somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা মিশেছি ভালোবেসে...গিয়েছি ফেঁসে শেষে : এক ঝলক ব্লগার ইতিহাস (চারবছর পূর্তির প্রথাসিদ্ধ না, বরং রীতিবিরুদ্ধ পোস্ট )!

১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(লেখা শুরু হয়েছে রাত ১০টায়)

এক

কবি বলেছেন, - আমরা মিশিনি ভালোবেসে সব মানুষ যেভাবে মেশে
আমরা গিয়েছি প্রাজ্ঞ আঁধারে অজানার টানে ভেসে..

আমরাও অজানার টানে ভেসে গিয়েছি, ভালোবেসেছি । সেটা প্রাজ্ঞ আঁধার কি বিজ্ঞ আলোতে ভেসে যাওয়া, ঠিক সেই অর্থে বিচার হয়তো করা হয়না আমাদের । আমরা শুধু জানি, বাংলা ব্লগকে ভালোবেসেছি আমরা । ভালোবেসে ফেঁসে যে গিয়েছি, লেখার শেষ অবধি পৌঁছানো গেলে, সে খবর পাওয়া যাবে !

চার বছর খুব কম সময় না ! অনেকগুলো দিন এবং রাত্রি । অনেকগুলো প্রহর । অনেক উত্থান -পতন দেখা । অনেক ভাঙ্গাচোরা দেখা । প্রিয় এবং অপ্রিয় স্মৃতিগুলোর জাবর কাটা হবে বটে, তবে, একটু 'ঘুরান্তিস' পথে !

চার বছর আগে থেকে যারা ব্লগ জমিয়ে রেখেছিলেন, অথচ, তাদের অনেকেই এখন সামুতে একদমই নেই হয়ে গেছেন, সেইসব সহব্লগার , সহযোদ্ধাদের স্মরণ করবো, নতুনদের বরণ করবো,-

তোরা সব জয়ধ্বনি কর, তোরা সব জয়ধ্বনি কর
ওই নতুনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড় ...

নতুনের কেতন উড়ছে পতপত করে, তাঁরা কালবোশেখির ঝড় কতোটা হতে পেরেছেন, তা আলোচনা হবে, কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে । নবিন বন্ধুদের উদ্দেশ্যে যে প্রশ্নগুলো, সেগুলোর উত্তরও এখানে দেয়া থাকবে, প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে অজানা কোন তথ্য যদি তাঁদের জানা হয়, চেষ্টা তা-ই । :)

*ব্লগের একদম শুরুতে যাঁরা ছিলেন, তুখোড় ব্লগিং এ, ব্লগকে জমিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁরা এখন নেই, নেই মানে সামুতে নেই, এরকম দু'চারজন ব্লগারের নাম কি আমার নবিন বন্ধুরা বলতে পারবেন?

*সামুতে ব্লগিং করা অন্তত দু'জন ব্লগারের মৃত্যু আমাদেরকে প্রিয়জন হারাবার ব্যথায় শোকাহত করেছিলো ! তাঁরা কারা ?

# বাংলা ব্লগের এ যাবতকালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নিকধারী, এবং সর্বাধিকবার ব্যান খাওয়া ব্লগারটির দু'চারখানা নিক কে কে বলতে পারবেন ?

# কমেন্টবাজ বা কমেন্টরাজখ্যাত ব্লগারটি কে, বলতে পারেন ? স্বল্প সময়ে কমেন্ট করে যে রেকর্ড তিনি গড়েছিলেন, তা এখনও অক্ষত আছে বলেই জানি ।

# সামহ্যোয়ারইনব্লগ বাংলা ব্লগের পথিকৃত (তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ) । নানা সময়ে , নানা ঘটনায়, সামহ্যোয়ারইনব্লগের ব্লগারেরা এখান থেকে ছিটকে গিয়ে, নতুন নতুন ব্লগ খুলেছেন, তার মধ্যে কোন কোন ব্লগটি ইতোমধ্যে দাঁড়িয়ে গেছে বলে আপনি মনে করেন ?

