somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুলটাইম মায়েদের জীবন কি আসলেই সহজ?

০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকে ভাবেন বাড়িতে বসে বাচ্চা লালন-পালন তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়... বরং ন'টা ছ'টা অফিস করা তার চাইতে ঢের কঠিন। ভুল! বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। একটা সময় চাকরি করেছি, মা হবার পর ছেড়ে দিলাম। ভাববেন না কারও চাপে পড়ে করেছি - একেবারে নিজের ইচ্ছেতে করেছি। দু'টো জীবন তুলনা করলে এখন বুঝি ২৪ ঘন্টা অন্য একটি মানুষের যত্ন নেয়া কি কঠিন এক দায়ীত্ব। শান্তিমত টেবিলে বসে এক মুঠ ভাত খাবার উপায়ও নেই। ভাজি শেষ করে সবে মাংসের দিকে হাত বাড়াবো অমনি সদর দফতর থেকে ডাক! এই হচ্ছে অবস্থা।

জ্বর হলে একটু বিছানাতে পিঠ ঠেকাবো তারও যো নেই। বস্ বড্ড কড়া, সারাদিন দৌড়ের উপর রাখতে ভালবাসেন! প্রবাসে আশেপাশে এমন কেউ থাকেনা যে তার কাছে আপনি ১৫ মিনিটের জন্য বাচ্চাটিকে রাখতে পারেন। ২৪ ঘন্টা বাচ্চা আপনার সাথেই!

যাই হোক, হাঁটি হাঁটি পা করে মেয়ের দু'বছর হয়ে গেছে। এখন কষ্ট অনেক কম। ঘন্টায় ঘন্টায় খাওয়ানো, ডায়পার বদলানো আর কোলে করে ঘুম পাড়ানোর দিন শেষ। প্রথম দিকের কথা মনে হলে মাঝে মাঝে এখনও শিউরে উঠি যদিও - কি যে দিন গেছে! আমরা ভাবতাম আর কখনও হয়তো এক ঘুমে রাত কাবার করতে পারবো না। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত্ সেসব দিন শেষ হয়েছে - এক ঘুমেই রাত কাবার হয়ে যায় এখন!

বাচ্চা বড় করতে গিয়ে অনেক কিছু ছেড়ে দিতে হয়েছে। অনেকে কষ্ট পেয়েছেন আমার এই সিদ্ধান্তে। বলেছেন, অত পড়ালেখা করে কি লাভ হলো তাহলে?? সবচেয়ে বড় লাভ হয়েছে বাচ্চাটিকে নিজ হাতে বড় করতে পারছি। বিশেষজ্ঞরা বলেন জন্মের পর দু'বছর পর্যন্ত একটি বাচ্চার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তার মাকে - অমন একটি সময়ে আমি তাকে বেবিসিটারের কাছে অথবা ডে কেয়ারে রেখে ৯টা ৫টা ঘরের বাইরে কাজ করিনি। যদিও ব্যক্তিগত মতামত তারপরও বলছি, ছোট বাচ্চারা সবচাইতে বেশি সুস্থ থাকে যদি তারা মা, বাবার কাছে বেশি সময় কাটায়। বন্ধুদের যাদের বাচ্চারা ডে কেয়ারে থাকে তাদের দেখেছি ঘনঘন অসুস্থ হতে ঠান্ডা-জ্বরে। স্বাভাবিক, কারণ একসাথে অনেক বাচ্চা থাকলে একজনের কাছ থেকে দ্রুত অন্যরাও অসুস্থ হয়।

আমি জানি অনেক মেয়ের ঘরের বাইরে কাজ করতেই হয় সংসারের প্রয়োজনে। অনেকে আছেন যারা তাদের ক্যারিয়ারকে খুব ভালবাসেন - এই যুগে পড়ালেখা করে একটি ভাল চাকরি পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। চাকুরিজীবি মায়েদের কষ্ট অনেক সময় আমার মত মায়েদের চাইতে বেশি হয়, বিশেষ করে প্রবাসে- ঘরের বাইরে এবং ভিতরে তাদের প্রচুর খাটতে হয়। অমন মায়েদের প্রতি আমার অনেক সম্মানও রয়েছে। হয়তো বা আমারই ক্ষমতা নেই দু'টো দুনিয়া সামলানোর। সে যাই হোক, সন্তান জন্ম দেয়ার পুরো ব্যপারটি এত বড় এবং কষ্টদায়ক যে একজন মা হয়ে আমার সাহস নেই অন্য একটি মাকে তার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে বিচার করবার।

আমার শুধু খারাপ লাগে যখন ফুলটাইম মায়েদের কষ্ট অনেকের চোখেই পড়েনা। দিনের পর দিন না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, নিজের যত্ন না নিয়ে বাচ্চা বড় করা কত কষ্টকর এবং একঘেয়েমির ব্যপার হতে পারে এটা শুধু যারা এর ভিতর দিয়ে গেছে শুধু তারাই বলতে পারবেন।





সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৪৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×