প্রথমে নিজের ঢোলটা নিজে একটু পিটিয়ে নিই। সকালে বের হই অপিষ এর উদ্দেশ্যে। বিকেলে একটা টিউশানি সেটা শেষ করে আরেকটা। তারপর ঘরে ফেরা। এর ফাঁকে আমার ব্লগিং জীবন। সুতরাং আমি চাইলেও সব পড়া পড়তে পারিনা, যারা আমার লেখায় কমেন্ট করে চলেন অনবরত অন্তত তাদের লেখা পড়াটা দায়বদ্ধতার মাঝেই পড়ে, সেটাও কুলিয়ে আসতে পারিনা।
আজকে দেখতে পেলাম মাসিক কবিতার আর গল্পের দুই দুইটা পোষ্ট। এসব নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ ইত্যাদি। আমার যেহেতু সময় নেই তায় আমার আগ্রহ দুইটা বিষয় এর একটা হল ছড়া অন্যটা অণুগল্প। কবিতা সংকলন এর মাঝে ছড়ারা স্থান পায়না তায় আমার ইচ্ছা ছিল সেটা নিয়ে কাজ করার কিন্তু সম্ভব নয়। প্রসঙ্গটা তুলে দিলাম সেটা নিয়ে কেউ একজন লেগে যেতে পারেন। অন্য বিষয়টা অণুগল্প সেটা নিয়ে লাগার কিছু নেই গল্প এর সাথে অণুগল্পগুলো ঠিকই স্থান করে নিবে। তবে আমার একটা খুঁতখুঁতে ভাব হল কেউ কেউ ছোট গল্পকে আর সাদামাটা কিছু কথাকে অণুগল্প শিরোনাম দিয়ে চালিয়ে দেন, তার মাঝে কেউ বুঝেই করেন কাজটা আবার কেউ না বুঝে।
আমি করলাম একটা কাজ, স্রাঞ্জি সে ভাই এর পোষ্ট করা সামহোয়্যারইন ব্লগ গল্প সঙ্কলনঃ শুভ্র সেপ্টেম্বর ১৮ এর ওখান থেকে অণুগল্পগুলো চোখ বুুলিয়ে নিলাম (যে গল্পগুলোর শিরোনাম অণুগল্প লেখা ছিল কেবল সেগুলো)। এবার সে প্রসঙ্গে কিছু কথা শেয়ার করা যাক।
নিচু তলাৱ উকিল লিখেছেন নিচু তলার উকিল অণুগল্পটা আমার ভাল লেগেছে। কিছুটা ব্যাতিক্রমও ছিল। শুধু অনুগল্প শিরোনামটা অণুগল্প হবে।
ফেনা লিখেছে অনু গল্পঃ কুলসুম গল্পটা আমার মোটামুটি লেগেছে, অণুগল্প বিচারে সাদামাটা লেগেছে। এটা অণুগল্প হয়ে উঠতে কিংবা এভাবে লিখতে লিখতে আরো কিছু অভিজ্ঞতা, প্রচেষ্টা ইত্যাদি যোগ হতে থাকলে ভবিষ্যতে ভালো করার সম্ভবনা থাকবে এবং সেটা অণুগল্প বিচারে। গল্প বিচারে পরিশ্রম আরো কম করলেও চলবে। কিছু টাইপো ছিল। আর শিরোনামে অনু এর জায়গায় অণু হবে।
নিচু তলাৱ উকিল লিখেছেন অনুগল্প- নসিব খুব সুন্দর একটা গল্প। আপনার লেখার হাত ও মান খুব ভাল। তবে এই গল্পটা অণুগল্প বিচারে খুব একটা অণুগল্প হয়ে উঠেনি। শুধু গল্প বিচারে খুব সুন্দর বলা যায়। শিরোনামে অণু হবে অনু এর জায়গায়।
একটা মজার কান্ড ঘটল, স্রাঞ্জি সে ভাই এর পোষ্টে অণুগল্প নাম্বার ৯ এর লিংক ভুলক্রমে নুরুন নাহার এর একটা রম্য গল্প যুক্ত হয়েছে, আমি বারবার ক্লিক করেও কাইকরকে পেলামনা। দেখা যাক কাইকর এরটা ওনার পোষ্টে গিয়ে উদ্ধার করা যায় কিনা, সেটা করব শেষের দিকে।
শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল লিখেছেন অণুগল্প: টিক..টিক..টিক ভাল লেগেছে অণুগল্পটা। সাদামাটা ভাবে পড়লে অনেকেই মজা পাবেনা। আমাতেও দুইএকবার চোখ বোলাতে হয়েছে। অণুগল্পে এই কাজটা খুব করতে হয়। কিছুটা অঙ্কের মতো কাজ করে, কোন এক জায়গায় সূত্র গুজে থাকে। অণুগল্পের ধরনই এমন। বিশেষত শেষ লাইনে সূত্র থাকে বেশীরভাগ, নামকরণেও সূত্র থাকে যেমনটা কবিতার বেলায় হয়ে থাকে। ঘড়ির টিকটিক শব্দগুলো মনোসংযোগে ব্যাঘাত এবং বিরক্তির কারণ হতে হতে আবিস্কার হয় এটা তার নিজেরই হৃৎপিণ্ডের শব্দ। অবশেষে সেই শব্দটা বন্ধ করার জন্য ফল কাটার ছুরির ব্যাবহার। বুঝতেই পারছেন শব্দ রোধ করার জন্য আত্মহনন এর পথই বেঁছে নেয়া। খুব সুন্দর একটা ব্যাপার।
কাইকর লিখেছেন কাইকর কামলার ছোট সংসার(অণুগল্প) কাইকর ভাল লিখেন, লেখায় ভিন্নতা আছে, প্রতিশ্রুতিশীল একজন লেখক। ভবিষ্যতে আমরা কাইকর থেকে আরো ভাল ভাল লেখা পাব সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। গল্পটা খুব সুন্দর কিন্তু অণুগল্প বিচারে অণুগল্প হয়ে উঠেনি। এই কমেন্ট আমি ওনাকেও ওনার একটা অণুগল্পে করেছিলাম একটুু ঘুরিয়ে বিনয় এর সাথে।
এক ভাই আছেন ইদানিং দেখছিনা, আগে প্রতিদিন লিখতেন, সাদামাটা একটা ঘটনা লিখে শিরোনাম দিয়ে দিতেন অণুগল্প। ওনাকে কমেন্ট করেছি এটা অণুগল্প হয়ে উঠছেনা, ওনি বিরক্ত হয়েছেন, সে থেকে ওনার লেখা পড়ি কিন্তু কমেন্ট করিনা, পড়তাম কারণ কোন চেন্জ আসল কিনা দেখার জন্য, কমেন্ট করতামনা কারণ অহংকার ভাবটা আছে বলে।
সেই যাই হোক, আমার এই লেখার উপজীব্য হল স্রাঞ্জি সে ভাই এর পোষ্ট থেকে, আমার পক্ষে সময় বের করার সময় নেই ব্লগে ঘেটে পড়ে বের করে আনব, তাই রেডিম্যাড যেটা পেলাম সেখান থেকেই লেখা। অণুগল্প সম্পর্কে যা বললাম এবং বাছ-বিচার এটা আমার ব্যাক্তিগত অভিমত, এটার সাথে সবার একমত হবার প্রয়োজন নেই। আমি অণুগল্পে যা খুঁজি সেটা হলঃ
১) আসলেই কী অণুগল্প লেখার চেষ্টা ছিল নাকি গল্প ছোট বলে অণুগল্প শিরোনাম দিয়ে দিল
২) গল্প শেষে কোন মেসেজ রেখে গেল কিনা
৩) গল্পে টুইস্ট ব্যবহার করেছে কিনা
৪) গল্প বড় করে লেখার লোভ ছাড়তে পারল কিনা। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। অণুগল্প এমন একটা বিষয় যেটার ভাবার্থ দিয়ে একটা উপন্যাসও হয়ে যেতে পারে কিংবা কয়েকপর্বের একটা বড় গল্পও হয়ে যেতে পারে, এখন লেখক এত বড় একটা লেখা ফেলে দিয়ে একটা ছোট গল্প লিখতে আগ্রহী কিনা সেটা আমি দেখার চেষ্টা করি। কারণ অণুগল্প লিখতে হলে বড়লেখা ছাড়ার লোভটা থাকতে হবে। অনেক কথা না বলে সামারাইজ করে নিয়ে আসা, এই সেক্রিফাইস বা লোভটা সামলাতে না পালে অণুগল্প লেখা মানে দুই নৌকায় পা দেয়া।
৫) ---------------------------------- যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা হয়তো বলাই হয়ে উঠছেনা তায় ডট দিয়ে পাঁচেই রাখলাম।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:২৮