somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফকির ইলিয়াস
আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিপক্ষ কে?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিপক্ষ কে?
ফকির ইলিয়াস
=========================================
একটি দীর্ঘ প্রশ্ন। উত্তর অনেকে জানেন। কেউ জেনেও না জানার ভান করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিপক্ষ কে? বিষয়টি নিয়ে প্রজন্মকে ভাবা দরকার। এই দেশে অনেক কিছুই হতে পারতো। হয়নি। এর প্রধান কারণ রাজনৈতিক অস্থিরতা। এমন অশান্তি এই জাতি চায়নি। তারপরও আজ বাংলাদেশ জ্বলছে। চারদিকে হায়েনার ফণা। হ্যাঁ, দায় নিয়েই চলেছে বাঙালি জাতি। কালের আবর্তনে হারিয়ে গেছে অনেক কথা। অনেক স্মৃতি। তারপর বেইমানি করেছে রাজনীতিকরা। কথা দিয়েও রাখেনি তারা। এই বুদ্ধিজীবী দিবসকে সামনে রেখে বিএনপির প্রধান বেগম খালেদা জিয়া একটি নতুন কথা বলেছেন। এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বাংলাদেশকে মেধা-মননে পঙ্গু করার হীন উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত বিজয়ের ঊষালগ্নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসররা দেশের প্রথিতযশা শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎ?সক, বিজ্ঞানীসহ বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছিলো। ?খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দুর্বল করা এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছিল হানাদারের দোসররা। কিন্তু তাদের সে লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্নটি হচ্ছে এই দোসররা কারা? এদের পরিচয় কি? বিএনপি প্রধান কি তাদের পরিচয় জানতেন না? তিনিই তো এদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। কেন বানিয়েছিলেন? মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অবমাননা এভাবেই হয়েছিল তার হাতে।

আমরা পত্রপত্রিকায় পড়েছি, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় গিয়ে অনেক ডকুমেন্টস নষ্ট করেছে। তারা তা করবে এটা অজানা ছিল না। কিন্তু যাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, তাদের পশ্চাৎপদতা ছিল চোখে পড়ার মতো। চৌধুরী মইনুদ্দীন এখন লন্ডনের বাসিন্দা। আশরাফুজ্জামান খান নিউইয়র্কের বাসিন্দা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিপক্ষ কে?
এই দুজনই বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম সহযোগী। এদের নাম আছে ঘাতক-দালালদের তালিকায়। এরা পালিয়ে এসেছিল। এদের বিচারের রায় হয়েছে। আর রায়ের পর এরা বলেছে তাদের কেউ স্পর্শ করতে পারবে না। বাংলাদেশের রাজাকাররা তাদের ক্ষমতা পরীক্ষা অতীতে করেছে। এখনো করে যাচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস পাল্টে দেয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে তাদের। সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক রাজনীতিকদের তারা কাজে লাগিয়েছে নিজেদের প্রয়োজনে। আবার ছুঁড়ে দিয়েছে। ব্যবহার করে ছুঁড়ে দেয়াই মওদুদীপন্থিদের হীনকর্ম। যারা ব্যবহৃত হয়েছেন তারা কেউই লজ্জিত হননি। আর সেরা রাজাকার, আল-বদর কমান্ডাররা থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এটাই হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশে মহান বিজয় দিবসের প্রকৃত বাস্তবতা। বর্তমান সরকার প্রজন্মের কাছে ওয়াদা করেছিল এদের বিচার করবে। সেই ধারাবাহিকতায় এদের বিচারকাজ চলছে। এদের টুঁটি চেপে অনেক আগেই ধরা যেত। কিন্তু রাজনীতিকরা তা ধরেননি। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীর সংখ্যা বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১১ হাজারের মতো। অথচ জনসংখ্যা দেশে ১৬ কোটির ওপরে। এদের তো রা করার কোনো উপায় থাকার কথা ছিল না। কিন্তু তারপরও দেশের মহান বিজয়ের তিন দশক পার হওয়ার আগেই তারা মন্ত্রিত্ব পেয়েছে। যারা সরাসরি একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। ভাগবাটোয়ারা করে ক্ষমতায় যাওয়ার এবং টিকে থাকার জন্যও প্রতিযোগিতার ফল এমনটিই হয়।

ভাবতে অবাক লাগে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, ডিসকাশন গ্রুপে রাজাকারপন্থি কিছু কিছু উত্তরসূরি প্রশ্ন তোলে, ‘একাত্তরে আদৌ ৩০ লাখ বাঙালি শহীদ হয়েছিলেন কিনা।’ ধৃষ্টতা আর কাকে বলে! তারা বলে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা চাননি, পশ্চিমাদের সঙ্গে সমঝোতা করে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন। এমন নানা উদ্ভট তথ্যও হাজির করে মাঝে মাঝে। এসবের উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতিকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের রাজাকারী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করা। প্রজন্মের ব্রেনওয়াশ করা। এরা কোনো ইতিহাস, কোনো ডকুমেন্টারি মানতে চায় না। বিদেশের বিভিন্ন আর্কাইভে রাখা তথ্য-তত্ত্বগুলো বিশ্বাস করতে চায় না। না বুঝতে চাইলে তাদের বোঝাবে কে? কিন্তু কথা হচ্ছে আজকে যারা সত্য অন্বেষণের রাজনীতি উপহার দিতে লেভেল প্লেইং ফিল্ডের জন্য কাজ করছেন, তাদের অভিপ্রায় কী এ ব্যাপারে? খুনিদের বিচার না করে কি সে লেভেল বাংলাদেশে তৈরি হবে? এই দাবি এদেশের মানুষ অনেক আগে থেকেই করে আসছে।

