১। ১৯৫ জন চিন্হিত ও ১১,০০০ প্রাথমিক দোষী পাকিস্তানী সামরিক-বেসামরিক নাগরিকের বিনা বিচারে পাকিস্তানের নিকট হস্তান্তর।
২। বঙ্গবন্ধু কর্তিক ঘোষিত সাধারন ক্ষমা।
৩। প্রেসিডেন্ট জিয়া কর্তিক দালাল আইন বাতিক ও তথ্য প্রমানের অভাবে বিচার ঝুলে যাওয়া ১০,০০০ জন দেশী কোলাবরেটরের মূক্তি।
১ম ব্যাপারটি নিয়ে ইতি মধ্যেই আমি লেখা-লেখি করেছি এবং এটা নিয়ে অনেকেই ইতিমধ্যে লিখেছেন।আজ ২য় ব্যাপারটি নিয়েই লিখছি কারন আজকেই এ ব্যাপারে কিছু তথ্য পেয়েছি আমার ব্লগের সৌজন্যে-
বঙ্গবন্ধু আমলে দালাল আইনে আটক ব্যক্তিদের মোট সংখ্যা: ৩৭,৪৭১
নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা: ২,৮৪৮
নিষ্পত্তিকৃত মামলাগুলর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যাক্তির সংখ্যা : ৭৫২ জন, বাকি ২,০৯৬ জন খালাস পেয়েছিল।
অর্থাৎ এই সাধারন ক্ষমা ঘোষনার আওতায় প্রায় ২০ হাজার লোক মুক্তি পায় বাকি প্রায় ১০ হাজার বিচারের জন্য অপেক্ষমান ছিলেন।
এই সাধারন ক্ষামা যাদের জন্য প্রযোজ্য নয় তারা হলেন [ ১৯৭২ সালের দালাল (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশ (পি.ও নং-৮, ১৯৭২ সালের)]
১. দুনম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত ব্যক্তিদের ও অপরাধ সমূহের ক্ষেত্র ছাড়া :
(ক) ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী দন্ডবিধি ৪০১ নং ধারা অনুযায়ী উল্লিখিত আদেশবলে আটক ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের রেহাই দেওয়া হচ্ছে এবং উল্লিখিত আদেশ ছাড়া অন্য কোনো আইনবলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার অনতিবিলম্বে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
(খ) কোনো বিশেষ ট্রাইবুনালের সম্মুখে অথবা কোনো বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উক্ত আদেশবলে বিচারাধীন সকল মামলা সংশ্লিষ্ঠ ট্রাইবুনাল ও ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে প্রত্যাহার করা হবে এবং উল্লিখিত আদেশ ছাড়া অন্য কোনো আইনে তাদের বিরুদ্ধে বিচারাধীন কোনো মামলা বা অভিযোগ না থাকলে তাদের হাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
(গ) কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে উল্লিখিত আদেশবলে আনীত সকল মামলা ও তদন্ত তুলে নেওয়া হবে এবং উল্লিখিত আদেশ ছাড়া অন্য কোনো আইনে বিচার বা দন্ডযোগ্য আইনে সে অভিযুক্ত না হলে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। উল্লিখিত আদেশবলে ইস্যু করা সকল গ্রেফতারী পরোয়ানা, হাজির হওয়ার নির্দেশ অথবা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে হুলিয়া কিংবা সম্পত্তি ক্রোকের নোটিশ দেয়া থাকলে তা প্রত্যাহার বলে বিবেচিত হবে এবং গ্রেফতারী পরোয়ানা অথবা হুলিয়ার বলে কোনো ব্যক্তি ইতিপূর্বে গ্রেফতার হয়ে হাজতে আটক থাকলে তাকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হবে। অবশ্য সে ব্যক্তি উল্লিখিত দালাল আদেশ ছাড়া কোনো বিচার বা দন্ডযোগ্য অপর কোনো আইনে তার বিরুদ্ধে যদি কোনো মামলা না থাকে তবেই।
যাদের অনুপস্থিতিতেই সাজা দেওয়া হয়েছে অথবা যাদের নামে হুলিয়া বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ঝুলছে তারা যখন উপযুক্ত আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা ও বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করবে কেবল তখনই তাদের বেলা ক্ষমা প্রযোজ্য হবে।
২. দন্ডবিধির ৩০২ নং ধারা (হত্যা), ৩০৪ নং ধারা, ৩৭৬ ধারা (ধর্ষণ), ৪৩৫ ধারা (গুলি অথবা বিস্ফোরক ব্যবহার করে ক্ষতিসাধন), ৪৩৬ ধারা (ঘর জ্বালানো) ও ৪৪৮ ধারায় (নৌযানে আগুন বা বিস্ফোরণ) অভিযুক্ত ও সাজাপ্রাপ্তগণ এক নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ক্ষমার আওতায় পড়বে না।
