২১/০৯/২০০৮ - ২১/০৯/২০১৫
প্রবাস জীবনের সাত বছর পূর্তি |
সাত বছর আগে ঠিক এই দিনে, সুইডেন এর লুন্দ এ আসি | তখন সকাল আটটা বাজে প্রায় | আমি, রাসেল আর ইমদাদ ভাই একসাথে এসেছিলাম | জীবনে এত দীর্ঘ ভ্রমন আমরা আগে কেউ কোনো দিন করিনি | সবাই ছিলাম খুবই ক্লান্ত |
সুব্রত আমাদেরকে লুন্দ থেকে নিতে এসেছিল | সুব্রত কে দেখে পরানটা জুড়ায়ে গেল | আমি সুব্রত কে বলে ছিলাম কিরে তুই তো দেখি এখনো আগের মতোই রয়ে গেছস | প্রতি উত্তরে সুব্রত বলল কেনো, আমার কি শিং গজাইবো নাকি? শরীর এত নিস্তেজ লাগতেছিল যে আমাদের সাথে থাকা লাগেজ গুলো টানতে পারছিলাম না | আমি সুব্রত কে বলেছিলাম, দোস্ত একটা রিক্সা নে | আর পারতেছিনা | সুব্রত বলল, দাড়া সামনে থেকে নিব!!!! আমি চারদিকে তাকিয়ে আছি, কোথাও কোনো রিক্সা দেখা যায় না | লুন্দ ট্রেন স্টেশন এর সামনে দেখে সারি সারি সাইকেল | আমি মনে মনে ভাবি এখানকার মানুষ এত সাইকেল দিয়ে কি করে ? বাংলাদেশে তো মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা সাইকেল চালায় | এখানে এই উন্নত দেশে এত মধ্যবিত্ত আসলো কোথা থেকে ?
এখানে এসে প্রত্যেকটা জিনিস আমার কাছে ভিন্ন রকম মনে হয়েছিল | এখানকার বাড়ি, ঘর, রাস্থা ঘাট, পশু পাখি, জীব জন্তু, সব | এমনকি আকাশটা ও মনে হয়েছিল অনেক নিচে | মানুষ গুলো কেমন জানি সবাই সাদা, ফর্সা দেখতে | রাস্থা কিংবা ফুটপাতে একটা নেড়ি কুত্তা ও দৌড়ে যেতে দেখা যায় না | পাখির কিচির মিচির শব্দ নেই | কাকের কা কা শব্দ নেই | রাস্থায় কোনো জ্যাম নেই | সবকিছু যেন অতি মাত্রার পরিপাটি, গোছানো |
দেখতে দেখতে অনেক গুলো বছর চলে গেল | জীবন বড়ই বিচিত্র এবং পরিবর্তনশীল | পরিবর্তনের ছোয়ায় কত কিছু বদলে গেল | এসেছিলাম একা, আর এখন এক সুন্দরী কন্যার বাবা হয়ে গেছি | সেই সাথে আরো কত কিছু বদলে গেছে | পরম করুনাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই |
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