somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নূপুর

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নূপুর, বাংগালী নারীর প্রিয় অলংকারের মাঝে অন্যতম একটি। কবে থেকে এর প্রচলন জানিনা। সময়ের সাথে নকশায় এসেছে বিভিন্ন পরিবর্তন, নামেও । দু'পায়ে পরলে নূপুর একপায়ে পড়লে হয় পায়েল । জিনিসতো একই, নাকি তফাৎ আছে? গয়না বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন ভাল। :)
প্রায় প্রতিটি মা-ই মনে হয় তার ছোট্ট মেয়েকে নূপুর কিনে দেন । তার আদরের ছোট্ট সোনামনি ছোট ছোট পায়ে নূপুর পড়ে নিক্কণ ধ্বনি তুলে সারা ঘরময় ঘুরে বেড়াবে এটা দেখে নিজের ছোট্ট বেলার স্মতি মনে করেন।

কোরবানীর ঈদের দিন বিকেলে আমার মামাতো বোনকে দেখি মামীর আঁচল ধরে খুন খুন করছে। কারন জিজ্ঞেস করে জানা গেল তার জন্যে নূপুরের অর্ডার দেওয়া হয়েছে অনেক আগে। বাসা থেকেই তার বায়না ছিল ঈদর দিন সকাল বেলা সে নূপুর পড়বে। যে কোন কারনেই হোক সকাল বেলা আনা হয়নি। এই সব কথা বলার পরে তার কান্নার ভলিউম আরো বেড়ে গেল। বুক ফেটে কান্না আসছে তার =p~ । যাইহোক সন্ধ্যায় দোকান থেকে এনে দিলে সেই নূপুর পায়ে দিয়ে সেকী আনন্দ ! এটা যে তার প্রথম নূপুর তা নয়, আগেরটা ছোট হওয়ায়, নাহ বরং পুচকীটা বড় হওয়ায় সেটা ভেংগে নতুন করে গড়ে দেওয়া হয়েছে আরেক জোড়া।

নূপুরের কথা মনে হতেই মনে পড়ে আমার নুুপুরের কথা। গ্রামে গেলে আশেপাশের কারো বা চাচাতো-ফুপাতো বোনদের কোন নূপুর দেখে ভাল লাগলে আম্মা গড়িয়ে এনে দিতেন নতুন নকশার নূপুর। বাড়ীর পাশে স্বর্ণকারের দোকান থাকায় এই সুবিধা। নিত্য নতুন কত কত নকশার নূপুর যে পড়েছি ! বড় করে বাড়তি চেইন রেখে বানানো হতো যাতে তাড়াতাড়ি ছোট হয়ে না যায়। সেটা ছোট হলে ভেংগে আবার নতুন করে, নতুন নকশায় গড়ানো হতো। পড়তে যে খুব ভাল লাগত তা নয় বানানোর পরে কয়েকদিন পড়া, তার পরে খুলেই রাখতাম। অলংকারে বড় অস্বস্তি লাগে!

বেশ কয়েক বছর আগে রুপার দাম খুব বেড়ে যায়। পড়া হয়না বলে তখন বিক্রী করে দেই একজোড়া নূপুর। মনে আছে ১২০০ টাকা দাম পেয়েছিলাম। সেই টাকা দিয়ে গ্রামীন চেক থেকে জামা কিনেছিলাম 8-| । এর পরে আর বানাইনি। তবে ছিল একজোড়া। খুব ছোট্টবেলার, জীবনের প্রথম নূপুর ছিল সেটা। আম্মা যত্নকরে রেখে দিয়েছিলেন স্মৃতি হিসেবে। দেখতে বেশ সুন্দর ছিল । আমি মাঝে মাঝে বের করে দেখতাম। আম্মা আমাকে খেপানোর জন্যে বলতেন, "আমার ছেলের ঘরের নাতনীকে দিবো এটা";) । আমি বলতাম ঠিকাছে আমার মেয়েকে স্বর্ণ দিয়ে বানিয়ে দিও তাহলে । ;) B-))

নূপুর জোড়া এখন অতীত হয়ে গেছে। কেবল স্মৃতিতেই পাওয়া যাবে সেটাকে। প্রায় দুই বছর আগে বাসায় চুরি হয়, তখন আমার সমস্ত গয়নার সাথে নূপুর জোড়াও চলে যায়। গয়নার প্রতি আমার তেমন দূর্বলতা নেই তাই ক্ষতির তুলনায় সেরকম আফসোস হয়নি। আফসোস হয়েছে দুটি জিনিসের জন্যে। দুটিই ছিল স্মৃতি জড়িত। আমার বৃত্তির টাকা এবং সাথে কিছু জমানো টাকা যোগ করে একটা স্বর্ণের আংটি বানানো হয়েছিল। সলিড রিং, উপরে একটু ডিজাইন করা। সেটার জন্যে খারাপ লেগেছে। তার চাইতে বেশী খারাপ লেগেছে এক একজোড়া রুপার চুড়ির জন্যে। দাদী মারা যাওয়ার পরে তার হাতের চুড়ি দিয়ে বানানো ছিল চুড়ি জোড়া! যাইহোক সেই গল্প আরেক দিন করা যাবে, আজ এসেছিলাম নূপুরের গল্প নিয়ে।
আমার এখন আর কোন নূপুর নেই। আছে সোনালী রং এর একটা পায়েল । চিকন সোনালী চেইনের উপর চকচকে সাদা অনেক গুলো পাথর , সাধারন তবে খুব সুন্দর। আমার খুব পছন্দের। পড়তে নয় দেখতেই ভাল লাগে । মাঝে মাঝে বের করে দেখে আবার যত্ন করে রেখে দেই। :)

********************
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×