এই সাধারন ক্ষমার আওতায় যেমন অনেক পাতি রাজাকার মুক্তি পেয়েছেন ঠিক তেমনি অনেক রাঘব বোয়াল ও মুক্ত হন -
'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, আটককৃত বা সাজাপ্রাপ্ত অনেক প্রাক্তন নেতা এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আওতায় মুক্তি লাভ করিবেন। তিনি বলেন যে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রাক্তন গভর্ণর ডাঃ এ এম মালেক ও তাহার মন্ত্রীসভার সদস্যবৃন্দ শীঘ্রই মুক্তিলাভ করিবেন। অন্যদের মধ্যে যাহারা মুক্তি পাইবেন তাহাদের মধ্যে ডঃ কাজী দীন মোহাম্মদ, ডঃ হাসান জামান, ডঃ সাজ্জাদ হোসেন, ডঃ মোহর আলী (প্রত্যেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দালাল শিক্ষক) ও খান আবদুর সবুরও রহিয়াছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাহাদের সম্পত্তি ফেরত পাইবেন এবং দেশের নাগরিকদিগকে প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করিবেন। ' - তথ্যসূত্র ১
তা এই পূর্ব পাকিস্তানের প্রাক্তন গভর্ণর ডাঃ এ এম মালেক ও তাহার মন্ত্রীসভার সদস্যবৃন্দ হলেন - (কৃতজ্ঞতা: ব্লগার এহহামিদা [আমু ব্লগ])
১)ড: এ.এম. মালিক
২)আবুল কাশেম
৩)আব্বাস আলী খান (জামাতের প্রাক্তন সেক্রেটারী জেনারেল, মুজাহিদ যার স্থলাবিষিক্ত হয়)
৪)আখতারুদ্দিন আহমেদ
৫)এ.এস.এম. সোলায়মান
৬)ওবায়দুল্লাহ মজুমদার
৭)প্রফেসর শামসুল হক
৮)মাওলানা মোহাম্মদ ইশহাক
৯)নওয়াজিশ আহমেদ
১০)মাওলানা এ.কে.এম ইউসুফ (তত্ব আমলে নিজামী গ্রেফতার হওয়ার পরে এই লোক ছিল ভারপ্রাপ্ত আমির)
১১) মং সু প্রু চৌধুরী!!
অথচ এই নরপশুগুলর নারকিয় কর্মকান্ডের বিষদ বর্ননা পাওয়া যায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রচারিত তুমুল জনপ্রিয় 'চরমপত্র' এর রচয়িতা এম আর আখতার মুকুল রচয়িত 'চরমপত্র' গ্রন্থে। এই লোকগুলর অধিনেই পাক আর্মি সারা বাংলায় নারকিয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ৯ মাস !
দ্ধিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার অথবা সাম্প্রতিক সময়ের বুশ হয়ত এক জন ব্যাক্তিকে ও নিজ হাতে হত্যা করেনি ইরাকে। কিন্তু তাই বলে এর দায় বা বিচার এড়াতে পারেনি হিটলার; যদি বিচার হয় তবে বুশ ও দন্ডিত হবেন নিশ্চিত। তবে কেন আমরা ৭১ এর ঐ সব মাস্টারমাইন্ড গুলর বিচার করব না ? পাকিগুলর ক্ষেত্রে না হয় কিছুই করার নাই কিন্তু এগুল ত বাংলাদেশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে, তবে এগুলকে কেন ধরা হবে না ?
আপডেট : অনেক হাম্বা আবার এই বলে পার পেতে চায় যে এরা সবাই মৃত। এই মিথ্যাচারের মূল কারন হল তাদের পা চাপা স্বভাব, তারা স্বীকার করতে লজ্জা পায় যে 'শেখ মুজিব ঐ নরপশু গুলকে মুক্তি দিয়ে অন্যায় করেছেন।'
এরা যে সবগুল মরে যায় নি এটা কি তারা জানেন? না কি না জেনেই কথা বলেন ?
সেক্টর কমান্ডার ফোরাম প্রকাশিত ৫০ যুদ্ধাপরাধীর তালিকা হতে
১)ড: এ.এম. মালিক -২৩ নং (মৃত)
২)আবুল কাশেম
৩)আব্বাস আলী খান (জামাতের প্রাক্তন সেক্রেটারী জেনারেল, মুজাহিদ যার স্থলাবিষিক্ত হয়)- ৭ নং (মৃত)
৪)আখতারুদ্দিন আহমেদ
৫)এ.এস.এম. সোলায়মান-১৪ নং
৬)ওবায়দুল্লাহ মজুমদার -৩৯
৭)প্রফেসর শামসুল হক
৮)মাওলানা মোহাম্মদ ইশহাক -৩৩
৯)নওয়াজিশ আহমেদ-৪৯ নং (মৃত)
১০)মাওলানা এ.কে.এম ইউসুফ (তত্ব আমলে নিজামী গ্রেফতার হওয়ার পরে এই লোক ছিল ভারপ্রাপ্ত আমির)-২
১১) মং সু প্রু চৌধুরী!!
তা হিটলারের নাম ত নিশ্চই তারা জানেন
তথ্যসূত্র:
১। অমি রহমান পিয়াল [আমার ব্লগ] http://omipial.amarblog.com/posts/111505
২। এম আর আখতার মুকুল Click This Link
৩। সাঈদ আহমেদ [সচলায়তন ব্লগ] http://www.sachalayatan.com/syeed_ahamed/32412
আমার আগের পোস্ট সমূহ:
১। Click This Link
২। Click This Link
৩। Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




