একে অপরের জন্য। Made for eachother. কথাগুলোর মধ্যে কীরকম মেলোড্রামা কাজ করে। এই একই কথা একটু অন্যভাবে কীভাবে বলা যায়!!! আমরা যদি ক্রিকেটের বাংলা ধারাভাষ্যে যাই তাহলে বলা যায় ‘ব্যাটে বলে হওয়া’। আরেকভাবে বলা যায়। ‘খাপে খাপ মিলা’।
মানুষ সম্পর্কে আবদ্ধ হয় অনেকটা দায়ে পড়ে। কীসের দায়? সামাজিক রীতি-নীতির দায়, শারীরিক চাহিদার দায়, একাকীত্ব থেকে বাঁচার দায়, এরকম আরো অনেক ঠাহর করতে না পারা দায়। এইসব দায় থেকে বাঁচার জন্য মানুষ দিনের পর দিন সম্পর্কগুলো নিয়ে এগিয়ে যায়। এর মধ্যে ঠিক কটা সম্পর্ক ‘ব্যাটে বলে হয়’ কিংবা ‘খাপে খাপ মিলে যায়’? বলাই বাহুল্য যে উত্তরটা হবে হাতে গোনা কয়েকটা মাত্র।
আপাতদৃষ্টিতে পুলক আর রীতার সম্পর্কটা হাতে গোনা সেই কয়েকটা সম্পর্কের মধ্যেই পড়ে। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে তথাকথিত ভালোবাসার সম্পর্কের শুরুটা সবসময়ই এক অসাধারণ অনুভূতির জন্ম দেয়। যে অনুভূতির ঠিক ব্যাখ্যা হয় না। যুক্তিবাদীদের ভাষায় বলা যায় ‘কেমিক্যাল রিএকশন’। কিন্তু তারপরেও একটা সম্পর্কের মধ্যে অনুভূতির বাইরেও বোঝাপড়ার একটা ব্যাপার থাকে। শুরুর দিকের অনুভূতি যদি কিছুটা ফিকেও হয় তাহলে সেই বোঝাপড়া সম্পর্ককে শুধু রক্ষাই করে না। আরো গভীর করে।
বেশীরভাগ সময়েই দেখা যায় একই সম্পর্কে অবস্থিত দুই জন মানুষ দুই স্তরে বিরাজ করে। অনেক সময় চেঁচিয়েও তারা একজন আরেকজনের কথা শুনতে পায় না। এমনও দেখা যায় যে তারা জানতেও পারেনা যে তাদের অবস্থান একই স্তরে নয়। পাঠকরা হয়তো ভাবছেন এই স্তর আবার কোন স্তর। ধরা যাক! একটা মাঠ। সেখানে সবুজ গাছ-গাছালি আর অনেক পশু পাখি। দুজন মানুষ একইসাথে এই দৃশ্য দেখছে। একজন বুঁদ হয়ে দেখছে পশু পাখি। আরেকজন বুঁদ হয়ে দেখছে গাছপালা। এ থেকেও বোঝা যাবে না কে কোন স্তরে আছে। বোঝা যাবে ঠিক তখন যখন একজন জানবে যে আরেকজন ঠিক কী দেখছে!! যদি মেলে তাহলে তারা একই স্তরে। না মিললে ভিন্ন স্তরে। থাক আমরা এই জতিল মনস্তত্বের ব্যাখ্যা থেকে বের হয়ে এসে পুলক আর রীতার কাছে ফিরে যাই।
অবশেষে পর্দার অন্তরাল থেকে পুলক আর রীতা একজন আরেকজনের সামনে এসে দাঁড়ালো। কিছুটা সংকোচ, বেশ অনেকটা ভালোলাগা, তার চেয়েও বেশ অনেকটা ভালোবাসা যাকে আমরা কেমিক্যাল রিএকশনও বলতে পারি, এসব কিছু নিয়ে তারা একে অন্যের সামনে দাঁড়ালো। নিজেদের যেন আরো গভীরভাবে আবিষ্কার করতে থাকল।
আবেগের জগত থেকে বাস্তবের জগতে ফেরা যাক। রীতার মা নাজমা হক মেয়ের জন্য নতুন ছেলের খোঁজ এনেছেন। ছেলে ডাক্তার। বাইরে থাকে। বাইরে বলতে লন্ডনে। দেশে এসেছে বিয়ে করার জন্যই। বাড়ির ছোট ছেলে। এবার নাজমা হক নিজেই ছেলের সব খোঁজখবর নিয়েছেন। এ ছেলে নিখুঁত। অভিজাত পরিবারের ছেলে। ছেলের বাবা-মাও ডাক্তার। ছেলের দাদা ছিলেন টাঙ্গাইলের নামকরা ব্যারিস্টার। এরকম একটা ছেলে হাতে পাওয়া গেছে তা নাজমা হকের বিশ্বাসই হচ্ছে না। আল্লাহ!! কোনোভাবে যদি এই ছেলের সাথে রীতার বিয়েটা হয়ে যেত!! মেয়েটার কপাল খুলে যেত।
(৯ পর্ব লিখার পর এই গল্পটা আর লিখতে ইচ্ছা করলো না। হঠাৎ একদিন মনে হলো গল্পটা শেষ করা উচিৎ। তাই আবার শুরু করেছি। জানি না আবার কবে থেমে যাবে। ইচ্ছা আছে শেষ করার। যারা আগের পর্বগুলো পড়তে চান। তাদের জন্য নিচে আগের পর্বগুলোর লিঙ্ক দিয়ে দিলাম)
পর্ব-১
Click This Link
পর্ব-২
Click This Link
পর্ব-৩
Click This Link
পর্ব-৪
Click This Link
পর্ব-৫
Click This Link
পর্ব-৬
Click This Link
পর্ব-৭
Click This Link
পর্ব-৮
Click This Link
পর্ব-৯
Click This Link