জনগন ও তাদেরকে সময় দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও জাতিসংঘকে এর সাথে সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়েছে বিভিন্ন সমেয়ে। অবশেষে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছিল যে তারা শুধু প্রশিক্ষন, তথ্য আদান-প্রদান ইত্যাদি লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে। ( ১৪ মাস পড় আমরা পেলাম নাম সর্বোস্য এক আইনজীবি পেনেল। ব্যাক্তিগত ভাবে যাদের নাম আমি আগে কখনও শুনিনি। আর প্রতিশ্রুত ট্রেইনিং এর ই বা কি খবর?)
শুরুতে সরকারের এই অনড় অবস্থান দেখে পাকিস্তানও কাউন্টার কুটনৈতিক তৎপড়তা শুরু করে, যা বিভিন্ন মন্ত্রী ও পত্রিকা মারফত আমরা জানতে পারি। অবস্থা এতটাই খারাপ হলে যে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এ ব্যাপারে করনিয় নির্দেশনা চেয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে। আবারও দৈনিক পত্রিকাগুল হতাশার খবর দিল- বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় না কি এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনাই প্রদান করেনি।
সম্ভবত পাকিস্তানি কূটনীতির কাছে বাংলাদেশ হার মেনেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট ও আইন মন্ত্রী বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বাংলাদেশের আভন্তরীন ব্যাপার। এর সাথে অন্য দেশের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন মূল্য নেই।
খালি চোখে উপরের মন্তব্য সত্য মনে হলেও এর মাধ্যমে তারা দায় এড়িয়েছেন এবং পরোক্ষ ভাবে হার স্বীকার করেছেন পাকিস্তানি কূটনীতির কাছে । পাকিস্তানীদের বিচারের বাইরে রেখে শুধু দেশীয় চেলাগুলর বিচার করে বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক ব্যপারকে আভ্যন্তরিন ব্যপারে পরিনত করল। এর মধ্যে আইন মন্ত্রী আমেরিকা ঘুরে এসে 'যুদ্ধাপরাধের বিচার' কে 'মানবতা বিরোধী বিচার' নামে পুনঃ নামকরন করেছেন। সরকার ঘোষিত প্রধান অভিযুক্তদের তালিকায় ও কোন পাকিস্তানি অভিযুক্তের নাম স্থান পায়নি।
মুজাহিদ- নিজামিরা যেমন চিন্হিত অপরাধী ঠিক তেমনি ভাবে চিন্হিত জে টিক্কা, রাও ফরমান আলী, জে ইয়াহিয়া ও নিয়াজী গং। অথচ সচেতন ভাবেই সরকার ও তাদের মন্ত্রী এমপিরা এবং এই ব্লগের রাজাকার বিরোধী সচেতন ব্লগারগন এই ব্যাপারটা এড়িয়ে যাছেন। এ যেন দেখেও না দেখার ভান করা।
৭১ এর গনহত্যা পৃথীবির ইতিহাসে জঘন্যতম হত্যা কান্ড হলেও গত ৩৮ বছরে আমরা এর আন্তর্জাতীক স্বিকৃতি আদায় করতে পারিনি
হয়ত টেকনিকাল অনেক জানা-অজানা কারনেই পাকি নরপশুগুলকে আদালতের সামনে উপস্থিত করে বিচার করা সম্ভব হবে না। এ ক্ষেত্রে অনেকে শিললা চুক্তির (http://en.wikipedia.org/wiki/Simla_Agreement) প্রতিবন্ধকতা খুজলেও আমি এর কোন ভিত্তি খুজে পাইনি। আর সেই পাকি ১৯৬ জন চিন্হিত অপরাধী আত্নসমর্পন করে ভারতের কাছে এবং ভুট্ট-ইন্দিরা স্বাক্ষরিত শিমলা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মদ্ধে। সুতরাং ঐ চুক্তি মানতে বাংলাদেশ বাধ্য নয়।
যদি কোন কারনে তাদেরকে আদালতে আনা নাই যায় তবে তাদেরকে অনুপস্থিত রেখেই বিচার করা হোক। পৃথিবীর অন্যান যুদ্ধাপরাধ বিচারেও এই পথ অনুসরন করা হয়েছে। সুতরাং পাকিস্তানী নরপশুদের ছাড় দেয়ার কোন মানে নেই। আমরা চাই সম্পূর্ন ইতিহাসের প্রতিফলন ঘটুক এই মানবাতা বিরোধী/যুদ্ধাপরাধ বিচার কার্যে। গো আজম, নিজামি গং দের পাশাপাশি দন্ডিতের খাতায় নাম উঠুক ইয়াহিয়া, নিয়াজীর।
যদি আমরা তা নিশচিত করতে ব্যার্থ হই তবে ভবিষ্যত প্রজন্ম কখনই আমাদের ক্ষমা করবে না। আসুন সম্পূর্ন সত্য উন্মচনে সচেষ্ট হই। দাবী জোড়দার করি গো আজম, নিজামি, ইয়াহিয়া, নিয়াজীর গংদের বিচারের।
যারা ভাবছেন আজ নিজামি-মুজাহিদের বিচার করে কাল ইয়াহিয়া, নিয়াজীর বিচার করবেন; তাদের কাছে গুটিকয় প্রশ্ন-
ঘোড়ার আগে গাড়ি ছোটানোর উদ্দেশ্য কি ?
মূল্য কালপিটদের ছেড়ে দিয়ে তাদের চেলাগুলর বিচার করে আমরা কোন মুখে সভ্য সমাজের সামনে দাড়াব?
এটাই কি আমাদের শৌর্য-বির্যের পরিচয়?
২০১০ এ এসে কি আমরা পাকিস্তানের কূটনীতির কাছে হেরে যাব ? আমরা কি আংশিক সত্য বিচারের মাধ্যমে প্রতিস্ঠা করব না কি সম্পূর্ন সত্য প্রতিস্ঠা করব ?
সম্প্রতি করা এক মন্তব্যে পাকিস্তানী হাই কমিশনার বলেছেন যে, 'মনবতাবিরোধী বিচারে তার দেশের কোন আপত্তি নাই'। এই কথা শুনে আমাদের সরকারের কিছু মাথামোটা ক্লাউন আত্নপ্রস্বাদে নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়াচ্ছে। উল্লুকগুল যদি বুঝত যে এই মন্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তানী হাই কমিশনার বাংলাদেশের জমিনে দাড়িয়েই তাদের কূটনৈতিক বিজয়ের ঘোষনা দিল। পাকিস্তান আবার ও তার সেনাবাহীনির কলঙ্ককে মাটি চাপা দিতে হমর্থ হল এই ২০১০ এ এসেও। যেভাবে তারা ১৬৫-৯৫ জন কুলাঙ্গারকে বাচিয়েছিল ৭২-৭৪ এ।
অট: শিলমা চুক্তি দেখে আমার চোখ চরখ গাছ। সারা জীবন শুনে আসা কথার সাথে আসলের অমিল অকল্পনিয়। এতে কোথাও বলা হয়নি যে পাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যাবে না।
আপডেট : অবশেষে সেই ১৯৫ এর ক্ষমা ঘোষনাকরী চুক্তীর হদিস পেলাম Click This Link । এখন বুঝছি, সরকার অতীতের ব্যার্থতা ঢাকতেই পাকি ১৯৫ জনের নাম মুখে আনে না।
তথ্যসূত্র:
১। http://en.wikipedia.org/wiki/Simla_Agreement
২। Click This Link
৩। Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১০ দুপুর ২:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




