somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যে কারনে মানবতাবিরোধী বিচারে রুপান্তরিত হল

১৪ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৫ মাস আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার ঘোষনা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরনি পার হওয়া সরকার হটাৎ করেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবীকে মানবতাবিরোধী বিচারে রুপান্তরিত করে ফেলেছে। সরকারী দলের সাপোর্টার না হলেও অনেক তরুন-তুর্কি এই বিচারের দাবিকে কেন্দ্র করে তাদের ভোট দিয়েছিল ২০০৭ এ। বিশ্লেষকরা ২০০৭ এর লেন্ড স্লাইড ভিক্ট্রির অন্যতম প্রধান কারন হিসেবে এই 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' দাবির প্রতি তরুন সমাজের অকুন্ঠ অবস্থানকে চিন্হিত করেছেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে সরকারের এই ডিগবাজি সভাবতই সতাশ করেছে তরুন-তুর্কিদের (সাথে আমাকেও কারন আমিও সরকারী দলের মেনিফেস্টোকে সত্য ভেবেছিলাম)। অতপর হতাশ হয়ে খুজতে শুরু করলাম ডিগবাজির পেছনের কারনগুল।

আমার আগের পোষ্টে পাকি কুটনৈতিক সাফল্যের কাহিনী আগেই বর্নিত হয়েছে (লিংক Click This Link)। অনেকেই বলে থাকেন শিমলা চুক্তির মাধ্যমে ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিন্হিত (এই চিন্হিতকরন প্রকৃয়াটা কারা, কি ভাবে পরিচালনা করেছিল তা আমার কাছে এখনও অজানা।) ব্যাক্তিদের ক্ষমা করে দেয়া হয়। এই দাবির মূল বক্তব্য ঠিক থাকলেও এতে কিছু তথ্যগত ভূলছিল। ফলে আমি আগের পোস্টে বলেছি শিমলা চুক্তিতে আদও এই ধরনের কোন ধারা ছিল না। ক্ষমা করার প্রশ্ন অবান্তর।


অবশেষে আমি মার্সি ঘোষনা করা চুক্তিটির হদিস পেয়েছি। শিমলা চুক্তি হয়েছিল ১৯৭২ সাথে ভারত-পাকিস্তানের সাথে। উল্লেখ্য পাকিস্তান তখনও বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি ফলে এই চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ নিয়ে কোন কথাই ছিল না। মূলত যে চুক্তির মাধ্যমে সেই ১৯৫ জন হত্যা-লুন্ঠন ও মানবতা বিরোধী কাজে জরিত চিন্হিত যুদ্ধাপরাধীদের 'ক্ষমা' প্রদর্ষন করা হয় সেই চুক্তিটি সম্পাদিত হয় ১৯৭৪ সাথে দিল্লিতে

13. The question of 195 Pakistani prisoners of war was discussed by the three Ministers in the context of the earnest desire of the Governments for reconciliation, peace and friendship in the sub-continent. The Foreign Minister of Bangladesh stated that the excesses and manifold crimes committed by those prisoners of war constituted, according to the relevant provisions of the UN General Assembly resolutions and international law, war crimes, crimes against humanity and genocide, and that there was universal consensus that persons charged with such crimes as 195 Pakistani prisons of war should be held to account and subjected to the due process of law. The Minister of State for Defense and Foreign Affairs of the Government of Pakistan said that his Government condemned and deeply regretted any crimes that may have been committed.


15. In the light of the foregoing and, in particular, having regard to the appeal of the Prime Minister of Pakistan to the people of Bangladesh to forgive and forget the mistakes of the past, the Foreign Minister of Bangladesh stated that the Government of Bangladesh had decided not to proceed with the trials as an act of clemency. It was agreed that the 195 prisoners of war might be repatriated to Pakistan along with the other prisoners of war now in the process of repatriation under the Delhi Agreement.

চুক্তির মূল টেক্সট রয়েছে এখানে - http://www.genocidebangladesh.org/?p=196

উল্লেখ্য এই চুক্তির কিছুদিন আগেই পাকিস্তান বাংলাদেশকে আনুস্ঠানিক ভাবে স্বকৃতি দেয়। আর তৎকালিন বাংলাদেশ সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা মূলত পাকিস্তানের স্বকৃতি প্রাপ্তি ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলকে খুশি করতেই এই অভাবনিয় 'ক্ষমা' ঘোষনা করেছিল।


আর সম্ভবত একারনেই ৭৪ স্বাক্ষরিত ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তান তৃপক্ষিয় চুক্তির অভিশাপ 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' এর দাবি থেকে সরে আসতে বাধ্য করেছে বর্তমান সরকারকে। ফলে হত্যা-ধর্ষনের মাস্টারমাইন্ডগুলকে ছেড়ে দিয়ে তাদের চেলাগুলর বিচার করেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে আমাদের। কিন্তু কেন? কোন নৈতিক অধিকারে তৎকালিন শাসকগোষ্ঠি তাদের ক্ষমা করল ?

৭১ এর দেশি হায়েনাগুলকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার জন্য ৭৫ পরবর্তি সরকারগুলকে দায়ি করা হয় অহরহ; তাহলে মূল কালপ্রিটদের পৃষ্ঠপোষকতাই শুধু নয় বরং স্বসম্মানে মুক্তিদানকারি ৭৫ পূর্ববর্তি সরকার কেন দায়ী হবে না ? তারা কেন দ্বিগুন হারে সমালোচনার শিকার হবে না ?

বর্তমান সরকারও পূর্ববর্তীদের অনুসরন করে আবার পাকি হায়েনাদের মুক্তি দিতে যাচ্ছে, অখচ যুদ্ধাপরাধী/ মানবতাবিরোধী যে নামেই ডাকুন না কেন ৭১ এর অপরাধের দায় কি কোন কালেই ইয়াহিয়া,টিক্কা, নিয়াজি রাওফরমান আলী গংদের ঘাড়ে চাপাতে পারব না আমরা?

রেফারেন্স:

১। ৭৪ এ স্বাক্ষরিত চুক্তির হদিস পেয়েছি এখানে Click This Link উতসাহীরা পড়তে পারেন বেশ- কিছু অজানা তথ্য রয়েছে এখানে (১ম অংশ), পো্স্ট রিলেটেড না হওয়ায় তা যুক্ত করা হয় নি
২। http://en.wikipedia.org/wiki/Simla_Agreement
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৯:৪২
২২টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×