ইয়াহইয়া ইবনে ইয়া’মার থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, বসরার অধীবাসী মা’বাদ জুহানীই প্রথম ব্যক্তি যে তাকদীরকে অস্বীকার করে। আমি ও হুমাইদ ইবনে আব্দুর রহমান উভয়ে হজ্জে অথবা উমরার উদ্দ্যেশ্য রওয়ানা করলাম। আমরা বললাম যদি আমরা এ সফরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের যে কোন সাহাবীর সাক্ষাত পেয়ে যাই তাহলে ঐসমস্ত লোকেরা তাকদীর সম্পর্কে যা কিছু বলে সে সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করব। সৌভাগ্যক্রমে আমরা আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: কে মসজদে ঢুকার পথে পেয়ে গেলাম। আমি ও আমার সাথী তাকে এমন ভাবে ঘিরে নিলাম যে আমাদের একজন তার ডানে ও অপরজন তার বামে থাকলাম। আমি মনে করলাম আমার সাথী আমাকেই কথা বলার সুযোগ দেবে ( কারণ আমি ছিলাম বাকপটু )। আমি বললাম হে আবু আব্দুর রহমান-আমাদের এলাকায় এমন কিছূ লোকের আবির্ভাব ঘটেছে তারা একদিকে কুরআন পাঠ করে আরেকদিকে জ্ঞাানের অন্বেষণ ও করে। ইয়াহইয়া তাদের কিছু গুণাবলীর কথা উল্লেখ করলেন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে “তাকদীর বলতে কিছু নেই এবং প্রত্যেক কাজ আকস্মাৎ সংঘটিত হয়”। ইবনে উমার রা: বলেন “যখন তুমি এদের সাথে সাক্ষাত করবে তখন তাদেরকে জানিয়ে দিও তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই আর আমার সাথেও তাদের কোন সম্পর্ক নেই। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার আল্লাহর নামে শপথ করে বলেন, এদের কারো কাছে যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকে এবং দান খায়রাত করে দেয় তবে আল্লাহ তাদের এ দান গ্রহণ করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তাকদীরের উপর ঈমান না আনবে। অত:পর তিনি বলেন: আমার পিতা উমার ইবনুল খাত্তাব রা: আমার কাছে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: একদা আমরা রাসূল সা: এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় একব্যক্তি আমাদের সামনে হাজির হল তার পরনের কাপড়চোপর ছিল ধবধবে সাদা মাথার চুলগুলো ছিল মিশ কালো। সফর করে আসার কোন চিহ্ন তার মধ্যে দেখা যায় নি। আমাদের কেউ তাকে চিনেও না। অবশেষে যে নবী সা: এর সামনে বসলো। সে তার হাটুদ্বয় নবী সা: এর সাথে মিলিয়ে নিল এবং দুই হাতের তালু তার নিজের উরুর উপর রাখলো এবং বললো হে মুহাম্মদ আমাকে ইসলাম সম্বন্ধে বলুন: রাসূল সা: বললেন ইসলাম হচ্ছে এই যে তুমি সাক্ষদেবে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ সা: আল্লাহর রাসূল, নামায কায়েক করবে, যাকাত আদায় করবে , রমজানের রোজা রাখবে এবং যদি পথ অতিক্রম করার সামর্থ হও তবে হজ্জ আদায় করবে। সে বলল আপনি সত্য বলেছেন। আমরা তার কথা শুনে আশ্চার্যান্বিত হলাম কেননা সে প্রশ্ন করছে আবার সমর্থন করছে। এরপর সে বলল আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন, রাসূল সা: বললেন ঈমান এই যে তুমি আল্লাহ, তার ফেরেশতাকুল, তার কিতাবসমূহ, তার প্রেরিত নবী ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখবে এবং তমি তাকদির ও এর ভাল মন্দের প্রতি ঈমান রাখবে। সে বলল আপনি সত্য বলেছেন। সে আবার বললো আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন। রাসূল সা: বললেন ইহসান এই যে তুমি এমনভবে আল্লাহর ইবাদাত করবে যেন তাকে দেখছো যদি তাকে না দেখ তবে তিনি তোমাকে দেখছেন বলে অনুভব করবে। এবার সে জিজ্ঞেস করল আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসূল সা: বললেন এব্যাপারে জিজ্ঞাসাকারীর চেয়ে জিজ্ঞাসীত ব্যক্তি অধিক জানে না। অতপর সে বললো তাহলে আমাকে এর নিদর্শনসমূহ বলুন। রাসূল সা: বললেন দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে, এবং নগ্নপদ বস্ত্রহীন, দুস্থ কাঙালকে বকরীর রাখালদের বড় বড় দালান-কোঠার মালিক হয়ে গর্ব অহংকারে মত্ত দেখতে পাবে। বর্ণনাকারী উমার বলেন এরপর লোকটি চলে গেল। আমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম এরপর রাসূল সা: বললেন: হে উমর তুমি কি জানো প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম আল্লাহ ও তার রাসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন ইনি ছিলেন জিবরাঈল আ: । তোমাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন।
মুসলিম শরীফ-১