষ্টা থাকে না, সেটা মোটেও সত্য কথা না।
এবারের ঈদের ছুটিটা আমি শেষ করতে চাইলাম অন্যভাবে। একগাঁদা বই নিয়ে বাড়িতে ঢুকার সময় বাড়ির সবাইকে চোখ কপালে তুলতে দেখলাম। যাক, সেইসব বলতে গেলে আপতিত প্রসংগ বেড়ে যাবে এমনিতেই আমি মুল প্রসংগ থেকে সরে গেছি!

প্রায় ৯০০ পৃষ্টার একটা উপন্যাস নিয়ে চট করে এক পৃষ্টায় এমন কিছু লেখা আমার দ্বারা সম্ভব নয় যা উপন্যাসটির যথার্থ কোন ধারণা দিতে কিংবা মুল্যায়ণ করতে পারবে। সবচেয়ে বড় কথা আমি বুক রিভিউ লেখার ইচ্ছে নিয়ে বসিনি। অনেকেই ধরে নিতে পারেন, এটাও একটা বুক রিভিউ কিন্তু আদতে সেটা নয়ই। সে যাইহোক, সমরেশের ব্যাপারে আপনারা যারা জানেন কিংবা উনার পাড় ভক্ত আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারণ সমরেশ নিয়ে মন্তব্য করার মতো জানাশোনা আমার হয়ে ওঠেনি তবে এটা একান্তই আত্মকথন বলেই বলব সামান্য কিছু। ব্যাপারটা ঠিক এমন আরকি- আমার ইচ্ছের খেরোখাতায় আমি লিখব, যা ইচ্ছে তা লিখব বাঁধা দিতে পারেন, কি লাভ কি ক্ষতি সেটা আমি বুঝব। হাঃ হাঃ হাঃ :)

দুরন্ত আর অবুঝ একটি মেয়ে। সে হলো দীপা! সমাজ ও সংসার তো দূরের কথা যে নিজের অপ্রত্যাশিত/অপছন্দনীয় কিছু পেলে কি প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয়, কৌতূহল চেপে রেখে মিশে যাওয়াটা জানে না এককথায় অপ্রাপ্তবয়স্ক একটা মেয়েকে নিয়ে আপনার পড়া শুরু হবে। জলপাইগুড়ির তিস্তার পরে বেশ কয়েকটা চা বাগান আছে যেগুলো ভূটানের পাহাড়ের পরে অবস্থিত। প্রকৃতি দুহাত ভরে এই জায়গায় বিলিয়ে দিয়েছে এইসব জায়গায়। বন্যপ্রাণীরও অভাব নেই, মাঝে মধ্যেই হানা দিয়ে যায় ওরা গ্রামে/টি এস্টেটে! সমস্যা একটা আছে অবশ্য, বেশ প্রকটও। সেটা হলো মেঘেরা!
প্রায়ই হানা দিয়ে ঐ এলাকার জীবনযাত্রায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে বৃষ্টিরা। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রকৃতির ইচ্ছে নিজস্ব কিছু জায়গা থাকবে যেখানে মানুষেরা তাকে একদম বিরক্ত করবে না। তাই তো একদিন দীপাদের দেখে বিশাল একটা অজগর খুব বিরক্ত হয়েছিল বড়সড় একটা হরিণকে গেলার সময়। যদিও তারা গিয়েছিল পাহাড়ি মাছ ধরতে।
একটু গভীরেই তারা চলে গিয়েছিল যেখানে সচরাচর লোকেরা যায় না। দুরন্তপনা যাকে বলে সেটা পুরোপুরি আপনার মনের পর্দায় ফুটে ওঠবে ঐ জায়গাটা পড়ার সময়।
ছিপ দিয়ে বিশু ভালই মাছ ধরছিল। বেচারা খোকন তেমন একটা সুবিধা করতে পারছিল না। দুজনই দীপার বন্ধু।
অবশ্য এর মধ্যে দীপার সাথে পথে আসার সময়ই খোকনের সাথে দুই পশলা ঝগড়া হয়ে গেছে। মাছ দীপাও ধরছিল এবং খোকনের ক্রমশ জায়গা বদলেও যখন লাভ হচ্ছিল না তেমন, সেইসময় দীপাকে খোঁচা মেরে আবারো কথা বলাতে বেচারি ঠিকঠাক শক্ত জবাবই দিতে পারল কারণ অলরেডি সে বেশ কিছু মাছ ধরে ফেলেছেই।
ঝগড়া শেষ হবার পরে খোকনের ছিপে একটা বাইন মাছ ওঠে, আর এতেই বেচারা খোকন দীপাকে দেখিয়ে বেশ উৎফুল্ল হয়ে ওঠল! কিন্তু দীপা হঠাৎ করে ওকে রিকোয়েস্ট করতে লাগল সে যাতে মাছটা ছেড়ে এ পাড়ে চলে আসে।
খোকন ব্যাঙ করলেও যখন তাকিয়ে দেখলো বুনো হাতির একটা বাচ্চা তার খুব কাছেই এসে পৌঁছে যাচ্ছে ঠিক তখনই তার মনে ভেসে ওঠলো ফুটবলের কথা! হাতিরা তাকে ফুটবল বানিয়ে খেলছে!


