somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়াজের নামে ধর্মব্যবসা চরমে ।

১৯ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়াজিয়ানদের ধর্মব্যবসায়ী বলা হলে কিছু মানুষ চরমভাবে মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে থাকেন। কিন্তু সত্যতা এখন দিবালোকের মত সত্য হয়ে মানুষের কাছে ধরা পড়েছে।
এক একজন ওয়াজিয়ান দিনে তিন থেকে চারটি স্থানে ওয়াজের শিডিউল রাখেন, আর প্রতি স্থানে ১/২ ঘন্টা ওয়াজ করার রেট হল ৩৫/৬০ হাজার টাকা!!
আমরা ডাক্তারের সমালোচনা করি কারণ তারা ৫০০ টাকা ভিজিট নিয়ে গরিবের পকেট কাটে, এমনকি সরকার তাদেরকে ভিজিটের টাকা বেঁধে দেবার চিন্তা করছেন। সরকার একবার দয়া করে ঘোষণা দিন, যে " কোন বক্তা দিনে এক স্থানের বেশি ওয়াজ করতে পারবেননা এবং বক্তার ওয়াজের জন্য টাকা ৫০০০ হাজারের বেশি নিতে পারবেন না। একজন বক্তা মাসে ১০ টার বেশি ওয়াজের শিডিউল রাখতে পারবেননা। "
দেখুন ধর্মব্যবসায়ীরা কি জবাব দেয়।
তারা যদি দিনে লক্ষটাকা কামাই করে থাকেন তবে তাদের অর্থ কোথায় যায় তার হিসাব কেউ রাখেনি। এসব টাকার বেশিরভাগ অংশ জঙ্গিবাদের পেছনে খরচ হয়।
আমার জানাশুনা কয়েকটি বক্তার রেট বলি:
বজলুর রশিদ - ৪৫০০০/৫০০০০ টাকা, দিনে তিন বা চারটি ওয়াজ করেন, সকাল৯ টা, দুপুর ২ টা, সন্ধ্যা ৭ টায় এবং রাত ১০ টায়, এভাবে।
মওলানা খালেক, সাপের ওয়াজের মত ভুয়া ওয়াজের করে বিখ্যাত। সেই ব্যক্তির ওয়াজের রেট ৫০ হাজার টাকা, মওলানা তোফাজ্জল নাকি ৪৫ হাজার, মওলানা তারেক জামিল ৬০ হাজার টাকা।
মওলানা আমির হামজা ৪০ হাজার টাকা। (এমন করে সকলের রেট আকাশ ছোঁয়া).
এদের শিডিউল নিতে গেলে নাকি দুই বছর আগে সিরিয়াল দিতে হবে আর অগ্রিম দিতে হত ওয়াজের রেটের অর্ধেক টাকা।
এরা যে কোটি কোটি টাকা অগ্রিম জমা রেখেছে দুই বছর পর ওয়াজ করবেন বলে, এদের বাঁচার গ্যারান্টি কে দিল? আর এদের মানুষের প্রতি বিশ্বাস কোথায়? শুনেছি এসব বক্তাদের সিরিয়াল নিতে চাইলে নাকি দালাল ধরতে হয়। স্টেজ করতে হয় আলিশান। সেদিন শুনলাম, মওলানা খালেক আমাদের এক এলাকাতে ওয়াজ করতে এসে ষ্টেজ পছন্দ হয়নি বলে রেগে গিয়ে ওয়াজই করেননি!
এমনই হল এদের মন মানসিকতা। এদের ওয়াজ হল ধর্মব্যবসা তা সবার কাছেই দিবালোকের মত সত্য। তবু চলছে অবাধেই এই ব্যবসা। কেউ ওয়াজ আয়োজন করে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে, যাতে সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রদান করানো সম্ভব হয়। আর কেউ কেউ ঐতিহ্য রক্ষার জন্য আয়োজন করছে।
