যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বরাদ্দ করা ১০ কোটি টাকার মধ্যে আদালত কক্ষ মেরামত, চুনকাম ও ফুলের বাগান তৈরি বাবদ ব্যয় করা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। আদালত সংস্কার কমিটি ৫ কোটি টাকার বিল আইন মন্ত্রণালয়ে পেশ করেছে। এ বিল নিয়ে তোলপাড় চলছে খোদ আইন মন্ত্রণালয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিষ্পত্তির জন্য সরকার ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রথমে ১৪ আবদুল গণি রোডের আপিল ট্রাইব্যুনাল ভবনটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংস্থার দাবির প্রেক্ষিতে এটি পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে করার সিদ্ধান্ত হয়। পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের কয়েকটি কক্ষ সংস্কার করে আদালত গঠনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিমকোর্টের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। মূলত এ কমিটির তদারকিতেই আদালতের চুনকাম, এজলাস স্থাপন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু করা হয়। সম্প্রতি ওই কমিটি ওইসব কাজ বাবদ ৫ কোটি টাকা চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিল পেশ করেছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা। এ বিল মাননীয় মন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর ৫ কোটি টাকা খরচের কথা শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রীর নির্দেশে এ বিল আদালত সংস্কার কমিটির কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং বিলের সঙ্গে কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ চাওয়া হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য মোট বরাদ্দই হচ্ছে ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আদালতের সংস্কারের জন্যই যদি ৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়, তাহলে বিচার হবে কী দিয়ে। তাছাড়া আদালত সংস্কার কমিটি কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করেছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি। এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোড পরিপন্থী। এ কারণেই কমিটির কাছে তাদের বিল ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোড পূরণ করে সেই অনুযায়ী খাতওয়ারি বিল পেশ করতে বলা হয়েছে।
সংস্কার কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা যে বিলটি দিয়েছি সেটাই সঠিক। এর মধ্যে বেশিরভাগ কাজই আমরা সম্পন্ন করেছি। এখনো কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আদালত ভবন ও কক্ষগুলো আগে নির্মিত হলেও এতে অত্যাধুনিক ডেকোরেশন করা হচ্ছে। ফলে অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনের কোনো সুযোগ নেই।