somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৈফিয়ত এবং un প্রসঙ্গ

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন কাগজের সাথে কলমের সঙ্গমের খসখস আওয়াজ শোনা যায়নি। যাওয়ার কথাও না। চারদিকে যেসব সিরিয়াস বিষয় নিয়ে মানুষ চিন্তিত, টেনশিত তাতে আমার কাগজ কলমের মিলনের ফলাফল ইংরেজিতে যাকে বলে offspring, তা কতটুকু মানুষকে নাড়িয়ে চাড়িয়ে বসাবে সেটা নিয়ে বেজায় শংকিত হয়ে কিঞ্চিৎ বিষাদগ্রস্ততায় পড়ে গিয়েছিলাম।একটু পেছন ঘুরে দেখে নেই, কি কি বিষয় নিয়ে বাঙালি চিন্তিত ছিল। (এইসব বিষয়ে জানতে বা জনমত নিতে দ্বারে দ্বারে ঘোরার এই জমানায় কোন প্রয়োজন পড়ে না, সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর রাখলেই চলে)
প্রথমত চলে যাই ট্রাম্প ইস্যুতে। বিশ্বাস করেন, আমি জীবনেও ভাবি নাই ২৯ এর ট্রাম্পের বাইরে অন্য কোন ট্রাম্প থাকতে পারে। আর সেই ট্রাম্প বাঙালিকে এত উত্তেজিত করে দিতে পারে। চারদিকে ট্রাম্প বাজিমাত করে দিলো কিনা তা নিয়ে মানুষের ভ্রুকুচকানোর মাত্রা দেখে আমার ইচ্ছে করছিলো মাটিতে বসে পড়ে হাত তুলে বলি, হে আল্লাহ আপনি ভ্রু না দিলেও পারতেন। যাক ট্রাম্প সাহেব বাজিমাত করে দিলো, মানুষ তাকে নিয়ে নাচনকুদন কমিয়ে দিলো। ভাবলাম এইবার তাইলে লিখতে বসা যায়। আমার ধারণা ভুল প্রমান হতে সময় খুব একটা বেশি লাগে নাই। চইলে আইলো রোহিঙ্গা ইস্যু। এবিষয়ে কিছু বলার আগে আমার দাবি, পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা চিন্তাবিদ পুরস্কার-জাতিগত ক্যাটাগরিতে আজীবনের জন্য বাঙালিকে দেয়া হোক। এই জাতির কাছে সকল সমস্যার সমাধান আছে (এই ধারণা লেখকের ব্যক্তিগত চিন্তার ফসল)। আর সার্কেজম বোঝায় এই জাতি বড় কাঁচা। এর জন্য দায়ী গোপাল ভাঁড়; তিনি রসিকতা শেখালেও বিদ্রুপ শেখাননি, তাই দায় তাকে নিতেই হবে। প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা। চারদিকে, তাদের নিয়ে রব। আমার কথা হলো, তোরা বেঁচে থাকে এটাই চাই, মাথা ছোট তাই সুচিন্তিত কোন সমাধান আমার নিকট নাই।তার মাঝে ঘটে গেলো সাঁওতাল এডভেঞ্চার। সেই এক এডভেঞ্চার। শুনলাম, শীত পূর্ব চড়ুইভাতি করতে গিয়ে নাকি, হাড়ি তলের আগুন ঘরের চালে উঠে গেলো। কোন ফাঁকে কারা চড়ুইভাতির ডেট ফিক্স করলো, কোন ফাঁকে আগুন লাগলো কিছুই জানলাম না। কিছু দিন শুনলাম লোকজন সানতাল, সানতাল করছে, এরপর সব চুপ। এইযা ভুলেই গেলাম, এইসব যখন ঘটছে, তখন চলছে বিপিএল।