ওয়াজ করে মুসলিমজাতির কোন কল্যাণ হচ্ছেনা কেন, এমন প্রশ্ন করেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি আমাকে এটা বুঝাতে চাইলেন দেশে এত ওয়াজ হয় তবু মানুষ ত হেদায়েত হয় না, কেন? আমি বললাম ওয়াজের উদ্দেশ্যই ত খারাপ। ভুল পথে ত ইসলামের প্রসার বা হেদায়েত হবেনা। ওয়াজিয়ান আসে টাকা কামাতে, যারা ওয়াজ আয়োজন করে তারাও টাকা আদায় করিয়ে নেয় এই বক্তাদের মাধ্যমে, যে বক্তা যত বেশি আদায় করতে জানে তার রেট সবচেয়ে বেশি, আর শ্রোতারা যায় ওয়াজ খেতে। আর সামগ্রিকভাবে ওয়াজের আয়োজন হল ঐ এলাকায় আত্মীয়তা ঝালাই করতে। হেদায়াতের পথ এমন নয়, তাই হেদায়েত হচ্ছেনা।
এজন্য সৌদি আরব সহ বিশ্বে বহু দেশেই ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ, যেটে বৈধ সেটাও সরকারের অনুমতিক্রমে মসজিদের ভেতরে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তি দ্বারা। এভাবে ঢালাওভাবে যত্রতত্র ওয়াজ হয়না।
আমাদের দেশে যেভাবে ওয়াজে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদীতা, সরকার বিরোধিতা, সাম্প্রদায়িকতা, ব্যক্তি বিরোধী, সাংস্কৃতি ও রাষ্ট্র বা সংবিধান বিরোধী বক্তব্য দেয়া হচ্ছে তার লাগাম টেনে না ধরলে দেশের ভাগ্যে খারাপ আছে, খারাপ ভাগ্য আওয়ামীলীগেরও, কারণ জন্মগত ভাবেই আওয়ামীগের ভাগ্য আর দেশের ভাগ্যই এক।
সরকারের কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্তই বাঁচাতে পারে দেশকে ।
এর আগের স্ট্যাটাসে যা লিখেছিলাম,
"সরকারকে দেশে কিছু উগ্র বক্তার তালিকা করে এদেরকে ওয়াজে নিষিদ্ধ করতে হবে,
ওয়াজে দেশ, ভিন্নধর্মী, রাস্ট্র, কোন দল, সংবিধান বা কোন ব্যক্তি বিরোধী বক্ত দেয়া যাবেনা ,
৫০০০ টাকার অতিরিক্ত ফিস নেয়া যাবেনা, মাসে ১০টির অধিক ওয়াজ করা যাবেনা ,
ওয়াজের আয়োজকদের বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড করে থানায় জমা দিতে হবে ।
এই নীতিমালা লিখে ফর্মান আকারে ওয়াজ কমিটির নিকট শর্তসাপেক্ষে ওয়াজের অনুমতি দিতে হবে ।"
সরকারকে অবশ্যই ওয়াজিয়ান বা বক্তার অর্থের হিসাব , ব্যাংক ব্যালান্সের হিসাব রাখতে হবে, সেই টাকা কোথায় যায়, কি উদ্দেশ্যে খরচ হয় ।
এভাবে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না আনা পর্যন্ত এই ধর্ম ব্যবসায়ীদের কবল থেকে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব হবেনা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:১৭
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

বামিঙ্গিয়ান উপাখ্যান

লিখেছেন যুবায়ের আলিফ, ১০ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০




মাঝ রাতে কড়া একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুম ভাঙলো জ্যাকের৷ ঘুমের ঘোরে দেখতে পেল কেউ চোখ ধাঁধানো পোষাক পরে ডাইনিংয়ে একটা চামচ রেখে দরজা গলিয়ে চলে যাচ্ছে৷ গা ও পোষাকের উজ্জ্বলতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×