somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেদিন আমি স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখেছিলাম (দ্বিতীয় খন্ড)

১২ ই জুন, ২০০৮ রাত ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(এটি একটি চলমান লেখার দ্বিতীয় খন্ড। প্রথম খন্ড পড়তে ক্লিক করুন)

পরবর্তি সেমিস্টার শুরু হয়েছিল মে মাসের শেষের দিকে। পরিকল্পনা মত আমি ওয়েব টেকনোলজী, এডভান্সড নেটওয়ার্কিং এবং ইনফরমেশন টেকনোলজী মেনেজমেন্ট - কোর্স তিনটি এনরোল করি। যেহেতু ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ওপেন ক্রেডিট পদ্ধতি অনুসরন করে, আমাদের পরবর্তি ব্যাচের সাথে কয়েকটা কোর্স মিলে গিয়েছিল আমার। ফলে দুটো ব্যাচের সাথেই বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স হওয়া স্বত্বেও আমাদের এই দুই ব্যাচে বেশ ভালো ছাত্রছাত্রী ছিল। আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তানজিলা, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফায়সাল, আমাদের তিথি, প্রিসিলা এবং দিবা সহ আরো যারা ছিল, প্রায় সবাই বেশ ভালো ফলাফল নিয়ে স্নাতক শেষ করে এসেছিল। সবারই লক্ষ্য ছিল দ্রুত মাস্টার্স শেষ করে হয় বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়া অথবা দেশে শিক্ষকতায় যোগ দেয়া। এদের মাঝে ফায়সাল মনোবশু বৃত্তি নিয়ে বর্তমানে জাপানে পি.এইচ.ডি করছে, দিবা সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এবং তিথি লন্ডনে পড়ালেখা করছে।

প্রায় এক সেমিস্টার অলস জীবন কাটিয়ে পুনঃরায় লেখা পড়ায় ফিরে আসার চেষ্টা করছিলাম তখন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের তৎকালিন বিভাগীয় প্রধান ড. জাহিদুর রহমান স্যার ওয়েব টেকনোলজী এবং বাংলাদেশের প্রথমসারির সফটঅয়্যার ফার্ম মিলেনিয়ামের সি.টি.ও. ফকরুজ্জামান স্যার আই. টি. ম্যানেজমেন্ট কোর্স নিতেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে প্রভাষক সৈয়দ মরতুজা বাকের স্যার যিনি আমাদের কাছে গালিব ভাইয়া নামে অধিক পরিচিত, তিনি নিতেন এডভান্সড নেটওয়ার্কিং। ফলে পরিচিত এবং অপরিচিত স্যারদের সমন্বয়ে গড়া একটা ব্যাস্ত সেমিস্টারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম।

কিন্তু এরকম সময়ে ঘটলো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। জুন মাসের চার তারিখ আকস্মিক আমার বাবা মারা যান। হঠাৎ করে যেন বিশাল পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে আসলো চোখের সামনে। ফলে পড়ালেখা সহ জীবনের সাধারন সব কাজ থেকে মন উঠে গেল। গ্রামের বাড়িতে, যেখানে বাবাকে দাফন করা হলো, সেখানে কাটালাম বেশ কিছুদিন। তার পর ঢাকা ফিরেও রুমের দরজা বন্ধ করে একাকী সময় কাটাতে লাগলাম। এটা আমার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ন একটা সময় ছিল কারন তখন আমি প্রতিনিয়ত ভাবছিলাম আমার কি করা উচিত এবং কিভাবে আমার পরিবারের মানুষগুলোকে তথা আমার মা এবং ছোটবোনকে আমার সীমিত সাধ্যের মাঝে সব সময় হাসিখুশি রাখা যায়। ভাবতে ভাবতেই মনে হলো আমার এমন কিছু করতে হবে যা আমার মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারবে। এই কঠিন এবং নিষ্ঠুর পৃথিবীতে অন্তত সামান্য সময়ের জন্য যেন আমার মা নিজেকে সুখি মনে করে, এমন কিছু। কিন্তু কি করবো সেটাই ভেবে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ মনে হলো লেখাপড়ায় ফিরে গিয়ে ভালো একটা ফলাফল করলে কেমন হয়? আমার মা নিশ্চয় অনেক গর্বিত হবেন। কিন্তু ভালো ফলাফল চাইলেই করা যায় না। এর জন্য প্রচেষ্টা থাকতে হয়। স্নাতক শেষ করার পর পড়ালেখায় আর মন বসছিল না। তাছাড়া বাবা মারা যাবার পরতো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ফলে ভালো ফলাফলের প্রশ্নই আসে না। তবুও মনকে বোঝালাম একবার চেষ্টা করলে ক্ষতি কি?

