আমাদের মিডিয়া পাড়ায় চলে বিভিন্ন রকমের নির্মল বিনুদন। চিত্র নায়িকা পরিমনিরে চিনেনা এমন কেউ আছে বলে মনে হয়। আরেকজন আছে বুবলি। ওরেও সবাই চেনার কথা। এই দুইজনের সাথে আমাদের ব্লগারদের মিল আছে। মিলটা ক্যাচালের। যুক্তিতর্ক দিয়ে ভদ্রভাবে ক্যাচাল বিষয়টা খুবই কিউট। সেটা ব্লগে হোক অথবা মিডিয়া পাড়ায়। কিন্তু ব্যক্তি আক্রমণ হলেই কিউট বিষয়টি ডাস্টবিন হয়ে যায়। যেমন: গতকাল রাতে বুবলি তার সন্তান এর জন্মদিন উপলক্ষে নিয়ে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন। পোস্ট দেখে জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা পরিমনি বুবলির নাম উল্লেখ না করে স্ট্যাটাস দেন - "‘আপা গো আপা! পুরাটাই কপি মারলেন! কথা, মিউজিক লাইন, ভয়েস টোন ডেলিভারি থেকে সব! কিন্তু আবেগ তো কপি করা যায় না আপা!’
বুবলিও ছেড়ে দেয়ার মেয়ে নয়। পরিমনির স্ট্যটাস ভাইরাল হওয়ার পর বুবলি আবার পোস্ট দেন -
"পাশের দেশে টলিউড বা বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে শেষ কয়েক বছর ধরে মিল থাকছে অধিকাংশ বিয়েতে। যেখানে বিয়ের ড্রেসের কালার, অ্যারেঞ্জমেন্ট, বর-কনের আসা থেকে শুরু করে অনেক প্রেজেন্টেশনেই মিল থাকছে। পৃথিবীতে অনেক সিনেমা আছে যার গল্প অন্য গল্পের সঙ্গে অনেক মিলে যায়। কাছাকাছি মিলে, একদম মিলে, এরকম বহু বহু জিনিস হচ্ছে দুনিয়াতে।
বুবলী আরও লেখেন, তেমনি মা সন্তান নিয়ে পৃথিবীতে অনেক ইমোশনাল ভিডিও এবং অডিও আছে যার ভাষা একই কিন্তু এসবে পৃথিবীর কারো কোনো অসুবিধা নাই শুধু এই সিন্ডিকেট চামোচ গুলোর অবস্থা দেখলে মনে হয় যে এরাই দু-একজন শুধু মা হইসে, আর কেউ মা হয়নি।
তাদের শুধু লেবার পেইন হয়েছিল আর কারো হয়নি, তাদের পারিবারিক যুদ্ধ, সন্তানের স্মৃতি, জীবন সংগ্রাম, কষ্ট, ঘর গোছানো ,খাওয়ানো সব কিছু স্বাভাবিক কিন্তু আর কারও এরকম হয়না। তারাই খাবার খাওয়ার পর প্রেসার আসলে ফ্রেশরুমে দৌড় দিবে কিন্তু আর কেউ যাইতে পারবেনা। তারাই লাল, নীল, হলুদ রং পরবে আর কেউ পরতে পারবে না। তারাই হাসবে, কাঁদবে, ঘুমাবে, আর কেউ পারবেনা। যদি আপনি পারেন তাহলে আপনার আবেগ নাই, বিবেক ও নাই, শুধু কপি আছে। "
আসলে হিংসা থেকে মানুষ কত নীচে নামতে পারে উপরের পরিমনির পোস্ট তার প্রমাণ। যত বড় সেলিব্রিটিই হোকনা কেন, মনের হিংসা থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যক্তি আক্রমণ করলেই সে বস্তি। সেদিন ব্লগার রফিক ভাই - ঢাবির বটতলায় কোরান পাঠ নাঠকের নেপথ্যে জঙ্গি জামাত শিবির জড়িত বিষয়বস্তুতে অত্যন্ত লজিকাল একটা পোস্ট দিলে - ব্লগার আর ইউ ভাই উনাকে ভদ্র ভাবে জিজ্ঞেস করেন বটতলা নাঠকের সাথে যারা জড়িত তারা যে জঙ্গি জামাত শিবির তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য বা প্রমাণ আছে? এরপর মৌলবাদী সমর্থিত কয়েকজন ব্লগার উনাকে ট্যাগবাজ উপাধিতে ভুষিত করে রোষানলে ফেলার ষড়যন্ত্র করলে আমি মন্তব্য করি - "আপনি আর ইউ ভাই এর মন্তব্যের জবাব গুছিয়ে দিন, আর গুলোকে পাত্তা দেয়ার দরকার নেই। ঐগুলা লো ক্লাস তাবলীগ লেভেলের তাই ওদের পক্ষে কথা বলছে"। তারপর বটতলার কোরান পাঠ নাটকের সাথে জড়িতদের জামাত শিবির বলায় তাদের মানসিকতার একজন প্রচন্ড গোসসা করে - রফিক ভাইকে এট্যাক করেন এবং বলেন - "এসবের কারণে ব্লগ ছেড়ে চলে গেসি " সাথে সাথে বটতলার আরেক কোরান পাঠের নাঠক সমর্থন কারী আমাকে ব্যক্তি আক্রমণ করে লিখেন - "নীল আকাশ আপনারা ব্লগ ছেড়ে চলে গেসেন বলে বিয়ে বাড়ির ফটোগ্রাফার আজ পপুলার ব্লগার "
আর আমিও বুবলির মতো পোস্ট দেই - "ব্লগে কি শুধু বি এন পি ভেক ধরা ছুপারা পপুলার হতে পারবে? গরীব ফটোগ্রাফার দের কি পপুলার হওয়ার অধিকার নেই?" দেখুন ব্লগ কিংবা মিডিয়া বাঙালী সবখানে এক। কেউ কারও ভালো দেখতে পারেনা।
এত কথা বলার কারণ হলো ব্লগাররা জাতীর মেধাবীদের বড় অংশ হলেও কিছু কিছু ব্লগারদের মূর্খতা সীমা ছাড়িয়ে যায়। এরা নায়িকা-গায়িকাদের গালাগালি করে, মক্ষিরানী - পতিতা - জাহান্নামি বলে, অথচ এরা নিজেরাই ব্লগে ওদের চেয়েও বিশ্রী ভাষায় ব্যক্তি আক্রমণ করে। ডাইরেক্ট জাহান্নামের সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়। আসুন দেখে নেই একজন জাহান্নামির উদারতা:
আমাদের মডেল পিয়া জান্নাতুল হাইকোর্টের একজন লয়ারও যে অসাহায় ও দুর্বলদের ন্যায্য বিচার পাইয়ে দেয়। প্রথমে ড: কামাল হোসেন ও পরবর্তীতে সম্প্রতি এমপি হওয়া ব্যারিস্টার সুমন এর সাথে কাজ করে। তার একটা পোস্ট আজকে ভাইরাল হয়েছে। স্বয়ং কিংবদন্তী জেমস, জয়া আহসান পোস্টটা শেয়ার করেছেন। নীচের ছবিটা আপলোড দিয়ে পিয়া লিখেন - "আজকে কোর্টে ঢোকার সময় “লায়ন” কে দেখলাম, শুনলাম গতকালই ওর ভাই গাড়ি চাপাতে মারা গিয়েছে, তারপর থেকে চুপচাপ। আগামী প্রায় একমাস হাই কোর্ট বন্ধ থাকবে, কান্টিন বন্ধ থাকবে, কোর্টে লোক একেবারে কম থাকবে তাই বেশির ভাগ কুকুর বিড়ালের খাবার থাকবে না। তাই ভাবলাম লায়ন কে আমার বাসার সামনেই নিয়ে যাই, আমার মটু পাতলুর সাথেই থাকবে এবার থেকে! "
পোস্টটা এতক্ষণ যারা পড়েছেন - তাদের কাছে একটা প্রশ্ন আল্লাহ কাকে আগে জান্নাতে পাঠাবেন?সন্ত্রাস ও বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা করা বটতলার জঙ্গি জামাত ও সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যমে তাদের দোসরদের নাকি ওদের ভাষায় নিশ্চিত জাহান্নামি মক্ষীরানি - পিয়া জান্নাতুল দের?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০৩