# বাংলা ব্লগিং-এ, মাল্টিনিক নিয়ে, নানারকম স্ববিরোধি চরিত্র দাঁড় করাতে যেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন, এরকম স্ববিরোধী ব্লগার আপনার কাকে মনে হয় ? ( এ -প্রশ্নের উত্তরটি আমি দেবো না । ব্লগারেরাই এটা নির্বাচন করবেন )

আশা করছি, প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা-না জানা এবং নিজের মতামত দানে আমরা সব সহব্লগার বন্ধুরা সত থাকবো । নতুন মোড়কে কতক পুরানো ব্লগার আছেন, তাঁদের অংশগ্রহণ এই পোস্টটিকে আরো বেশী প্রাণবন্ত করবে বলে বিশ্বাস ।


দুই



তিনি দেবরা । হ্যাঁ, তাঁর ব্লগের মাথায় তেমনই লেখা আছে । তিনিই বাংলা ব্লগের প্রথম পোস্টের জন্মদাত্রী । হোক দেড় লাইনের চে' একটু কম :) এবং পনের শব্দের একটি পোস্ট , তবু সে এক ইতিহাস ! সেখান থেকেই এই ইতিহাসের শুরু -- ইমরান ব্লগ স্রষ্টা, ইমরান, হাসিন ভাই, জানা আরিল এবং ব্লগের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে এইক্ষণে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই । বাংলা ভাষার প্রথম ব্লগটি আমাদের উপহার দেবার জন্য ।

ব্লগের প্রথম দিককার ব্লগারেরা । যাঁদের প্রায় সবারই একটি বিশেষ গুণ ছিল, লেখার গুণ । তাঁরা লিখতে জানতেন । উন্নত পাঠক এবং উন্নত লেখক হিসাবে আমার শ্রদ্ধা তাঁদের প্রতি ।

সুমন চৌধুরী , আনোয়ার সাদাত শিমুল , হিমু আজাদ ধুসর গোধুলী , কনফুসিয়াস , এস এম মাহবুব মুর্শেদ এরকম আরো এক ঝাঁক ব্লগার, সে সময়ে সামহ্যোয়ার থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান । সচলায়তন নামের নতুন একটি ব্লগ গড়ে তোলেন, সুমন চৌধুরির পোস্টটি থেকে হয়তো , বুঝা যাবে অনেক কিছু ।

চোরের স্রষ্টার পক্ষ থেকে কৈফিয়ত ব্লগার চোরের এই পোস্টটি পড়লে, চোর নিকটির আদ্যোপান্ত জানা যাবে ।

সাদিক মোহাম্মদ আলম সচলায়তনে যাননি, কিন্তু এখানেও লেখেন না আর ।



আরো যাঁরা, যাদের লেখার অভাববোধ করি :

শুভ ভাই, সামুতে তাঁর শেষ পোস্ট--ক্ষমতা নামের এমন ক্ষুরটা আমি কারও হাতে দিতে চাই না। আমাদের শুভ ভাই, বাংলা ব্লগ প্রতিযোগীতায় সেরা হয়েছিলেন । উই মিস ইউ, শুভ ভাই !

নজমুল আলবাব। দারুণ গল্পের হাত তাঁর । ব্লগার আলভী তার মুগ্ধ পাঠক সিরিজে নজমুল আলবাবকে নিয়ে লিখেছেন, পড়লে খানিকটা হলেও অনুমান করতে পারবেন, কি উপাদেয় গল্প লিখতেন তিনি । নতুন ব্লগারদের অনুরোধ করবো, নজমুল আলবাবের গল্প পড়ে দেখবার জন্য ।