“বাজার এলাকার যেসব মানুষ আগে পেছনে যাচ্ছিল তারা দীপাকে খুব লক্ষ্য করছে। দুপাশে আম-কাঠালের সারি, মাঝখানে সরু রাস্তা। অনেকদিন বাদে দীপার হাঁটতে খুব ভাল লাগছিল। হঠাৎ খোকন বলল- এঁই, তোর মনে আছে, আমরা হাতির তাড়া খেয়ে এই জায়গাটা দিয়ে চা-বাগান ছেড়ে উঠে এসেছিলাম।
দীপা ঘাড় নাড়ল, মনে আছে। যাবি সেখানে?
বিশু বলল- না।
দীপা জানতে চাইল- কেন?
এখন তুই বড় হয়ে গিয়েছিস। তোকে নিয়ে চা বাগানের ভেতর ঢোকা ঠিক হবে না। তোর মাথা মোটা তাই বুঝতে পারছিস না।
- সত্যি পারছি না। ছেলেবেলা থেকে আমরা একসঙ্গে খেলেছি, বড় হয়েছি বলে সেসব বেঠিক হয়ে যাবে কেন? তুই ঠাকুমার মত কথা বলছিস।
বিশু জবাব দিল না।”


নারী ও পুরুষ দুইটি ভিন্ন ভাগে রেখে সমাজ একধরণের বৈষম্য সৃষ্টি করে যা জীবনবোধে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যাইহোক, টিনএজ সময়টা পাড় হবার পর বোধ ও বুদ্ধির অনেক পরিবর্তন আসে। ব্যাপারটা বুঝতে পারে না সবাই, এই যেমন দীপা ব্যাপারটা তখনও সেইভাবে বুঝেনি। এই সময় পারিপার্শ্বিক বাস্তবতা মানুষকে যা মানতে, বলতে, করতে, জানতে দিতে চায় তাতেই বদ্ধ ও নিরাপদে থাকতে হয়। খুব কম সংখ্যক মানুষই এইসময়ের চাপিয়ে দেয়া বোঝা অগ্রাহ্য করে নিজেদের মতো করে ভাবতে পারে। ন্যায় অন্যায়ের ধার না ধরে, বিবেক ও বুদ্ধির কোনরকম খরচা না করেই বড়/অভিভাবকরা চাপিয়ে দেন এমন কিছু যা অতো কম বয়সের মানুষদের এগিয়ে যাবার পথে বিরাট কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।

দীপার মাঝে যদি আপনি ডুব দিতে পারেন তাহলে আপনাকে বেশ কিছু ব্যাপারে নতুন করে ভাবা লাগতে পারে। এই যেমন- একটি মেয়ে কি দুরন্ত ছেলেদের সাথে ডানা ঝাপটে ঠিক ওদের মতই চলাফেরার স্বাধীনতা পেতে পারে? কেবল মেয়ে বলেই কি মা-বাবার উচিত সুপাত্র পেলেই বিয়েতে মত দেওয়া, কিংবা বাল্যবিবাহ? মেয়ে মানেই কি পিতামাতার ঘাড়ের বোঝা? কেবল লিংগ-বিষয়ক কারণেই কী নারীদের ব্যাপারে যেকোন কাজে আস্থা কম রাখা স্বাভাবিক? একা চলাফেরার স্বাধীনতা কি কোন নারীর থাকা উচিত? নারীদের জন্য আলাদা পোশাক থাকা কতটা জরুরী মনে হয় আপনার? নারী বলেই কি এই প্রজাতির মানুষদের পদে পদে বিরম্বনায় পড়া স্বাভাবিক? নারী জাগরণ বলতে আসলে কি বোঝায় আর কি বোঝানো উচিত? কেবলমাত্র ধর্মই কি নারীদের পিছিয়ে রাখার জন্য দায়ী?.....

