somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত প্রেমের গল্প- (পর্ব ১৭)

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রীতার চাকরি হয়েছে। একটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে। এরা বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো পার্টি থেকে বড়সড় কর্পোরেট সেমিনার এরেঞ্জ করে। রীতা এখানে একজন জুনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে জয়েন করেছে।

চাকরীটা রীতার খুব দরকার ছিল। বাসায় থাকতে থাকতে সে শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিল। ঘর থেকে বের হয়ে সে যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। আর অফিসটাও তাঁর খারাপ লাগছে না। সবাই বেশ হাসিখুশি, বন্ধুবৎসল। অফিস এর পর প্রায়ই এখানে ওখানে খাওয়া দাওয়া হয় দল বেঁধে। এটাও কাজেরই অংশ। এ এক অন্য স্বাদ। নিজেকে সে অন্যভাবে আবিষ্কার করছে। আগে রীতার জীবন ছিল ভার্সিটি আর বাসা। তাও এর মাঝে ছিল মায়ের কড়া অনুশাসন। ঠিকভাবে যেন নিশ্বাস ফেলা যেত না। ক্লাস এর অন্যান্য মেয়েরা ঢাকার বাইরে থেকে এসে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করত। আর রীতা ঢাকার মেয়ে হয়েও সব জায়গায় যাওয়ার অনুমতি পেত না। এই চাকরীটা হচ্ছে রীতার বড় হওয়ার সার্টিফিকেট। কারণ মা নাজমা হক মেয়ের চাকরী করার বিপক্ষে নন। বরং মনে মনে চাইতেন মেয়ে চাকরী করুক। চাকরী করলে নিজের পায়ের মাটি শক্ত হয়। নিজে চাকরী করতে পারেননি। এ নিয়ে তাঁর মনে আক্ষেপ আছে। তবে জীবনের আর বড় বড় আক্ষেপের চেয়ে এই আক্ষেপ নগণ্যই বলা যায়। সুতরাং মেয়ে চাকরী করছে এতে নাজমা হক খুশি। মায়ের খুশি রীতার জন্য অলিখিত সার্টিফিকেট। নইলে সে মনে শান্তি পায় না। যেমন পুলকের ব্যাপারটা নিয়ে সে অনেক অশান্তিতে আছে। বেশ অনেকদিন সে বাসায় এ নিয়ে চিন্তা করল। কতকিছু কতভাবে চিন্তা করল। কিন্তু কিছুতেই কোন কূলকিনারা পেল না। একটা সময়ে এসে সে এটা নিয়ে ভাবনা চিন্তাই বন্ধ করে দিল। যা হোক হবে!! আর ভালো লাগে না। কপালে যদি থাকে তাহলে পুলকের সাথে তাঁর বিয়ে হবে। নয়তো হবে না। তখনই চাকরীটা যেন তাঁকে আরো সাহায্য করলো। এখন সে অফিস এর সময়টা কাজ করে উপভোগ করে কাটিয়ে দেয়। আর বাসায় গিয়ে খুশি মনে সবার সাথে অফিসের গল্প করে, মাকে কাজে সাহায্য করে আর ছোট বোন রীতার সাথে খুনসুটিতে মাতে। হ্যাঁ, পুলকের সাথে আলাপ কমে গেছে। ফেসবুক এ নয়তো এসএমএস এ। ফোনে অফিস এ টুকটাক। বাসায় আসলে তো আর ফোনে কথা বলার যো-ই পাওয়া যায় না। পুলকের ঘটনা জানার পর থেকে মা ফোন আসলেই সরু চোখে তাকায়। তাই পুলকের সাথে কথা এসএমএস এই বেশি হয়। পুলক এ নিয়ে কোন অভিযোগ করে না। অন্যায় রাগ পুলকের মধ্যে নেই বললেই চলে। হ্যাঁ, এখন যদি রীতা সিনেমা দেখতে গিয়ে পুলকের সাথে কথা না বলে তাহলে পুলক মহাশয়ের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। ঝগড়াঝাঁটি করে এক সা করবে। সেই রাগ কবে ঠাণ্ডা হবে রীতাও জানে না। প্রথম প্রথম এ ধরনের রাগ ঠাণ্ডা হতে ২-৩ দিন সময় লাগত। কিন্তু যেখানে আসলেই সমস্যা। সে বেলায় পুলক সব সময়ই আন্ডারস্ট্যান্ডিং। সামনে মা। পুলকের এসএমএস এর জবাব দেয়া যাচ্ছে না। শুধু একবার কোনাভাবে শুধু এসএমএস করলেই হবে যে '‘মা'’। ব্যাস!!! আর কিছু না! পুলক আর এ নিয়ে কোন সমস্যাই করবে না। মাঝে মাঝে রীতার মনে হয় সে পুলককে ঠকাচ্ছে। রীতার জায়গায় অন্য কোন মেয়ে হলে সে পুলককে আরো কত সময় দিত। রীতা তো আর তা দিতে পারে না।

পুলক বেশ খুশি হয়েছে রীতার চাকরি পাওয়াতে। রীতা বাসায় থেকে থেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছিল। ওঁর জন্য খুব দরকার ছিল অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকা। পুলক এখন আর রীতাকে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলে না। সে বুঝতে পারে রীতা এই ব্যাপারটা নিয়ে একটু ডিস্টার্বড। আরো একটু সময় যাক। রীতার অস্থিরতা কমুক। রীতাকে অস্থির দেখলে তাঁর ভালো লাগে না। রীতার যে কোন সমস্যা তো তারই সমস্যা। রীতার চাকরী পাওয়াতে পুলক ভেবেছিল এখন থেকে তাঁর আর রীতার বেশ ঘন ঘন দেখা হবে। এটা ভেবেও সে খুব খুশি হচ্ছিল। কিন্তু আদতে তা হচ্ছে না। লাঞ্চ টাইম এও রীতা সময় করে বের হতে পারে না। অফিস এর পর যাও দুএক দিন দেখা হয় তখন রীতার বাসায় যাওয়ার খুব তাড়া থাকে। দেরী হলে মা বকবে। পুলক মেনে নেয়। একটু একটু অভিমান জমতে চাইলেও সে জমতে দেয় না। বাসায় সমস্যা হলে রীতারই মন খারাপ হবে। রীতার মন খারাপ হোক এটা সে চায় না। কখনো চায় না।

পর্ব-১
Click This Link

পর্ব-২
Click This Link

পর্ব-৩
Click This Link

পর্ব-৪
Click This Link

পর্ব-৫
Click This Link

পর্ব-৬
Click This Link

পর্ব-৭
Click This Link

পর্ব-৮
Click This Link

পর্ব-৯
Click This Link

পর্ব-১০
Click This Link

পর্ব-১১
Click This Link

পর্ব-১২
Click This Link

পর্ব-১৩
Click This Link

পর্ব-১৪
Click This Link

পর্ব-১৫
Click This Link

পর্ব-১৬
Click This Link
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×