লঘু পাপে গুরুদন্ড, অর্থাৎ খুব ছোট্ট কোন ভুলের জন্যও কোন কোন ব্লগারকে ব্যান হতে হয়েছে । তার প্রতিবাদে নিজেকে সামু ব্লগ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন আরিফ জেবতিক । ইনি সেই ব্লগার যাঁর ডাকে সর্বপ্রথম ব্লগ আন্দোলন সফল হয়েছিল । ভ্যালরী টেইলরকে অন্যায়ভাবে অপসারণের প্রতিবাদের প্রথম ডাক উঠেছিলো, আরিফ জেবতিকের পোস্ট থেকে ।সাড়ে সাত হাজারের ভেলরি, আড়াই লাখের শফি সামি, আর দুই পয়সার আমরা.. সে যে কি দুর্দান্ত আবেগঘণ পোস্ট, যারা পড়েননি, অবশ্যই তারা দারুণ জিনিস মিস করেছেন । সে পোস্ট ছড়িয়ে গিয়েছিলো, ফেইসবুকের গ্রুপগুলোতে, পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে, তথাকথিত তত্বাবধায়ক সরকারের টনক নড়েছিলো । তাদের একজন অসাধু শফি সামির, অপকৌশল শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিলো । আরিফ ভাই তাঁর সব পোস্ট ড্রাপট করেছেন, ব্লগার জানালার সেই পোস্টের ইংরেজী অনুবাদ , আগ্রহী পাঠকগণ পড়ে দেখতে পারেন । বোধকরি, এখন পর্যন্ত সেটি ছিলো সামুর সর্বাধিকবার পঠিত এবং সর্বাধিক মন্তব্যপ্রাপ্ত পোস্ট ।

হোসেইন-- এই দুর্দান্ত ব্লগারের দু'একটি লেখা পড়ে দেখলেই , তার ভেতরের আগুন সম্পর্কে টের পাওয়া যায়। ছাগু তাড়ানীতে হোসেইন ছিলো অতুলনীয় ।

নিক নরাধম হলেও, যাকে আমি নরোত্তম বলে ডাকতাম । প্রকৃতই নরোত্তম সে । সামু তাকে হারিয়েছে । ভালবাসা দিবসে অন্যরকম ভালবাসা। --নারুর এই পোস্টি পড়লে বুঝা যাবে, কেন তাকে নরোত্তম ডাকি ।

One of the things I keep learning is that the secret of being happy is doing things for other people. --'বিহংগ'দা, তাঁর ব্লগ শিরোনামের মতোই, আমাদের আরো সমৃদ্ধ করতে পারতেন, সুখী করতে পারতেন অপূর্ব সব লেখা দিয়ে ! হঠাৎই তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিলেন একদম । ভালো লেখার সমঝদারদের জন্য বিহংগদার ব্লগ অবশ্য পাঠ্য ।

"জালছেড়া নদী"-- আমাদের কবি ব্লগার মুকুল এর কবিতার বই এর নাম । ভাষাচিত্র প্রকাশনা থেকে ২০০৯ এর বই মেলাতে বেরিয়েছিলো । ছ'হাজার মাইলের দূর পরবাস থেকে কবিতার বইটি সংগ্রহ করতে পেরে আমি আপ্লুত হয়েছিলাম, সত্যিকারের ভালো লাগা কিছু কবিতা বইটিতে ছিলো । সেই মুকুলও স্বেচ্ছা নির্বাসনে ।

"একটি শীতার্ত চুম্বন তোমার ঠোঁটের কাছে
প্রার্থনার মতো বসে আছে খুব
নিরিবিলি,
ধ্যানী নয়, ঋষী নয়,
কবি
নতজানু হয়ে আছে ওই প্রার্থনার কাছে !"


লাইনগুলো আমার আরেক প্রিয় কবি প্রণব আচার্য্যের । ভাষাচিত্র থেকে প্রণব আচার্য্য এর কবিতার বইও বেরিয়েছিলো ।, নাম --
"সূর্যের একচ্ছত্র অধিকার অস্তের পূর্বে" ! অজানা কারণে তিনিও এখন আর লিখছেন না ।

আমাদের একটি গানের ভান্ডার ছিলো । প্রয়োজন হলেই, হাত বাড়ালেই যে কোন গানের লিরিক আমরা যার কাছ থেকে পেতাম । সোলেমানী বানের কবলে পড়েছে সে । । অপরাধ লঘু ছিলো । এরচে' বড়ো অপরাধ নিয়ত করেও অনেক ব্লগারকে এই ব্লগে বেঁচে থাকতে দেখেছি, দেখছি ।



যে দু'জন প্রিয়জনকে আমরা হারিয়েছি : আর প্রস্থানোদ্যত নন, তিনি প্রস্থান করলেন -- কি কাকতালীয় ব্যাপার ! এ-ই ছিলো মুহম্মদ জুবায়ের ভাই এর শেষ পোস্ট সামুতে । এরপর একদিন, জুবায়ের ভাই চিরপ্রস্থান করলেন এই পৃথিবী থেকে !
..............

