somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি ভৌতিক প্রেমের গল্প ( শেষ পর্ব)

৩০ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্ব
২য় পর্ব


আর তখন আমি শুনতে পাই চড়ের শব্দ । যেন খুব জোড়ে কেউ কাউকে চড় মাড়ল । তারপর ভারী কিছু পড়ার শব্দ সাথে সাথে ঐ শয়তানটার গোঙানীর শব্দ ।
অন্ধকার কিছুটা সয়ে গেলে আমি ঘরে মধ্যে দুইটা সেইপ দেখতে পাই । একজন আর একজন কে মাথা তুলে আছাড় মারছে । শয়তানটাকে চিনতে পারলাম । তাহলে এই আবীর । কি বলিষ্ট সেই শরীর । যদিও দেখা যাচ্ছিল খুবই বলিষ্ট আর সুঠম দেহের অধিকারী সে ।
একটু পর সব শান্ত হয়ে গেল । আমি সেই সেইপটাও হারিয়ে ফেললাম । প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আরো ফিরে এল । দেখি ঘরে কেউ নাই । না আবীর না ঐ শয়তান টা ।
গেল কোথায় ?
আবার ও ফোন বেজে উঠল ।
“ কোথায় গেলে তুমি ?”
“ আমি আছি আশে পাশে ।“
“ কেন ? আশে পাশে কেন ?”
“ আমার সামনে এসো । আমি তোমাকে দেখবো ।“
“ নীলু একটু বোঝার চেষ্টা কর ।“
“ না আমি কিছু বুঝতে চাই না । তুমি আমার সামনে এসো । এসো ।“
“ এভাবে আসা যায় না । আমার জগত থেকে তোমার জগতে এভাবে যাওয়ার নিয়ম নেই । একটু বোঝার চেষ্টা কর ।“
“ তাহলে একটু আগে কেমন করে এলে ?”
“ আমি নিয়ম ভেঙ্গেছি । এজন্য আমাকে শাস্তি পেতে হবে ।“
“ আমি কিছু বুঝতে চাই না । আমি তোমাকে সামনে দেখতে চাই ।“
এই বলে আমি ফোন রেখে দিই । আবীর আরো অনেক বার ফোন করে আমি ধরি না । আমি জানি তুমি অন্য কোন জগতের । কিন্তু তবুও তোমাকে ছাডা যে কিছুই ভাবতে পারি না । তোমাকে কাছে পাবার জন্য যে মন আমার কেমন করে ।
একটু সামনে আসলে কি হয় ? আমি তোমাকে যে এই বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরতে চাই ।
পরদিন রাতে আমি বান্দায় বসে আছি । এমন সময় ওর ফোন । সারা দিনে একবারও ফোন ধরি নি । এখন ধরি ।
“খুব কি রাগ করেছো ?”
আমি কিছু বলি না ।
“নীলু কাল তোমাকে বলেছিলাম না আমি নিয়ম ভেঙ্গেছি । আমাকে শাস্তি পেতে হবে ।“
মনটা কেমন যেন অস্থির হয়ে ওঠে ।
“কি বলছ তুমি ?”
“ হু এটাই আমার শেষ ফোন তোমার কাছে ।“
বুক ফেটে কান্না আসে।
“আমাকে তোমাদের এই জগত্ থেকে অনেক দুরে পাঠানো হচ্ছে । অনেক দুরে । আমি কোন কথা বলতে পারি না।“
কেবল দুচোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে ।
“তবে যাবা আগে একটা ইচ্ছা আমি পুরন করবো । আমাকে না তুমি জড়িয়ে ধরেত চেয়েছিলে । বায়ে তাকাও।“
আমি বারান্দায় কোনার দিকে তাকালাম । কালকের সেই বলিষ্ঠ শেইপ তৈরি হচ্ছে । আর সেই মিষ্টি গন্ধটাও । বারান্দায় কোনাটা যেন আরো বেশি অন্ধকার হয়ে গেছে । অন্য কেউ হলে হয়তো ভয়েই মরে যেত ।
কিন্তু আমার কেন যানি কোন ভয় লাগল না । কোন কিছু না ভেবেই আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম ।
কই ঠান্ডা না তো ! আমি তো এতো দিন জেনে এসেছি যে এদের শরীর নাকি খুব ঠান্ডা হয়।
“কই তুমি তো ঠান্ডা নাও।“
আবীর আমাকে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে।
“ঠান্ডা হব কেন?”
“না এতো দিন তো শুনেছি তোমাদের শরীর ঠান্ঠা হয়।“
ও হাসে । “ভুল শুনেছ।“
“ আমি তোমাকে যেতে দেবো না । কিছুতেই যেতে দেবো না । দেখি তুমি কিভাবে আমাকে ছেড়ে যাও।“ আবীর কোন কথা বলে না ।
কিছুক্ষন পর ও বলল “যেতে হবে ।“
“ না না । আমি যেতে দেবো না ।“
“ এমন করলে কি হয়!”
ও আমার সামনে দাড়ায় । আমি এখনও ওকে দেখতে পাচ্ছি না । কেবল একটা ছায়াই দেখছি ।
“নীলু । এই অনুভুতির কোন তুলনা হয় । আমি আমার বাকিটা জীবন এই অনুভুতি নিয়েই থাকবো । আর তুমি !”
আমি কোন কথা বলতে পারি না । কেবল চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে ।
ও বলল “তুমি যথন বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠবে আবীর নামেরই একজন তোমাকে অনেক ভালবাসবে । আমার মতই তোমাকে ভালবাসবে । তুমি ভাল থেকো ।“
“ না না আমি তোমাকে যেতে দেবো না।“
কিন্তু যেতে দিতেই হয় । ধীরে ধীরে ওর ছায়াটা মিলিয়ে যায় ।

( সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১২ সকাল ১১:১০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×