somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুষার দেশে আনন্দের এক একটা দিন - ২৫তম পর্ব

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেকদিন পর আবার লিখতে বসা। যেন বহুদিন পর আবার নিজের সাথে কথা বলা শুরু।

তুষারের দেশে গড়ে তোলা নিজের পৃথিবীটাকে গুটিয়ে নেয়া আর নিজের মতো করে থাকবার অভ্যেসটা বদলে ফেলবার চেষ্টায় কেটে গেল বেশ কটা দিন। তারপর আবার নতুন জায়গায় সব কিছু ঠিকঠাক করে নিতেও সময় লেগে গেল অনেক বেশি। এটাই স্বাভাবিক ।

তবে, জীবনের এই নতুন করে পুরোনোর সাথে পরিচয় লগ্নে একটা জিনিস বুঝলাম। নতুন করে পরিচয় হওয়া পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে নিতে কষ্ট অনেক কম। গুছিয়ে নেয়াও বেশ সহজ। তখন কেবল নতুন নতুন জিনিসের সাথে পরিচয় হওয়া আর গ্রহন করে নেয়া নিজের মতো করে। আর সেকোন সম্ভাবনার জন্য থাকে মানষিক একটা প্রস্তুতি, যা পরিবেশটাকে অনেক সহজ করে দেয়, নতুন অতিথির জন্য।

কিন্তু আগে থেকে পরিচিত পুরোনো পরিবেশে নতুন করে পরিচয় হওয়াটা খুব বেশি কষ্টকর। সময়ের ব্যবধানে, নিজের আগের অবস্থানে ফিরে আসাটা যে এতোটা কঠিন হবে বোঝা যায়নি আগে।

বরং নিজের চিন্তার ধারাটাই ছিল উল্টো। ভবেছিলাম জায়গাটা, মানুষগুলো, সম্ভাব্য ঘটনাগুলো তো আমার চেনা, কিছুটা হলেও পরিচিত, তাই ছিলনা কোন আশংকা। ফলে কোন প্রস্তুতিও ছিলনা। তাই হয়তো অনেক সম্ভাব্য ঘটনাও যেন অপ্রত্যাশিত বলে মনে হয়। সামলে নেয়া কঠিন হয়ে পরে সময়ের সাথে বদলে যাওয়া চেনা মানুষগুলোর অচেনা-নতুন রূপ।

নিজের বদলে যাওয়াও ধরা পরে যায়, পুরোনো আয়নার সামনে। মেনে নেয়াটা কষ্টকর হয় নিজের বদলে যাওয়া অনেক ছোট ছোট আচরন। স্বাভাবিক ভাবে, সাথের মানুষগুলোও মেনে নিতে চায় না এই পরিবর্তন। বাধে সংঘাত। ব্যক্তিত্বের সংঘাত- সামাজিকতার সংঘাত- সময়ের ব্যবধান সাথে পরিবর্তের সংঘাত।

বহুদিন পর ফিরে পাওয়া আপন মানুষ, ছোট ছোট জিনিস, পুরোনো স্মৃতি ফিরে পাবার আনন্দে বিভোর মানুষটা যেন হঠাৎ করেই সম্মুখীন হয় বড্ড বেশি নিষ্ঠুর বাস্তবতার। যেখানে নেই কোন ছাড়, নেই কোন আহ্লাদ, নেই কোন সহানুভূতি।


অনেক কিছুই মেনে নিতে কষ্ট হবে। বদলে যাওয়া এই আমি আবার আগের সেই আমিতে ফিরে যেতে - মানিয়ে নিতে সময়, মানষিকতার আর ধর্য্যের পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত থাকলেও, মেনে নেয়াটা সহজ ছিল না বলেই ফিরতে দেরী করেছিলাম। মেনে নিতে পারছিলাম না অনেক কিছু, ভয় হচ্ছিল তাল হারিয়ে ফেলবার। আর সবচেয়ে বড় ভয় ছিল, নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখি হবার।

আমি কোনদিন, অন্যের জন্য ত্যাগ করাটা পচ্ছন্দ করিনা, যদি কোন দিন কিছু করি, তা কেবলই নিজের আনন্দ কিংবা ভালোলাগার জন্য। তাই যা কিছু করলাম, করবার জন্য প্রস্তুত হলাম তাদের জন্য পরোক্ষ কারন যাই হোক না কেন সব কিছুর মূলেই থাকলো সেচ্ছায় বরন করে নেয়ার ইচ্ছাটা।

নিজেকে কেন্দ্রীভূত করলাম, সাহস জোগালাম, তাকালাম পেছনের দিকে। ভয়-শংকা আর নিঃস্ব হবার আশংকাকে মেনে নেবার জন্য মানুষিকভাবে প্রস্তুত নিলেম, কোথা থেকে যেন শক্তিও পেলাম, ভরসা করবার মতো আস্থা জন্মালো। মুখোমুখি হলাম রূঢ় বাস্তবতার।

খেয়ালের বশে, কিছুটা আবেগের তাড়নায়, কিংবা বাস্তবতাকে ভয় পাওয়া এই আমি কেবল জানতাম না, যে মানুষ, সময় আর পরিস্থিকে আমি বিবেচনা করছি। সময়ের ব্যবধানে বদলে যাওয়া তাদের চেহারাটা আমার কাছে পুরোপুরিই অপরিচিত।

সেকারনে মেনে নেয়া, মনে নেয়া কিংবা বাধ্য হবার পর যা থাকলো তা হচ্ছে, মনের মাঝে লালন করা অনেক বড় বড় আশা।

এখন কেবল স্বপ্ন আর ঘোরের সাথে বসবাস যেন আমার। জানি স্বপ্নগুলো অনেক দুরের তবু কেন জানি তদের ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়। অথচ আমি নিজেই সেই স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখহবার জন্য হাত বাড়াবার মতো সামান্য কষ্ট টুকুও করছিনা আমি, সাহস নেই বলে।সাহস নেই বদলে যাওয়া এই মানুষগুলোকে, বদলে যাওয়া সময়ের আয়নাটাকে দেখাবার।

কেবল মনে হয় হঠাৎ একদিন দেখবো স্বপ্ন গুলো আমাকে ঘিরে আছে। জানিনা মঙ্গল না অমঙ্গল। শুধু এটুকু জানি দুরের সেই পাহাড় আর ঝকঝকে সকাল আমাকে হাত ছানি দেয়। পেতে ইচ্ছে করে সেই ছোট্ট জানালার ঘরটাকে আর সেই নরম তুলতুলে বিছানায় পরম শান্তি চোখ মেলে দেখবার ইচ্ছেটা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৩৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×