"অবশ্য ক্রমেই তো সব কিছু মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে...
যায়....

এই যে এখন গলা বসে গ্যাছে...
কথা বলতে পারছি না...
তিন চারদিন এরকম থাকবে....
তারপর হয়তো ঠিক হবে..
আবার গলার ওপর অত্যাচার হবে..
গলাবাজি হবে....
তারপর একদিন ঠিক...ঠিক-ই..... ! ! ! ! ! ! !"


সাংবাদিক মাহবুব মাতিন এমনই লিখেছিলেন, তাঁর শেষ পোস্টে !! পাঠক , ভাবতে পারেন !

সর্বাধিক নিক : অনেকরই প্রিয় আবার অপ্রিয়ও এই ব্লগারটিকে শ্রদ্ধা করি, সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে । যা তিনি বলতে চান, বলেন, লুকোচুরি নেই । আপোষ নেই । তিনি ডাক্তার আইজুদ্দিন । কতোবার তিনি ব্যান খেয়েছেন, নিজেও বলতে পারবেন না । আর নিক সংখ্যা ? তাঁর কোন একটি উক্তিতে দেখেছিলাম, সম্ভবত শতাধিক নিক ব্যবহার করতে হয়েছে । কারণ, কোন কোন নিক একদিনেই শেষ হতো । বিস্ময়ের ব্যাপার , হালিখানেক নিক তার সবসময় তৈরীই থাকতো !

ভালো পোলা আছিলাম, এখন আপাদমস্তক ভন্ড!
কমেন্টরাজ রাশেদের ব্লগ শিরোনাম । পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, রাশেদ মোট মন্তব্য করেছেন: ৪১৮০২টি এবং এই মন্তব্যগুলো তিনি করেছেন মাত্র আড়াই বছরের মতো সময়ে । গত এক বছরে তিনি বোধহয় সামুতে একটিমাত্র পোস্ট দিয়েছেন । অর্থাৎ এক বছর ধরে, তিনিও নেই ।

সামু ভেঙ্গে গড়ে ওঠা ব্লগগুলো :

সচলায়তন : তাঁরা নিজেরা বলেন , সেই অর্থে সেটি ব্লগ নয় । পাঠকেরও অভিযোগ, সেটি লেখক পোড়াম । বিতর্কের উর্ধ্বে গিয়ে বলা যায়, দারুণ প্রতিভাবান এক ঝাঁক লেখক সেখানে লেখেন, এটা সত্য ।

আমার ব্লগ : একটা নির্দিষ্ট জায়গায় তাঁরা আটকে আছে । এরচে' বেশী এগুতে পারবে কিনা, সময় বলে দেবে । তাদের 'নো মডারেশন' স্লোগান আদতে, মেনে চলা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অনেক পোস্ট তাদের মুছতে হয়েছে, নিকও । 'নো মডারেশন' স্লোগান নিয়ে বাংলা কোন ব্লগ চালানো প্রায় অসম্ভব ।

আমরা বন্ধু : নতুন ব্লগ । তারপরও একটা নির্দিষ্ট পাঠকশ্রেণী তাঁরা গড়ে তুলতে পারছেন । ডুয়েল পোস্টের কড়াকড়ি আছে, তাই নতুন পোস্ট তুলনামুলক কম । তবে, যাঁরা লিখছেন, ভালো লিখছেন ।