ক্রিকেট পাগল মাত্রই চোখ রাখলো খেলায়। কোন ফাঁকে জানি সেটাও শেষের দিকে চলে আসলো, মনে করলাম দিন ফিরেছে, কিন্তু না বিধিবাম। ফেসবুকে নজরে পড়লো "আমার ২০১৬" এই শীর্ষক বিভিন্ন স্ক্রিপ্টে এডিটেড সংক্ষিপ্ত চলচ্চিত্র-এর ছড়াছড়ি। আমি সবার দলে নাই। খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি, তাই আমার নিজের স্ক্রিপ্টের এডিটেড কপি আনএভেইলেবল। আবার কতিপয় জনতা দেখলাম খাড়া হয়ে গেলো ব্যাটন হাতে, কেন চারদিকে "year in review" ভিডিও সয়লাব হবে? এই প্রশ্নে তাদের অবস্থান চরমপন্থী। এইসব চিন্তায় চিন্তিত বাঙালির সামনে আমি আমার আমতা আমতা মার্কা তৈলাক্ত লেখা এনে হাজির করবো সেই কলিজা আমার নেই। তবুও কাগজ কলমের পিরিতি আমি আর আটকাতে পারলাম না। কাগজ আর কলমের প্রেম ভালোবাসা থেকে খেয়াল এলো, ফরম-এ সাধারণত দেখা যায় একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাওয়া হয়, তা হলো, ফর্ম পূরণকারীর বৈবাহিক অবস্থা ইংরেজিতে maritial status। বাস্তবিকভাবে আমার জন্য অবস্থানটা unmarried এর চারকোনা বাক্সের মধ্যে হলেও আসলেই কি তাই। চলুন ব্যবচ্ছেদ পূর্বক বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।
ইংরেজরা বড়ই ধূর্ত। তারা married এর যথার্থ বিপরীত শব্দ করেছে unmarried কে। আপনি জিজ্ঞেস করতেই পারেন, তাতে বাপু সমস্যা কোথায়? সমস্যা আছে বলেইতো আমি চটেছি মশাই। এই যে আমার বন্ধুবরের সেদিনের ঘটনাই শুনুন। বন্ধুবর আমার গেলো বসন্তে বিবাহের তিন বৎসর পূর্তি করলো। সবকিছু ঠিকঠাক। ভাবি আমার চমৎকার। কোন ঝগড়াঝাটি নেই , কোন ঝুটঝামেলা নেই, সবকিছুই চলছিল বেশ। বিপত্তি ঘটলো সেদিন। কি জানি এক ফরম পূরণ করছিলো আমার দোস্ত। পূরণের সময় married/unmarried এর মাঝে সে unmarried কেই বেছে নিলো। এরপর ভাবীর কাছে গিয়ে বুক ফুলিয়ে বললো, "বুঝলে বৌ unmarried এই টিক দিলাম"। যতটুকু জানি এরপর একটা উত্তপ্ত আলোচনা শেষে, আমাকে তলব করা হলো। আমি হাজির হলে আমাকে বিস্তারিত জানালেন ভাবী। আমিও রেগে কাই। এবার বন্ধুবরের মুখোমুখি বসলাম। কেন তার মাথায় এহেন চিন্তা আসলো তা জানতে চাইলাম। সে যা উত্তর দিলো তার জন্য দু তিন বার জন্মের পরেও আমি প্রস্তুত হতে পারবোনা। সে unmarried কে পড়েছে, U.N.married! সে ভেবেছে, married সাধারণ সাংসারিকদের জন্য, আর U.N.married অসাধারণ মানে সুখী সাংসারিকদের জন্য। ভাবী আমার দিকে তাকিয়ে চোখ পাকালেন এবার। তার ভাষ্যমতে আমিই দায়ী। আসলেই আমি দায়ী। একদিন দোস্ত কে বলেছিলাম, "সিরিয়া, ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গা কোন কিছুই নিয়েই আমাদের টেনশন করার কিছু নাই। U.N. নাম এক বড় ভাই আছে, দেখবে সেই সব ঠিক করে দিবে। সবাই কে শান্তি দিবে।" বন্ধুবর হয়ত তাই ধরে নিয়েছে U.N. নামের বড় ভাইয়ের কারণেই তার সংসার সুখের। সর্বশেষ পরিস্থিতি হলো আমার তার বাসায় প্রবেশের উপর ভেটো দিয়ে দিয়েছেন শ্রদ্ধেয় ভাবী। যত দোষ সব এই ইংরেজদের। U.N. এর মত একটা শান্তির প্রতীককেই কেন married এর বিপরীত এর জন্য un নামক prefix হয়ে বসতে হবে? হয়ত এইজন্যই U.N. এখন unhelpful।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×