এইভাবে শতশত প্রশ্ন আসতে পারে। একজন দীপার ব্যক্তিত্ব এখানে কি দারুণভাবেই না ফুটে ওঠেছে সে-ই কৈশোরকাল থেকেই। বাবা বলে একটা জায়গা পৃথিবীর অধিকাংশ সন্তানদেরই পাওয়া হয় কিন্তু কয়জন পারে নিজের বাবাকে ফিল করতে? এখানে একটা বিষয় প্রাসংগিকভাবেই চলে আসবে আর তা হলো বাবা হওয়ার জন্য রক্তের সম্পর্কই হতে হবে এইরকম কোন শর্ত কি জুড়ে দেওয়া চলে?
অমরনাথ মুখার্জী দীপার বাবা! আমার মানসপটে যেটা ভেসে ওঠে সেটা হলো উনি একজন প্রকৃত বাবা। বাবারাও ভুল করতে পারে কিন্তু তারা ঠিকই বাবাই থেকে যান। এই শুন্যস্থান পূরণ করার জন্য ঘুরেফিরে এই বাবাই চলে আসেন। সন্তান বিমুখ হলেও নিজের বাবার কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়ই।

দীপার ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল বলতেই হবে, অমরনাথের মতো একজন বাবা যার কপালে জুটে সত্যসাধন মাস্টার যার দীক্ষাগুরু হয়ে আর্শিবাদ দিতে পারেন, তারা ভাগ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে জিততে পারেন। দাদী মনোরমা কিংবা মা অঞ্জলী যতই দেওয়াল তুলেন ভাগ্যরেখায় যতই খারাপ লেখা থাকুক দীপারা বিভ্রান্ত হয়ে পথ হারিয়ে ফেলতে জানে না। আরেঃ ওর নামই তো দীপাবলী!! যে মানবসভ্যতাকে আলো দেখায়!!

পৃথিবীকে মানুষদের জন্য অবাসযোগ্য করতে একেকটা আমি-ই সর্বাগ্রে দায়ী। সমাজ নামক একটা পঁচাগলা আবর্জনাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চায় বেশিরভাগ আমি। হ্যাঁ অনেকেই এই আবর্জনাকে ব্যবহার করে নিজের ছড়ি ঘুড়ানোর জন্য শক্তি ও ক্ষমতা অর্জন করে নেয়।

আপনার পাশ দিয়ে হেঁটে চলা একটা মানুষ চলে গেলে আপনি কেন তার ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার করবেন? যতক্ষণ না সে আপনাকে বিরক্ত করছে ততক্ষণ তো একটা অপরিচিত মানুষকে নিয়ে কোন মত-পোষণ/প্রকাশের অধিকার আপনার নেই! এই যেমন দীপা ব্যানার্জির ব্যাপারটাই ধরুন। সমাজের দেওয়া ট্যাগ ব্যবহার করে তাকে বারবার উত্যক্ত করা হয়েছে। উত্যক্তকারীরা যেমন ছিলেন থার্ডক্লাস অশিক্ষিত মুর্খ তেমনি ছিলেন সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষরাও! এমনও দেখা গেছে গ্রাজুয়েট হবে দু-দিন পরে এমন মানুষ, যে প্রগতির সংগ্রাম করে সেও ভেতরে ভেতরে ঠিক গোঁড়ামিটাই পোষণ করছে। সমাজের অযৌক্তিক ব্যাপারগুলোতেই আস্থা রেখে ফিরছে ক্রমাগতই!

উপন্যাসের গুরুত্বপূর্ণ ও কেন্দ্রীয় চরিত্র নির্মাণে উনার শৈশবের দিনকালগুলো সম্পর্কে ভাল রকমের ধারণা পাওয়া যাবেই বলে বোধকরি। কারণ উনার শৈশব-কৈশোরকাল উপন্যাসের পটভূমির সাথে একদম মিলে গেছে। তাছাড়া ডুয়ার্স, জলপাইগুড়ি কিংবা স্কটিশ চার্চ কলেজ সবকটি জায়গাতে যেমন সমরেশ বাবুর পড়াশোনা/শৈশব-কৈশোরের সময় কেটেছে উপন্যাসের নায়িকার বেলায়ও তাই ঘটেছে!

