হবিগঞ্জের বানিয়াচঙ্গ উপজেলা সদরের জনাব আলী কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেয়ায় ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে প্রহৃত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা কলেজে ভাংচুর চালায়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। এ ঘটনায় হামলাকারী ৩ ছাত্রসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে বানিয়াচঙ্গ থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, জনাব আলী কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীর নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে। গতকাল ছিল পৌরনীতি প্রথমপত্রের পরীক্ষা। ৩০২ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ কর্মী মারুফ আহমেদ ও মিজানুর রহমান নকল করে খাতা লেখছিল। কর্তব্যরত পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রদর্শক পলাশ চন্দ্র শীল নকলসহ তাদের খাতা জব্দ করেন। এ সময় ছাত্র মারুফ, মিজান ও সেজু ক্ষিপ্ত হয়ে পরীক্ষা কক্ষেই শিক্ষক পলাশ শীলকে মারপিট করে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন চৌধুরী ও সিনিয়র নেতা জসিম উদ্দিন ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে নিয়ে শিক্ষক পলাশ চন্দ্র শীলের পা ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করান। তাৎক্ষনিক তাদেরকে ক্ষমা করে দিলেও পরবর্তীতে বাঁধ সাধে পরীক্ষা দেয়া নিয়ে। কলেজের শিক্ষকরা ওই তিন ছাত্রকে পরীক্ষায় অংশ নিতে বারণ করে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে কলেজের বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষের জানালা ভাংচুর করে। খবর পেয়ে ওসি (তদন্ত) দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সরজমিনে দেখা গেছে কলেজের তৃতীয় তলার ১০টি জানালার গ্লাস ভাংচুর করেছে তারা। এ ঘটনার সাথে জড়িত মারুফ আহমেদ, মিজানুর রহমান ও সেজু আহমেদের বিরুদ্ধে শিক্ষক পলাশ চন্দ্র শীল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
কলেজ অধ্যক্ষ সাফিউজ্জামান খান জানান, এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচনী পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার জিবি কমিটির সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রায় ৩ মাস পূর্বে জনাব আলী কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সেজু ও মিজানকে বহিস্কার করা হয়েছিল। নির্বাচনী পরীক্ষার ২ সপ্তাহ আগে তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়ার পর তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৪