আমি অন্তপুরেই ছিলাম,এ আমার চিরস্থায়ী আবাস নয় বলে,মন খান যেন সারাক্ষণ উতলা হয়ে রয়।
আমি রাঁধতাম,কিন্তু মন খান গাইতো সোনার বাংলা
আমি কাঁথার মাঠে মাঠে বুনে দিতাম,গল্প সপ্ন বকুল মালা
আমার সন্তানেরা সাঁতরিয়ে আসতো পদ্মা মেঘনা
এক বিজয়ী ভাব!এ আমার খাদ্য,আমার গর্ব।
জানালে খুলতেই সেদিন দমকা হাওয়া আঁচল টানে
চোখ ফিরাতেই তোমাকে দেখি,ডাকছো আমায় ব্যাকুল হয়ে।
একদিন আমি সেই!
দোর খুলে বেরুলাম,বিশ্বাসের বুকে হেঁটে
সেদিন আমার সন্তানেরা,এই যুবতী মায়ের পাশে ছিল
বল হয়ে ঘোড়ার পিঠে চাবুক মেরে কি যে মহড়া ছিল!
আজ আমি রাস্তায়,চলছি,চলতে চাই
কিন্তু এ কটা বসন্তেই তুমি পাল্টে গেলে!
নাহ!
তোমার চোখ বদলাই নি,কিন্তু এত লাল কেন?
তোমার হাত ও আগের মতন,কিন্তু এমন শক্ত কেন?
আমার সন্তানেরা ও বুঝি খুব ক্লান্ত!
আমি রাস্তার মোড়ে দাঁড়াতেই তুমি ডাকো,ঝোপ থেকে
মায়াহীন চাহনি,ভরপুর কামভাব।
ভয়ার্ত আমি পালাই বাঁচি।
কদিনই বা পালাই পালাই খেলি
সামনে এসে দাঁড়ালে,
-একি!আমায় এমন করে কি দেখছো?আমার চারদিকে ঘুরে ঘুরে!আমার চুল,আমার চোখ,আমার মুখ,বুক,পেট,কোমর?আমার পা দুটুও এমন করে দেখতে হবে তোমার?
নাহ,আমি পারছি না।আমি ডাকি,আমি কাঁদি,আমি চিল্লাই।আসে না কেও।আমার সন্তানেরা ঘুমন্ত।সপ্নে বিভোর,।অথবা,আমার ভাগ নিয়ে হিসাব কষে।
কেও আমার হাত চাই,কেও আমার মাথা,কেও পেট,কেও মুখ,কেও বুক।এ নিয়ে চলে তর্কের পর তর্ক।
আচ্ছা,একটা দেহকে এত বিভক্ত করলে বাঁচতে পারে!!!
এই অভিমানে আজ আমি পথে পথে।কত পূর্ণিমা আসে,কত পূর্ণিমা যায়,আমার সন্তানেরা এখনো স্বপ্নে আমার দেহের ভাগ বসাই।
আমার সম্বল আমার সেই পুরানো একখান লাল সবুজের শাড়ি।এই আমার ইজ্জত।
আজও হাঁটছি।আজও অস্রু বিসর্জন দেবো বলে নদীর পাড়ে হাঁটছি।হঠাৎ আমার লম্পট প্রেমিক আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে।কি গরব তার লাম্পট্যে!!আমার শাড়ি ধরে টান দেয়।কষে চড় মারতে যাবো:দেখি আমার বড় সন্তান আমার প্রেমিককে বাবা বলে ডাকছে পেছন থেকে!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০৬