আশে পাশে কেউ নেই। একাকী প্রহর-দু'চোখে ঘুম আছে জড়িয়ে। চা নেই-কফি নেই। নেই কোনো ভাল লাগার উষ্ণতা। টাইপের গতি ক্রমেই কমে আসে। এসির হিমে পায়ের পাতা অবশ। এখানে কোন আরাম চেয়ার নেই, নেই দোল চেয়ার। ইচ্ছে করছে দোল চেয়ারে বসে দুলতে থাকি আর নেতিয়ে পড়ি ঘুমের কোলে।নিথর চোখ সহসা বন্ধ স্বয়ংক্রিয়তায়। বন্ধ চোখে কিইবা খুঁজি, সেই দু:স্বপ্ন ভর করে। ভাবি শুধু আহা যদি স্মৃতি হয়ে যেতো বিস্মৃতি।
ঘুরেফিরে যেনো স্মৃতিতে না ফিরে যেতে পারি।সব উলট পালট-দুলছে সব, সামনের পিসিটা,মনিটরের পর্দা ধীরে আবছা, অক্ষরে নেমে আসছে ধুয়াশা।আইপি ফোনের ঘড়িটা নৈ:শব্দে ঠাঁয় বসে গুনছে চলে যাওয়ার প্রহর।আর সম্মুখে পেতে রাখা অভিযোগপত্রটি ডেকে বলছে তুলে নাও সকল অভিযোগ।না এমন অভিযোগ তুলে নেয়া যাবে নে। শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
কেউ পেয়েও হারাতে চায় অনায়াসে। আর এমন সম্মানীয় পদ কেউ সহজেই পেতে পারে না অযস্র মেধা থাকলেও । এটাতেই ছিল তার রুজি রুটি। অথচ রুজি রুটিতেই নেই সম্মান। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা-বেতন লাখ। অথচ রুজি রুটিকে লাথি মেরে কোথায় জানি হারিয়ে গেছে সে। সে নেই অফিসের কোনো খবরে। অভিযোগনামায় সেঁটে দিয়েছি নিজ স্বাক্ষর। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হলো। না, তিনি আসেন নি, উপস্থিত হন নি তার অভিযোগ খন্ডাতে। তদন্তে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত কেইস-উঠে গেলো ব্যক্তিগত শুনানীর নিলামে।
আহা এবারও তিনি নেই কোনো খবরে। স্থায়ী কিংবা বর্তমানের ঠিকানায় পাঠিয়েছিলাম তাকে উড়োচিঠি-চিঠিখানা অবশেষে প্রাপকের অনুপস্থিতিতে ফিরে আসে আমার ডাকবাক্সে ফের। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ও শুনানীতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত। এবার তাকে দেয়া হবে শাস্তি। বুক পেতে নিতে হবে শাস্তির মাল্য। তবুও নড়েনি তার টনক। সে থেকে যায় নির্বিকার।
কেনো এমন হলো। অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে অসম্মানে নিতে হলো চাকুরী হতে বিদায় আহ্ কি কষ্ট ভেবে ভেবে টাইপ করে যাচ্ছি অনবরত।পত্রিকায় ছাপা হবে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া সেই খবর নিখোঁজ সংবাদের মতই। বলা হবে চাকুরী থেকে বিতাড়িত কর্মকর্তা, এসে আপনার বরখাস্তাদেশ গ্রহণ করুন জনাব।এসব দেখে দেখে আমিও তবে ক্লান্ত।খুব ঘুম জড়িয়ে আছে চোখের পাতায়। আমি ঘুমোবো একটু। আমাকে নিরিবিলি একটা ঘুমঘর দেবেন কেউ?
January 19, 2017
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