somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নৈতিকতা কি ধর্মের উপর নির্ভরশীল (প্রমান ভিত্তিক আলোচনা)( পর্ব-৩)

১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




যারা প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা পড়েননি তাদেরকে নিচের লিঙ্ক দু’টি দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
নৈতিকতা কি ধর্মের উপর নির্ভরশীল (প্রমান ভিত্তিক আলোচনা)

নৈতিকতা কি ধর্মের উপর নির্ভরশীল (প্রমান ভিত্তিক আলোচনা)/পর্ব-২

পূর্বের আলোচনার ধারাহিকতার কারনে শিরোনামটির কোন পরিবর্তন করিনি । বিষয়বস্তু অনুপাতে লেখাটির শিরোনাম হয়-’আদর্শ সমাজ গঠনের প্রধান উপাদানসমূহ”
পূর্বে দু’পর্বে প্রমান দেখিয়েছি যে ধর্ম মানুষের নৈতিকতার খুব কমই নিয়ন্ত্রন করে থাকে । তবে ধর্ম যে মানুষকে নৈতিকতার প্রতি উৎসাহিত করে তাতে কোন সন্দেহ নেই । ধর্ম মানুষকে ভাল মানুষ হতে উৎসাহিত করে এবং সততার অনুশীলনে আহ্বান জানায় সেটা অনস্বীকার্য । এটি ধর্মের ভাল দিক ।
ধর্মের কিছু ক্ষতিকর দিক আছে যা মানবতার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর । এ ক্ষতিকর দিকগুলো আলোচনা করবো পরবর্তী পর্বে । যদি এ ক্ষতিকর দিক না থাকতো, তাহলে কেউ যদি প্রশ্ন করতো ধর্ম আসলে স্রষ্টা প্রদত্ত কিনা, আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করতাম ভাই স্রষ্টা প্রদ্ত্ত কিনা সেটা বড় কথা নয়, ধর্ম তো কমপক্ষে মানুষকে ভাল হতে সহায়তা করছে, তোমার স্রষ্টা প্রদ্ত্ত কিনা তা নিয়ে এত মাথাব্যথার কি আছে?
যেহেতু একটি সুন্দর সমাজ তৈরিতে ধর্মের কিছু ভূমিকা থাকলেও ধর্মের ক্ষতিকর দিকের কারনে ধর্মকে বর্জন করতে বাধ্য হচ্ছি, তাহলে প্রশ্ন থাকে সুন্দর সমাজের জন্য অন্য কি অবলম্বন আছে? হ্যা, আছে । সেগুলো হল:
১. অর্থ-সম্পদ (৬০%)
২. রাষ্ট্র (২০%)
৩. শিক্ষা (২০%)
৬০%+ ২০%+২০%=১০০%
১. অর্থ-সম্পদ: মানুষকে ভাল বা খারাপ হতে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি ভূমিকা পালন করে তা হল অর্থ । কথা আছে অভাবে স্বভাব নষ্ট । মানুষ যখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকে তখন সে চুরি, বাটপারি, প্রতারনা, ঠকবাজি ইত্যাদির চিন্তাও করে না । আমাদের দেশ দরিদ্র হওয়ায় এত ওয়াজ করে ভাল মানুষ বানানো যাচ্ছে না । পেট ঠিক তো দুনিয়া ঠিক।
পাশ্চাত্য দেশের লোকেরা ঠকবাজি, প্রতারনা ও জোচ্চুরি ইত্যাদিতে আমাদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল হওয়ার মুল যাদু এখানেই । উপরোক্ত পার্সেন্ট অনুপাতে তাদের হিসাবটি নিম্নরুপ হয়:
৫০%+১৫%+৫%=৭০% ভাল, আর আমাদের হিসাবটা হল: ১৫%+১০%+১৫%=৪০% ভাল, এ হিসাবের কারনে তারা আমাদের চেয়ে ৭০%-৪০%=৩০% বেশি ভাল মানুষ ।
কেউ কেউ বলবেন যে ইসলাম এ ৬০% চারিত্রিক পুর্ণতা দিতেই যাকাতের বিধান দিয়েছে। কোন সন্দেহ নেই যে যাকাত একটি সুন্দর ব্যবস্থা । আমি আগেই বলেছি যে ধর্মের বেশ কিছু ক্ষতিকর দিকের কারনে আমরা এখানে আলোচনায় ধর্মকে বাদ রাখছি এবং দেখাচ্ছি যে ধর্ম না হলেও কিভাবে সুন্দর সমাজ গঠন করা যায় । তাছাড়া যাকাতের অর্থ সামরিক বাহিনীতে ব্যয়েরও বিধান কুরআনে দিয়েছে । কোন ইসলামী সরকার যাকাতের বৃহদাংশও সামরিক খাতে ব্যয় করতে আগ্রহি হলে আপনার বলার কিছু থাকবে না। সে যাই হোক, আপাতত সেটা আমাদের আলোচ্য বিষয় নয় ।
২. রাষ্ট্র: মানুষকে পেটে দিয়ে তারপর পিঠে দিলে সেটা কাজে দেয় । আর্থিক সচ্ছলতার পর রাষ্ট্র যদি সমাজ নিয়ন্ত্রনে কঠোর হয় এবং রাষ্ট্রীয় আইন কানুনের যথাযথ প্রয়োগ থাকে তাহলে সে সমাজ ভাল থাকতে বাধ্য হবে।
৩. শিক্ষা: ধর্ম ছাড়াও মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দেয়া যায় । শিক্ষা ব্যবস্থায় মানুষকে সৎ ও আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য আলাদা সাবজেক্ট থাকতে হবে । সরকারীভাবেও মানুষকে সৎ হতে অনুপ্রানীতে করে এমন উৎসাহমুলক আলোচনা, সভা, সেমিনার ও প্রচার-প্রচারনা থাকতে হবে।
সে সাথে সৎ ও ন্যয়পরায়ন লোকদের পুরুস্কৃত ও অসৎ লোকদের তিরস্কৃত করতে হবে তাহলেই সে সমাজ একটি সুন্দর সমাজে রুপান্তরিত হবে।
এ তিনটি জিনিসই নির্ভর করে একটি জিনিসের উপর- তা হল সৎ,ন্যয়পরায়ন ও দক্ষ সরকার । একজন সৎ,ন্যয়পরায়ন ও দক্ষ সরকার তার সঠিক, বাস্তবমুখি ও উন্নত পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার বদৌলতে একটি দেশকে সমৃদ্ধির উচ্চ শিখরে নিতে পারেন । দেশ সমৃদ্ধ হলে মানুষের আর্থিক অসচ্ছলতা দুর হবে। আর সরকার সৎ ও দক্ষ হলে দ্বিতীয় প্রয়োজনটি এমনিতেই পুর্ণ হয়ে যায় আর এমন সরকার এমন সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা উপহার দিবে।
সবাই ভাল থাকবেন। আশা করি পরবর্তী পর্বেও আমার সাথে থাকবেন। সকল শুভ কামনায় এ লেখা এখানেই সমাপ্তি টানছি।









সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৬
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×