একটি মজার তথ্য : অন্তত দু'জন সেলিব্রেটি ব্লগার তাঁদের ব্লগ জীবন জমাতে পারেন নি । আব্দুন নূর তুষার এবং মানস চৌধুরী ! সেলিব্রেটিদের একটা সমস্যা ব্লগে হয়, যেমন তারা অভ্যস্থ, হয়তো ভাবেন, খুব বাহ্বা চলবে তাঁদের, কিন্তু ব্লগ জিনিসটি ভিন্ন ।
ব্লগার বেড়ে উঠেন তার ব্লগিং এর পরিচয়ে-- সেলিব্রেটিদের তোষামোদ করবার সময় ব্লগারদের নেই, ব্লগের এই গুণটি ভালো লাগে ।




তিন

নতুন যাঁরা , কেমন তাঁরা :

হাসান মাহবুব -এখন আর তাকে হয়তো নতুন ব্লগার বলা যায়না । এক বছরের অধিক সময় ধরে তিনি ব্লগিং করছেন । ভালো করেছেন বেশ । তার গল্পের ভক্ত আমি । একটা ভবিষ্যত বাণী সাহস করে বলতে পারি, বাংলা ছোট গল্পে হাসান মাহবুব নামটি উপরে উঠে আসবে একসময় ।

তবে, ব্লগকে যে দু'জন তাঁদের গল্প দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন , এবং আমার অলটাইম ফেভারিট । ছোট গল্পের পাখায় যারা নিত্য নতুন পালক যোগ করছেন, সে দু'জন ব্লগার যথাক্রমে- মোস্তাফিজ রিপন এবং আকাশচুরি ওরফে তারিক স্বপন । এ দু'জনও একদমই অনিয়মিত । সকল পাঠকের হয়ে বলতে পারি, আপনাদের গল্পের জন্য আমরা তৃষ্ণার্ত ।

ভাঙ্গন,তার লেখার গুণে ইতোমধ্যেই সহব্লগার পাঠকদের মন জয় করেছেন ।

ব্লগের যেসব কবিদের কবিতা প্রতিদিন মুগ্ধ করে আমায় । যাদের কবিতা খুঁজে পড়বার চেষ্টা করি, - অমিত চক্রবর্তী , তিনি উঠে এসেছেন সৎকারবিহীন যার সংক্ষিপ্ত নাম আমি দিয়েছি,- 'সৎকারবিহীন উঠক' ! :)
স্বদেশ হাসনাইন আরো প্রতিষ্ঠিত কবিরা ব্লগে লিখছেন, তাঁদের নাম সচেতন ভাবেই এখানে উল্লেখ করলাম না ।

একটা কথা না বললেই না : প্রচুর ব্লগার বাড়ছে প্রতিদিন । প্রতিদিন ভালো লেখার সংখ্যা বাড়ছেনা সে তুলনায় । এক কথায়, ব্লগের কোয়নটিটি যতো বাড়ছে, কোয়ালিটি পড়তির দিকে ক্রমশ ।


পরিশেষ : ব্লগ একটি মুক্ত মাধ্যম, আমরা জানি । মানিনা শুধু মুক্ত বা স্বাধীনতার সীমারেখা । স্বাধীনতা মানেই যথেচ্ছাচার না । বোধকরি, স্বাধীনতা ততোটুকু, অন্যের বিরক্তির কারণ না হয়ে, যতোটুকু ভোগ করা যায় । আমরা পরস্পরের শ্রদ্ধা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আশা করি, পরমত সহিষ্ণুতা আশা করি, কিন্তু নিজের অবস্থান থেকে নিজের আচরণগত দিকটি ভুলে যাই ।

ব্লগ ইসলাম প্রচারের জায়গা না । ইসলামী পোস্ট পড়তে ব্লগে কেউ আসে বলে মনে হয়না । মনে রাখা ভালো, ইসলামী পোস্টকে উদ্দেশ্য করে উস্কানীমূলক কোন নাস্তিক্য পোস্ট আসতে পারে। যার জন্য ইসলাম প্রচারের পোস্টটিই দায়ী থাকবে ।

নাস্তিক বন্ধুদের প্রতিও একই কথা : 'নাস্তিকতা'টাও একটা বিশ্বাস, বিশ্বাস না হলে আপনিও এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারতেন ! আস্তিকরা যেমন, নাস্তিকের মতবাদে বদলায়না, নাস্তিকরাও আস্তিকের প্রচারে বদলাবে, মনে হয়না । আপনারা মতামত অবশ্যই দেবেন, সেটা যতোখানি শালীন ভাষায় হয়, সম্পৃতির জন্য ততোখানিই ভালো ফলদায়ক বোধহয় ।

