somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাফর ইকবাল স্যার সমীপেষু:

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর প্রতি আমার পক্ষপাতিত্ব রীতিমত একচোখা। স্যার যা লিখতেন তার সবই আমি পড়ি, এমনকি যখন শাওনকে বিয়ে করার পর উনার নাটকগুলোর নির্মানশৈলী একদম তলানিতে ঠেকেছিল, তখনো আমি তার একটাও নাটক বাদ দিই নি। তাঁর একটাও সিনেমা আমি বাদ দিই নি। সত্যি কথা বলতে কি, আমি হুমায়ুন স্যার এর ছাড়া অন্য কারো বইও পড়ি না, ভালই লাগে না। কেউ যদি আমাকে রবীন্দ্রনাথ অথবা হুমায়ন স্যারের মধ্যে যে কোনো একজনকে বেছে নিতে বলে, তাহলে আমি হুমায়ুন স্যারকে বেছে নেয়ার ধৃষ্টতা দেখাতে পিছপা হব না কখনোই। আর স্যারের বই যোগাড় করার জন্য আমি " মার্ক টোয়েন" পদ্ধতি ব্যবহার করতে কখনো পিছপা হইনি এবং তার জন্য আমার মনে কোনো অনুশোচনাও নেই। কেন থাকবে??? কারণ তিনিই তো আমাদের প্রজন্মকে বই পড়া শিখিয়েছেন, তাঁর বইয়ের কারণেই তো বাংলা একাডেমির বইমেলা এতটা জনপ্রিয় হয়েছে। আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয়, তাহলে একটু খেয়াল করে দেখুন, স্যার চলে যাবার পর প্রথম বইমেলা (২০১৩ এর) কিন্তু জমে নি। অনেকে হয়তো বলবেন যে এর কারণ এবারের শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ, কিন্তু বিনীতভাবে বলবো, ৯০ এর এরশাদ পতন আন্দোলন কিংবা ৯৬ এর খালেদা পতন কিংবা ২০০১ এর হাসিনা পতন আন্দোলনের সময়ও কিন্তু বইমেলা ঠিকই জমেছিলো। আর তার কারণ ছিলেন আমাদের সেই হ্যামিলনের বংশিবাদক, "হুমায়ুন আহমেদ"।

হুমায়ুন আহমেদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের কারণেই হয়তোবা স্যারের পরিবারের অন্য সবার লেখা আমি গোগ্রাসে গিলি। যাঁদের মধ্যে প্রথমেই নাম আসে জাফর ইকবাল স্যারের লেখা। প্রথমেই শুরু করেছিলাম হুমায়ুন স্যারের অভাব পূরণ করার জন্য কিন্তু আস্তে আস্তে দেখলাম জাফর ইকবাল স্যারের লেখা পড়ে মোটামুটি একইরকম আনন্দ পাচ্ছি। স্যারের বুদ্ধিদীপ্ত লেখনীর জন্য হয়তোবা আরেকটি কারণ। এমনকি, গত জানুয়ারী মাসে দেশ থেকে আসার সময় ১৬ ঘন্টা ফ্লাইটের পুরোটা সময় আমি জাফর ইকবাল স্যারের বই পড়তে পড়তে এসেছি, একটিবারের জন্যও চোখের পাতা দুইটা এক করিনি অথবা inflight entertainment এর দিকে চোখও দিই নি। আর আহসান হাবিবের উন্মাদ ম্যাগাজিনের সাথে তো আমার সখ্যতা সেই মধ্য আশির দশক থেকে।

এমনই যখন আমার অন্ধ পক্ষপাতিত্ব তখন গতকাল জাফর ইকবাল স্যারের একটি গোল টেবিল আলোচনা শুনছিলাম, আর তখন ব্রিটিশ সময় রাত ২টা প্রায়। মন্ত্রমুগ্ধের মত স্যারের কথা শুনছিলাম। স্যারের প্রতিটি কথার সাথেই একমত, বিশেষ করে তাঁর গাইবান্ধা বিষয়ক কথার উপর তো আর কোনো কথায় হতে পারে না!!!! কিন্তু হটাত ধাক্কা খেলাম যখন স্যার উনার ক্যানাডিয়ান হাইকমিশনের জনৈক কর্মকর্তার সাথে আলোচনার প্রসঙ্গ আনলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আপনি বললেন যেহেতু আওয়ামী লীগ নিজেই মুক্তিযুদ্ধ এর নেতৃত্ব দিয়েছে, সেহেতু আওয়ামী লীগে যুদ্ধাপরাধী নেই !!!!

বিনীত ভাবে আমি আপনাকে বলতে চাই স্যার, হয়তো তখন আওয়ামীলীগে যুদ্ধাপরাধী ছিলো না কিন্তু এখন তো আছে। কেনো স্যার, বর্তমান শ্রমমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ কে কি আপনার চোখে পড়ে না??? স্যার, আপনি কি ভুলে গেছেন ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করেছিলো, সেই যুদ্ধাপরাধীদের দল জামাতের সমর্থনে, কারণ সরাসরি নির্বাচনে তখন আওয়ামীলীগ ১৫০টি আসন পায় নি। স্যার, আমরা যারা ১৯৭৫/৭৬ সালে জন্মেছি তাদের মনে আছে কারণ ১৯৯৬ এর নির্বাচনে আমরা আমাদের জীবনে প্রথম ভোট দিয়েছিলাম।

জাফর ইকবাল স্যারের কাছে বিনীত অনুরোধ, স্যার, দয়া করে দলকানা মন্তব্য করবেন না। জানি আমাদের মতন "অগামগা" চুনোপুটিদের কথায় আপনাদের মতন বড়মাপের মানুষদের কিছুই যাবে আসবে না, কিন্তু আপনাদের মত বিশাল মানুষদের দলকানা মন্তব্য দেখলে আমাদের মত চুনোপুটিদের মনে কিন্তু গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। স্যার, এইসব রাজনৈতিক দলের তুলনায় আপনাদের স্থান কিন্তু অনেক উচুতে। এদের স্থান কিন্তু আপনাদের মতন উচুমাপের মানুষদের পায়ের নখের ময়লার সমানও না!!!!

স্যার, ধৃষ্টতার জন্য ক্ষমা চাই। কিন্তু কি করবো বলেন??? অভ্যাস হয়ে গেছে যে, ওই যে অনেক আগেই রবীন্দ্রনাথের সাথেই করে ফেলেছি!!!! পরিশেষে আপনাদের রত্নগর্ভা মা আয়েশা ফয়েজ এর আশু রোগমুক্তির জন্য পরম করুনাময়ের কাছে প্রার্থনা করছি।
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×