১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এদেশের মানুষকে ডাক দিয়েছিলেন। তার সেই ডাকের পথ ধরেই আজও চলছে এই আলোকিত প্রজন্ম। আমরা দেখছি ইউরোপ-আমেরিকায় এখনো নাৎসিবাদের গন্ধ পাওয়া গেলে সেখানে কামান দাগাবার চেষ্টা করে সরকারপক্ষ। এটি হচ্ছে রাষ্ট্রের মৌলিকত্ব রক্ষার প্রশ্ন। এ প্রশ্নে আপস করলে রাষ্ট্র বিপন্ন হতে পারে। আমরা তা হতে দিতে পারি না। আর পারি না বলেই বিষয়টি জিইয়ে রেখে শুধুই রাষ্ট্রের ক্ষতি করা হবে। একটা বিষয় আমরা লক্ষ্য করছি। আজ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে কিংবা হয়েছে, তখন বিশ্বের কোনো কোনো সংস্থা ‘মানবাধিকার’-এর কথা বলছেন। আমার প্রশ্ন হলো, একাত্তরে যখন বাংলাদেশে গণহত্যা হয়, তখন তাদের এই দাবি কোথায় ছিল? আমাদের মনে আছে, যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদ- স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার নাভি পিল্লাই। একই অবস্থা হয়েছে সাকা চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের বেলায়ও।

কারা একাত্তরে গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য পাকিদের শলাপরামর্শ দিয়েছিল, তা কিছুই লুকানো নয়। এসব বিষয়ে সে সময়ের দলিলপত্র দেশে-বিদেশে এখনো সংরক্ষিত আছে। কথা হচ্ছে, নানা রাজনৈতিক ছলচাতুরি সুবিধাভোগের ফন্দিফিকিরের নামে রাজনীতিকরা বেহুঁশ থাকায় ঘাতক দালালদের বিচার করা যায়নি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, এদের বিচার কোনো দিনই করা যাবে না। কিংবা কেউ করতে পারবে না। ঘাতক-দালাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি তুলতেই বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন, শঙ্কার কথা তোলা হয়েছে শুরু থেকেই। এর নেপথ্য কারণ কী? যারা যুদ্ধ চলাকালে সুস্থ মস্তিষ্কে গণহত্যা করে কিংবা মদত জোগায়, তারাই যুদ্ধাপরাধী। এসব যুদ্ধাপরাধীরে অবস্থান একাত্তরে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিল তীব্রভাবে। তাই এই ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রটিকেই বিচার চেয়ে বাদী হতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যুগে যুগে যেমনটি বিচার চাওয়া হয়েছে। এবং রাষ্ট্র সেসব বিচারের ব্যবস্থাও করেছে। একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে সত্যের পক্ষে মানুষ যে কোনো সময়, যে কোনো দেশে দাঁড়াতে পারে। একটি কথা খুব গুরুত্বের সঙ্গে বলতে চাই। আর তা হচ্ছে, এ দেশে যদি কোনোভাবে রাজাকারদের পক্ষপাত করা হয়, তবে কারো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎই শুভ হবে না। কারণ, রাজাকাররা এমন এক অশুভ শক্তি, যারা সময় সুযোগ পেলেই ছোবল দেয়। অতীতে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও দেবে। দেশের আপামর জনগণ জানেন এরা কত জঘন্য মানসিকতাসম্পন্ন। তাই এদের বিচার আজ রাষ্ট্রীয় দাবি।

বর্তমান সরকার এদের বিচার না করলে কালের আবর্তে এই দেশ আবারো ওয়ান-ইলেভেন পূর্ববর্তী পর্যায়ে ফিরে যেতে পারে।

রাষ্ট্রের বুকে সৃষ্ট ক্ষত আরো বিশাল আকার ধারণ করতে পারে। জাতিকে এদের রাহুগ্রাস থেকে বাঁচাতে বর্তমান সরকার বিহিত উদ্যোগ নেবেন বলেই জাতির প্রত্যাশা। বাংলাদেশ আজ চরম সংকটে। কে কোন দিকে চাল দিচ্ছে তা বোঝা ও বলা মুশকিল। আমাদের মনে রাখতে হবে, অর্জন পূর্ণতা না পেলে সে বিষয়ে আগাম লম্পঝম্প করার কোনো অর্থ নেই। স্বদেশ এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমাদের সড়কের পাশে পড়ে আছে বিজয় বালিকার লাশ। এর পাশাপাশি যে লুটেরা শ্রেণি মদত পাচ্ছে, ভাবতে হবে এদের নিয়েও।
-------------------------------------------------
দৈনিক আজকের পত্রিকা ॥ ঢাকা ॥ ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫ বুধবার


সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×