জীবনে কোনদিন এভাবে লক্ষ্য ঠিক করে লেখাপড়া করেছি বলে মনে পড়ে না। তাও আবার মাস্টার্সে এসে, ভাবতেই অদ্ভুত লাগছিল। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ডিপার্টমেন্টে খোঁজ নিলাম কি কি এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয় মাস্টার্সে। খুব একটা আশাবাদী হবার মত তথ্য পেলাম না। স্নাতক পর্যায়ের মত মাস্টার্সে সুমাকাম বা মাঘনাকাম এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয় না (পরবর্তিতে জেনেছি এগুলো সারা বিশ্বে স্নাতক পর্যায়েই কেবল দেয়া হয়)। একমাত্র এ্যাওয়ার্ড যেটা মাস্টার্সে দেয়া হয় সেটা হলো রাষ্ট্রপতি কতৃক স্বর্নপদক যার জন্য সি.জি.পি.এ নূন্যতম 3.97 থাকতে হবে এবং এক বছরে অর্থাৎ তিন সেমিস্টারে মাস্টার্স শেষ করতে হবে। বেশ খানিকটা দমে গেলাম কারন এত ভালো ফলাফল করার মত মনোবল তখন আমার ছিল না।

সন্ধায় বাসায় ফিরে এক্সেলে একটা টেবুলেশন সিট তৈরী করে দেখার চেষ্টা করছিলাম সর্বোচ্চ কয়টা A- পেলে সি.জি.পি.এ. 3.97 থাকবে। এক্সেল যা জানালো রীতিমত ভয়াবহ। একটা A- পেলেই সি.জি.পি.এ. 3.96 হয়ে যাবে অর্থাৎ স্বর্নপদক পেতে হলে আমাকে পারফেক্ট স্কোর করতে হবে। তার উপর অতিরিক্ত লোড নিয়ে কারন আমি প্রথম সেমিস্টারে মাত্র দুইটা কোর্স নিয়েছি। অতএব পরবর্তি দুই সেমিস্টারে আমাকে ছয়টা কোর্স এবং নয় ক্রেডিটের থিসিস যা কিনা আমার পূর্ববর্তি ব্যাচের ছাত্ররা বছর পার করে দিচ্ছিল কিন্তু শেষ হচ্ছিল না। আমি কি পারবো? হঠাৎ করে আমি আমার ভেতরে একটা জেদ অনুভব করলাম। মনে মনে ভাবলাম না পারার কিছু নাই। আমাকে পারতেই হবে। আমার বাবার জন্য, আমার মায়ের জন্য, আমার পরিবারের জন্য। দরকার হলে আগামী প্রায় একবছর জীবনের সব অনন্দ এবং সাধ বিসর্জন দিব, তবুও আমাকে ঐ স্বর্নপদক হাতে নিতে হবে তাও আবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে। ফলে স্বপ্ন এবং জেদকে ছাড়িয়ে আমার কাছে তখন এটা একটা লড়াইয়ে পরিনত হল। আমি ঠিক করলাম আমার এই পরিকল্পনা আমি কারো সাথে আলোচনা করবো না। কেবল আমি এবং আমার মনই জানবে আমার লক্ষ্য।

নুতন উদ্যামে ক্লাস করতে শুরু করলাম। প্রতিটা ক্লাস যেন আমার কাছে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবার একেকটা পদক্ষেপ। জাহিদ স্যারের ক্লাসগুলো ছিল একটু অন্য রকম। স্যার প্রতি ক্লাসে একটা করে বড় এ্যাসাইনমেন্ট দিতেন যা পরবর্তি সপ্তাহে আমাদের জমা দিতে হতো। যেমন প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট ছিল একটা ব্রাউজার বানানো। শুনে প্রথমে ভেবেছিলাম স্যার মজা করছেন। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে ভুল ভেঙ্গেছিল এবং পুরো কোর্সে স্যার এরকম আরও অনেক কিছু আমাদের দিয়ে করিয়ে নিয়েছিলেন যা প্রথমে নিজেরাই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমরা করতে পারবো। অন্য দিকে ফকরুজ্জামান স্যারের কোর্সে স্যারের মূল লক্ষ্য ছিল আই. টি. ম্যানেজমেন্টকে স্ট্র্যাটেজিক ম্যনেজমেন্টের সমন্বয়ে পড়ানো যেটা তিনি বেশ ভাল ভাবেই করতে পেরে ছিলেন। তবে সবচেয়ে চমৎকার লেগেছিল গালিব ভাইয়ার কোর্সটি যেখানে প্রতিটি বিষয় তিনি সরাসরি বিভিন্ন পেপার এবং RFC থেকে পড়িয়ে ছিলেন। এই কোর্স থেকেই প্রধানত পেপার পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছিল যেটা আমার পরবর্তি শিক্ষা জীবনে অনেক কাজে এসেছে।

