মহাজনেষু,
আপনারা হলেন সৃষ্টিশীল। আমরা জানি আপনারা ভাবছেন। অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে আপনাদের হয়ে অন্য কেউ কেউও ভাবছে। তা ভাবুক। শেষ পর্যন্ত আপনাদের হাতেই তাদের ভাবনা পরিণতি পাবে। দেশবাসী আপনাদের উদ্ভাবনী চমক দেখে দেখে অবাক হবে, বরবাদ হবে, আহত, নিহত, কিংবা উল্লসিত হবে। বাচ্চারা আনমনা হয়ে হা করবে বলে বাচ্চাদের মায়েরা তাদের আরো এক চামচ বেশি খাওয়াতে পেরে খুশী হবে।
নিন্দুকেরা কী বলে বলুক। নিন্দুকেরা খেতে পায় না, তাই মন্দ কথা বলে। ও নিয়ে ভাববেন না। যে পণ্যটি নিয়ে বিজ্ঞাপন বানাবেন, তার গুণাগুণ (গুণ ও অগুণ) নিয়েও ভাববেন না। সেটা আপনাদের কাজও নয়। পণ্যে কী আছে না আছে তা নিয়ে ভাবতে জাতির বয়েই গেল! আপনাদেরও বয়েই গেল! ও নিয়ে ভাববার জন্য সরকারী তনখা পাওয়া মোটা মোটা কর্মকর্তা আছে, সংস্থা আছে। আবার তারা যদি ভেবে নাও থাকে তো চাবুক হাতে পত্রিকাওয়ালারা আছে। তারা ভাববে ওসব। তারা হচ্ছে জাতির বিবেক।
আপনাদের কাজ দৃশ্যায়ন নিয়ে ভাবা। ফটোগ্রাফি নিয়ে ভাবা। আপনারা আরও ভাববেন একটা বিজ্ঞাপন বানিয়ে কত লাভ করা যায়, সেটা নিয়েও। সেটাই তো সৃষ্টিশীলতা। দশ টাকার বিজ্ঞাপন কিভাবে এক টাকায় বানিয়ে নয় টাকা লাভ করা যায়, এর মতো সৃষ্টিশীল ভাবনা কি আর দুনিয়ায় আছে?
আপনাদের বিজ্ঞাপনের ভাষা, চিত্রকল্প ইত্যাদি শিশুদের উপর কী প্রভাব ফেলছে, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর কী প্রভাব ফেলছে, সেসব ফালতু ভাবনাও আপনাদের উর্বরতম মস্তিষ্কের কাজ নয়। এসব কেজো ভাবনা ভেবে সময় নষ্ট করার মতো অঢেল সময় আছে নিয়মিত উপসম্পাদকীয় লেখা বুদ্ধিজীবী পাতি-বুদ্ধিজীবীদের। সেটাই তাদের কাজ। তারা সেসব লিখে দু'পয়সা কামায়ও বৈকি। আপনারা কী দক্ষতার সাথেই না বাংলা ভাষাকে বিকৃত করে ইংরেজির মতো করে চিবিয়ে চিবিয়ে গার্গল করে বমি করার মতো করে বের করার কৌশল আবিষ্কার করেছেন। আর আমাদের নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে তরুণীকূল কী যত্ন করেই না সেসব গলধকরণ করে উগরে চলেছে।
শ্রদ্ধাস্পদেষু,
আপনারা জাতির ভুত। আপনারা জাতির ভবিষ্যত। এগিয়ে চলুন। আমরা আপনাদের পিছেই আছি (এতো সাহস কি আমাদের আছে, যে আপনাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াবো? কাজেই পিছনেই আছি)।
আপনারা রাত বললে আমরা চাঁদ দেখব, আপনারা দিন বললে আমরা সূর্য দেখব। আপনারা বৃষ্টি নামালে আমরা ভিজব।
জয় তব বিচিত্র আনন্দ ...
একটা বিজ্ঞাপন বিরতি ... ফিরে আসছি শিগগিরই। যাবেন না। আমাদের সাথেই থাকুন।