সাতকাহন’ নাম দেওয়াটা একদম যৌক্তিক হয়েছে। প্রকৃতির নিজের ছবিটা তুলে ধরে ভারতবর্ষ বিশেষ করে বাংলা এলাকার মাটি ও মানুষ, মানসিকতা, সুখ, দুঃখ, হা-হুতাশের ছবি ফুটে ওঠেছে বেশ ভালভাবেই। কেবলমাত্র সম্পদের জন্য মানুষ কতটা নীচ হতে পারে সেটা দেখানোর পাশাপাশি মহৎ মানুষদের স্বরুপও ফুটিয়ে তুলতে হয়েছে লেখককে। কিছু খাঁটি মানুষের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে যারা পৃথিবীকে একটু হলেও দেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ঘুনে খাওয়া সমাজটাকে বদলে ফেলার জন্য তৃণমূল থেকে প্রচেষ্টা চালান। কু-সংস্কারাবদ্ধ এই সমাজটাকে বদলে ফেলার জন্য প্রত্যয়ী হন। উপন্যাসে এরা যে চরিত্র নিন না কেন, আমি গত শতকের পরিস্কার একটা ধারণা এই উপন্যাস থেকে পেয়েছি। আমাদের সমাজের কাঠামোর পেছনের কারণ এই উপন্যাসে সমরেশ মজুমদার দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

দীপাকে দীর্ঘসময় ধরে লড়াই করতে হয়েছে অন্ধত্বের বিরুদ্ধে। অন্যভাবে বললে ব্যাপারটা এই হবে- পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে। থ্রিলিং আছে অনেক! জীবনের চলার পথে নানান মানুষকে ফেলে আসার পর বাঁকে বাঁকে মিলেও যায় হঠাৎ করে এমন ব্যাপার আছে এই বইয়ে।

রমলা সেন এমন একজন মহিলা দীপার কিশোর মনন গড়তে সাহায্য করেছিলেন কিন্তু পথ চলতে গিয়ে কেমন যেন বেচারি ছিটকে পড়েন বলে ধরা পড়ে দীপার কাছে। আবার নাট্যাভিনেত্রী মায়াকে দেখে লড়াইয়ের একটা শিক্ষা যেই মেয়ে পায়, তার কাছেই কি-না সেই লড়াকু সৈনিক লুটিয়ে পড়ে অসহায় হয়ে! তবে এই দুজনের কারণেই দীপা তার লক্ষ্যের দিকে এগুতে বিরাট পরিমাণের সাহায্য পায়।

শমিত। নাটকপাগল একটা লোক। উনি দীপাকে ভালবাসেন। অন্যকথায় ভালবাসতে চেয়েছিলেন। সত্যি কথা বলতে কি, আমিও প্রাণপণে চাইনি দীপার সাথে শমিত নামক এই লোকের প্রণয় হোক। অমল ব্যানার্জীর সাথে একটা প্রণয় হোক চেয়েছিলাম, ব্যাপারটা হয়েছিলো কিন্তু......!

চলার পথে অনেক বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়েছে দীপাকে। প্রাপ্তবয়সে সে অনেকটাই আলাদা ছিল। জীবনে একমাত্র বান্ধবী হিসেবে মায়া নামক এক রাজনৈতিক কর্মীকে পেয়েছিল যে তার ভীত শক্ত করতে সাহায্য করেছিল মননে ও টিকে থাকতে। উপন্যাসের স্রোতে পাঠক হিসেবে দীপার ন্যায় একসময় আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে ‘ভালবাসা কারে কয়?’ নীতি অটুট রেখে পথ চলায় যে প্রতিবন্ধকতা আসে সেটা অনুভব করতে এই উপন্যাস সাহায্য করবে আপনাকে।

সত্যি কথা বলতে কি, দীপার চরিত্রে ডুবে গিয়ে আমি অনেক জায়গায় ইমোশনাল হয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছি। এতই ভেতরে চলে গিয়েছিলাম যে চোখ থেকে অশ্রু বের হয়ে গিয়েছিল, কন্ঠে আবেগের প্রাবল্য এসে গিয়েছিল। সত্যি কথা বলতে কী, এমন কিছু লেখা আছে, এমন কিছু বর্ণনা আছে, এমন কিছু লেখক আছেন যারা পাঠকের মনের গহীনে ঢুকে পরেন শক্তি দিয়ে। সমরেশ বাবু তেমনই একজন লেখক। বেশ কয়েকবার আবেগের ঢেউ আমাকে ছুঁয়েছিল যেটা সচরাচর হয়ে ওঠেনা। সেই কলেজ লাইফে শরৎবাবুর বইগুলো পড়ে কিংবা রবিন্দ্রনাথ/শেকসপয়র/তারাশংকর আমাকে এইভাবে নাড়া দিয়েছিলেন। ঠিক করেছি সমরেশ বাবুর আরো কিছু লেখা না পড়ে ছাড়ছি না।


লেখকঃ সমরেশ মজুমদার
প্রকাশকঃ আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা
ঘরানাঃ আধুনিক জীবনধর্মী উপন্যাস
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×