somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মত ঝুলে যাবে?

১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বাঁধটি নানাবিধ জন-দুর্দশার সৃষ্টি করেছে।

ব্যাপকভাবে মানব বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধটি দিনকে দিন বেশি ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছে-
১. ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মার প্রবাহ কমে নদীগর্ভের বেশিরভাগ অংশ শুকিয়ে যায়। এতে সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির একচেটিয়া চাহিদা তৈরি হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারে পানির স্তর নিচে নেমে মরু প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে, কৃষির উৎপাদন খরচ বেড়েছে, গ্রীষ্মে পদ্মা অববাহিকার তাপমাত্রা বেড়েছে এবং পরিবেশ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।

মোহনায় স্বাদু পানির চাপ কমে লবণ পানির আগ্রাসন স্থলভাগের প্রায় অর্ধশত কিলোমিটার ভিতরে চলে এসেছে, এবং সুন্দরবনেরও সমূহ ক্ষতি করেছে।

নদী হত্যা, কৃষি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে ফারাক্কা বাঁধ আবারও আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচিত হইবার দাবি রাখে। নতজানু সরকার জাতীয় পরিসরে বিষয়টি আলোচনা করতে দেয় না, দ্বিপাক্ষিক মিটিং এরও এজেন্ডায় রাখে না।

২. জলবায়ু পরিবর্তনে শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টির ভারসাম্য নষ্ট হয়েও নদীর প্রবাহ কমছে, বিপরীতে বর্ষায় অতিবৃষ্টিতে প্রবাহ বাড়ছে। ফলে বাঁধটি একদিকে শুষ্ক মৌসুমে তীব্র খরা, অন্যদিকে বর্ষায় অতিবন্যা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে।

৩. ভারত চুক্তিমতো শুষ্ক মৌসুমে পানি দেয়নি, ২০২৪ সালে চুক্তি থাকার পরেও মাত্র ৩-৫ হাজার কিউসেক পানি এসেছে। অববাহিকার মানুষ বলছেন, 'এত কম পানি তারা জীবনে কখনও দেখেননি'।

৪. গঙ্গা অববাহিকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাব্য এবং গড় পরিমাণের ভিত্তিতে ফারাক্কা বাঁধটি পরিচালনা করা হয় না, আগে থেকেই অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়ার সুযোগ থাকলেও ভারত শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো, ফসল এবং লাইভস্টোকের সমূহ ক্ষতি হয়, কোন কোন বছরে যা প্রায় ৫ হাজার কোটিতে পৌঁছায়।

এমতাবস্থায়- ২০২৬ সালে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে, ফারাক্কা বাঁধ আরো বেশি সমস্যাজনক হয়ে উঠবে। বর্তমান গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তিটি পানির নিশ্চয়তা দেয়নি। ভারত ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে তিস্তা চুক্তি বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে বলে এখানে কয়েকটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে-

ক. নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি কত দ্রুত হবে?
খ. আবারও কি গ্যারান্টি ক্লজহীন একটা সস্তা লোক ভুলানো চুক্তি সাক্ষর হবে যা পানির প্রবাহ নিশ্চিত করবে না!
গ. নাকি নতজানু সরকারের দাসবৃত্তিক আচরণে ভারত তিস্তার মত গঙ্গা পানি চুক্তিও অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলিয়ে রাখবে!


আন্তর্জাতিক আইনকানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ভারত ৫৪টি আন্তর্জাতিক অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণ করে বহু নদী হত্যা করেছে, প্রবাহ ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং একতরফা পানি প্রত্যাহার করেছে। পদ্মা রিভার সিস্টেমের ৮টি বড় নদীর ৫টিতেই ভারত বাঁধ দিয়েছে।

বাংলাদেশের ভূমিকে শুষ্কে মৌসুমে নিষ্ফলা ঊষর করতে এবং বর্ষায় হঠাৎ বন্যায় ভাসিয়ে দিতে ভারতের ক্রমাগত অপচর্চার জবাব গোলাম সরকার দিতে পারছে না। অধিকার আদায়ে মাওলানা ভাসানীর যে লড়াই ছিল সেটা সরকার এবং আমজনতা সবাই ভুলে গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪
১১টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×