somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প = অপরাহ্নের ভালবাসা

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল সকাল নাপিতের কাছ থেকে চুল দাড়ি ছেটে এসে নিজেকে একটু ফ্রেশই লাগছিল।দশটার মধ্যে রোজ গার্ডেনে যেতে বলেছে তাজনীন।কিন্তু দশটা বাজতে এখনও দেড় ঘন্টা বাকি।আমার বাসা থেকে রোজ গার্ডেনে যেতে বাসে আধা ঘন্টা লাগবে।এত আগে গুছিয়ে বসে থাকতেও ভাল লাগবে না।আচ্ছা আমার এত অস্থির লাগছে কেন।নতুন প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গেলে একটা কথা ছিল।যাচ্ছি অনেক পরিচিত একজনের সাথে দেখা করতে।যে এক সময় আমার অর্ধাঙ্গিনী ছিল।এখনও যে তাজনীন আমার অর্ধাঙ্গিনী নয় এটাও তো অস্বীকার করতে পারব না।গত রাতে দীর্ঘ তিন বছর পরে তাজনীন আমার কাছে ফোন করে বলল,সোহেল কাল আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে?আমি একটু আমতা আমতা করে বললাম কেন পারব না।তারপর কেমন আছ?কথাটা বলতেই ওপাশে তাজনীনের একটা দীর্ঘস্বাশ ছাড়ার শব্দ শুনতে পেলাম।কেমন একটা মায়া অনুভব করলাম তাজনীনের জন্য।এই ছোট্ট জীবনে কত ঘটনায় ঘটে গেল সত্যি বলছি তবুও কখনই তাজনীনকে এতটুকুও ঘৃনা করতে পারিনি।সব মানুষের জীবনেই এমন একজন মানুষ হয়তো থাকে যারা শত কষ্ট দিলেও তাদের উপর মনে কখনই ঘৃনা জন্মে না।তাজনীনও আমার জীবনে এমন এক জন।
ক্লাসমেট তনুর ছোট বোন ছিল তাজনীন।আমার চেয়ে বছর চারেক ছোট।তনুর জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে পরিচয়।পরে প্রনয় ঘটিত ব্যাপার-স্যাপার আরকি।তাজনীন খুব চটপটে ছিল আর আমি বরাবরই কিছুটা শান্ত।তনুর ছোট বোন সেই হিসেবে তাজনীনের প্রতি আমার অন্য কোন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না।একদিন তাজনীনের কাছ থেকেই পেলাম প্রেমের অফার।তারপর কেমন কেমন করে যেন ভালবেসে ফেলেছিলাম এই পাগলি টাইপের মেয়েটাকে।বিয়ে হয়েছিল দুই পরিবারের মতেই।বছর খানেক সংসারও করলাম।তারপর খুবই সামান্য কারনে তাজনীন একদিন রাগ করে চলে গেল।পরে ফিরিয়ে আনতে গেলেও আর ফিরে আসেনি তাজনীন।তারপর তিনটি বছর কিভাবে পার হল বুঝতেই পারিনি।শুনেছিলাম তাজনীন আবার বিয়ে করেছে।অথচ আমাদের ডিভোর্স হয়নি।
রোজগার্ডেন আমাদের শহরে নাম করা রেস্টুরেন্ট এবং প্রেমিক প্রেমিকাদের ডেটিংয়ের জন্য খুবই ভাল জায়গা।রোজগার্ডেনের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম অল্পকিছুক্ষন ঠিক তখনই রিকসা থেকে নামল তাজনীন, নীল শাড়ি পরে এসেছে তাজনীন।তাজনীন জানে আমার প্রিয় রং নীল।দুজনে রোজগার্ডেনের ভেতরে গিয়ে মূখোমূখি একটা টেবিলে বসলাম।বেশ কিছুক্ষন কেউ কোন কথা বললাম না।আমিই প্রথমে বললাম,তারপর কেমন ছিলে এতদিন? স্মিত হেসে তাজনীন বলে তোমার কি মনে হয় কেমন ছিলাম আমি?
আমার আর কি মনে হবে বল ভাল থাকার জন্যইতো আমার কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছিলে।ভুল বললে সোহেল,কি জন্য যে আমি চলে গিয়েছিলাম তা আমি নিজেও হয়তো জানি না আবার হয়তো জানি।কেন চলে গিয়েছিলে জানতে পারি?সামান্যই তো একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল।
সামান্যই এটা আমিও জানি কিন্তু মাঝে-মাঝে সামান্য কিছুও তো মানুষের মনে বিশাল দাগ কাটে তাই না।আমি জানি সোহেল তুমি আমাকে এখনও ভালবাসো সেই আগের মতই।কিন্তু এই আমিই হয়তো তোমার ভালবাসার মূল্যায়নটা করতে পারিনি।দেখো তোমার সাথে এমন পাগলামী করার পরেও যেই তোমাকে ডাকলাম তুমি আমার ডাকে সাড়া দিলে।
তা বল কি জন্য ডাকলে এতদিন পরে।তাজনীন আবার স্মিত হেসে বলল,তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই।
শুনেছি বিয়ে করেছ তা স্বামী কেমন আছে?
ভুল শুনেছ আমি বিয়ে করিনি।।তাজনীনের এই কথাটা শুনে মনে যেন কিছুটা শান্তি পেলাম।
আবার দুজনা চুপচাপ।
আচ্ছা সোহেল আমরা কি আবার এক সাথে থাকতে পারিনা?
মনে মনে তাজনীনের কাছ থেকে এমন কথায় আশা করছিলাম।নিশ্চুপ হয়ে রইলাম বেশ কিছক্ষন।তাজনীন বলল কি হল কিছু বলছ না যে।
না তাজনীন সেটা আর সম্ভব না।এক সময় তোমার আর আমার পথ অভিন্ন ছিল।তারপর তুমি তোমার পথে চলে গেছ।আমি চাই না দুটি ভিন্ন পথের পথিক আবার এক পথে হাটি।আমার কথা শুনে তাজনীন উঠে দাড়ায়।আবার একটা স্মিত হাসি দিয়ে তাজনীন বলে, থাকো তাহলে আমি যায়।তাজনীনের ওই স্মিত হাসির ভেতরে কোন দুঃখবোধ লুকিয়ে ছিল কি না সেটা বোঝার সক্ষমতা আমার হলনা।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×