বিজ্ঞাপনী পোস্ট : খুবই বিরক্তির কারণ । কিছু ব্লগার মোবাইল সেট, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিভাবে কিনবেন, বা কিনেছেন এরকম বিজ্ঞাপনী পোস্ট দিয়ে থাকেন, এমনকি পাত্র-পত্রি খোঁজার বিজ্ঞাপনী পোস্টের সংখ্যাও ইদানীং নেহাৎ কম নয় । নতুন সেইসব ব্লগাররা বুঝে উঠতে পারেন না , সহব্লগারেরা তাদের প্রতি ক্ষ্যাপা হয় । এই জাতীয় পোস্ট থেকে সবাইকে বিরত থাকবার অনুরোধ করি ।

মডারেশন : এতো বিশাল একটি ব্লগ চালাতে গেলে, সবকিছুর উপর মডারেটরা সবসময় চোখ রাখতে পারবেন, এমন কথা নেই । শতভাগ নির্ভুল মডারেশন হওয়াটাও অস্বাভাবিক, এই কারণে যে, মানুষ শতভাগ নির্ভুল নয় । তবে, সচেতনভাবে, ভুল কমিয়ে আনবে মডারেটর প্যানেল, এই আশা নিশ্চয় দূরাশা নয় । একটিমাত্র ভুলে কেউ হারিয়ে যাবেন, অনেক ভুলেও কেও শোধরাবেন না, এরকমটা সুবিচার হবেনা কখনই ।

ব্লগের প্রথম দিকে গালি বিরোধী পোস্ট দিতাম । একসময় নিজেকে গালিবাজ হিসাবে আবিস্কার করলাম । ব্লগ আমাকে বাধ্য করলো গালি দিতে, এই পরিবেশটার পরিবর্তন দরকার । গালিবাজ হতে না পারলে যে, কেবল গালি খেয়ে যেতে হবে, এই নিয়মটির পরিবর্তন দরকার । মডারেটরদের সচেতনতায় পরিবর্তন সম্ভব ।

ক্ষমপ্রার্থণা : আমি অকুন্ঠচিত্তে ক্ষমা চাই, সেই দুই প্রকৃতির ব্লগারদের কাছে :

১ ) যারা মতের অমিলের জন্য গালি দিয়েছেন বলে, বাধ্য হয়ে পাল্টা গালি আমাকে দিতে হয়েছে । আমি লজ্জিত ।
২) ব্লগীয় রাজাকার মনস্কদের, অসহ্য হয়ে যাদের গালি দিয়েছি । তারা গালির উপযুক্ত । তাদের গালি দেবার জন্য আমি লজ্জিতও না । তবে, গালি কোন সমাধান না, এটা স্বীকার করি । এবং সেইসব রাজাকার মনস্কদেরও এই মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে অনুরোধ করি যে : যুদ্ধাপরাধীদের ভারে ভরাক্রান্ত আমার প্রিয় স্বদেশ । তাদের বিচার হলে, দেশ মাতৃকার বুক থেকে বিশাল পাথর বোঝা নেমে যাবে ।

৩৭ বছর পরও তোমার মাংস খাওয়া কুকুরেরা রয়ে গেছে, মা জননী!


এভাবে কেউ কেউ চলে যায়
চলে যেতে হয়,
কেউ কেউ বেছে নেয় পৃথক প্লাবন....

পৃথক কোন প্লাবনে ভেসে যাবো কিনা জানিনা, যেতেও পারি । তবে, ভালোবেসে ব্লগে যে সময় ব্যয় , তার একটা চিহ্ন হয়ে থাকুক, এই ভার্চুয়াল দিনলিপি । ব্লগ প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক আগের মতো ।

শুভ ব্লগিং ।


(শেষ : ১:২২ )

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ২:৩২
৬৭টি মন্তব্য ৬৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×