যেহেতু আমার নুতন লক্ষ্য অনুযায়ী আগামী দুই সেমিস্টারের মধ্যে মাস্টার্স শেষ করতে হতো, তাই থিসিসের তিন ক্রেডিট এনরোল করে এরশাদ স্যার ও গালিব ভাইয়ার তত্ত্বাবধানে দ্রুত কাজ শুরু করি। থিসিস সংযুক্ত করায় সে সেমিস্টারে আমার মোট কোর্স লোড দাড়ায় বারো ক্রেডিট; ফলে পরবর্তি তথা চুড়ান্ত সেমিস্টারের জন্য বাকি থাকে আরও পনেরো ক্রেডিট। পূর্ববর্তি সেমিস্টারে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটা স্কলারশিপ পেয়েছিলাম যা আমার টিউশন ফিস এর অর্ধেক পরিশোধ করেছিল। প্রথম সেমিস্টারের ফলাফল এবং এই স্কলারশীপ - এসব ছোট ছোট সাফল্য আমাকে বড় সাফল্যের দিকে যেতে অনুপ্রানিত করছিল। স্নাতক শেষ করার পর পড়ালেখা থেকে যে বিচ্ছিন্ন একটা অনুভুতি ছিল সেটা ততদিনে অনেকটা কাটিয়ে উঠেছি। চাকরীর চেষ্টাও বন্ধ করে দিয়েছিলাম যাতে পড়ায় আরো মনযোগ দিতে পারি। তবে সত্য কথা বলতে, তখনও আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না এই লক্ষ্য আদৌ আমাকে দিয়ে অর্জন সম্ভব। মাঝে মাঝে মনে হতো আমি কি বৃথাই চেষ্টা করছি? সাথে সাথে নিজেকে বোঝাতাম, যুদ্ধ যখন শুরু করেই দিয়েছি এর শেষও আমাকেই করতে হবে।

ঝড়ের মত সেমিস্টারটা কেটে গেলো। অতঃপর ফলাফল প্রকাশের পালা। প্রথম গ্রেড পেলাম গালিব ভাইয়ারটা। A এর ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম কিন্তু A+ দেখে বেশ ভালো লাগলো, তাও আবার ক্লাসে একমাত্র। তবে এ অনুভুতি ছিল সাময়িক, আবার ভীত হয়ে পড়লাম অন্য স্যারদের গ্রেডের কথা ভেবে। বিকেলের দিকে ফকরুজ্জামান স্যার আসলেন। মুখে স্যারের চিরায়ীত ভয় ধরানো হাসি। কিন্তু গ্রেড আর দিচ্ছেন না। পুরো ডিপার্টমেন্টে গুজব ছড়িয়ে পড়লো স্যারের কোর্সে ফলাফল খুব খারাপ হয়েছে। ভালো ছাত্রছাত্রীরা খুব খারাপ গ্রেড পেয়েছে। সি.এস.ই.-এর চেয়ারম্যান অর্থাৎ স্যার আকতার স্যারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। আকতার স্যার আসার সাথে সাথে তাঁর হাতে গ্রেড দিয়েই কারো সাথে একটা কথাও না বলে স্যার চলে গেলেন। আমি তখন বুঝে গিয়েছি যে আমার অবস্থা খারাপ। মিডটার্মে সর্বোচ্চ নাম্বার পেলেও ফাইনাল পরীক্ষা তেমন একটা ভালো হয়েছে বলে আমার মনে হয়নি। অতএব আমার A পাবার সম্ভাবনা শেষ। কিছুক্ষন পর গ্রেড টানিয়ে দেয়া হলো। আমার যেন আর গ্রেড দেখতে যাওয়ার মত শক্তি ছিল না পায়ে। হঠাৎ কে যেন বলে উঠলো তিথি এবং শান্ত (আমার ডাক নাম) ছাড়া আর কেউ A পায়নি। তানজিলা সহ আরও অনেকের ফলাফল চরম খারাপ। তারা ততক্ষনে ডিপার্টমেন্টে অভিযোগ করার ব্যাপারে কথা বলছে। আমি গ্রেড লিস্টে নিজের নামটা দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কমন রুমে গিয়ে বসলাম। যেন এক কঠিন যুদ্ধ শেষে ক্লান্ত সৈনিক! বসে বসে চিন্তা করছিলাম, এভাবে যদি আমাকে প্রতিটা গ্রেড নিতে হয় তাহলেতো আমি পাগল হয়ে যাবো। এখনও এই সেমিস্টারে একটা এবং আগামী সেমিস্টারে তিনটা কোর্স বাকি। শুধু একটা বিষয়ে একটু খারাপ অর্থাৎ A থেকে A- হয়ে গেলেই সব শেষ। এ যে কি মানসিক যন্ত্রনা, বলে বোঝানো যাবে না।

এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধা নেমেছে। সবাই তীর্থের কাকের মত বসে আছি ওয়েব টেকনোলজী গ্রেডের জন্য। সাভার থেকে জাহিদ স্যার এসে আমাদের গ্রেড দেবেন। এই কোর্সটা নিয়ে আমার ভয় ছিল সবচেয়ে বেশি। এটাতেও মিডটার্ম পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে ছিলাম, কিন্তু ফাইনালের MCQ অংশে সব জট পাকিয়েছি। তাছাড়া রচনামূলক অংশের পরীক্ষাও আমার মনের মত হয়নি, অন্তত সর্বোচ্চ নাম্বার পাবার সম্ভাবনা শুন্যের কোঠায়। একটাই আশা, যদি সবার পরীক্ষা খারাপ হয় তাহলে স্যার কার্ভ করবেন বলেছেন অর্থাৎ সরল ভাষায় যাকে বলে একটা বিশেষ গ্রেস দিবেন সবাইকে। কিন্তু কারো পরীক্ষা খারাপ হয়েছে বলে মনে হয়নি, অন্তত চেহারা দেখে। আমি কমনরুম এবং প্রজেক্ট রুমে ক্রমাগত হাটাহাটি করছিলাম। আমার অবস্থা দেখে ফায়সাল এসে স্বান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু তাতেও আমার চিন্তা কমলো না। একসময় আমি অনুভব করলাম আমার মাথা ঝিমঝিম করছে। চোখ বন্ধ হয়ে আসছে ক্লান্তিতে। প্রচন্ড উৎকন্ঠার কারনে যেন শরীরও অবস হয়ে আসছিল।

যাইহোক, খানিক পরে জাহিদ স্যার আসলেন। এসে বললেন তিনি আগে গ্রেড টাঙাবেন না বরং নিজেই সবার গ্রেড একে একে ঘোষনা দেয়ার মত করে জানাবেন। আমরা সবাই দাড়ালাম স্যারের সামনে। স্যার হাসছেন আর আমার চিন্তা আরো বাড়ছে। এক সময় শুরু করলেন গ্রেড ঘোষনা। জানালেন পুরো কোর্সে সবচেয়ে বেশি মার্কস নিয়ে A+ পেয়েছে... আমি যেন আমার কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না তখন। স্যার আমার নাম বলছেন। আমি হাসবো না কাঁদবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। স্যার এটাও জানালেন আমার পরীক্ষা বেশ ভালো হয়েছে তবে MCQ অংশটা খারাপ হওয়ার পরও অন্যদের থেকে ভালো হওয়ায় সবাইকে যে গ্রেসটা দেয়া হয়েছে সেটার অন্যতম সুফল আমি পেয়েছি। ইচ্ছে করছিল আনন্দে একটা লাফ দিতে। কিন্তু সাথে সাথে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করলাম। অনেকটা পথ যে তখনও বাকি রয়ে গিয়েছে।

আরও পরে, ফলাফল নিয়ে আমি যখন রাস্তায় বের হয়ে আসি তখন সন্ধা গড়িয়ে রাত। সারা দিনের চরম উৎকন্ঠা আর ক্লান্তি যেন নিমেষে মুছে গিয়েছিল সবগুলো গ্রেড পাবার পর। অদ্ভুত ভালো লাগার একটা অনুভুতি হচ্ছিল। সাথে সাথে ভবিষ্যতের লড়াই নিয়েও ভাবছিলাম। আরও তিনটা কোর্স এবং থিসিস আমার সামনে। সময় খুব কম, মাত্র তিন মাস। এই তিন মাসে আমার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা এক করে হলেও আমাকে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। লক্ষ্যের এত কাছে পৌছে আমি হেরে যেতে চাই না। আমি অনুভব করছিলাম আমার ভেতর থেকে কে যেন বলছে, "তুমি পারবা, অবশ্যই পারবা।" (চলবে)

২৬ এপ্রিল ২০০৮

পরবর্তি খন্ড - Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ১:৫৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×